বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের বিভাগীয় সদরসহ ১৩টি স্থানে রমজান মাসজুড়ে টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলবে। ফলে বাজারে পণ্যমূল্য আরও সহনশীল হবে।

আজ মঙ্গলবার খুলনা নগরের শিববাড়ী মোড়ে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘রমজান মাসে অতিরিক্ত ৯ হাজার মেট্রিক টন পণ্য ট্রাকে বিক্রি করা হবে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে বাজার নিম্নগামী হবে, বাজার সহনশীল হবে। প্রান্তিক মানুষের জীবনে স্বস্তি আসবে। প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে ১২ লাখ পরিবারের মধ্যে ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হবে।’

টিসিবির উপকারভোগী পরিবারগুলোর জন্য সব স্মার্ট কার্ড সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘টিসিবি ৬৩ লাখ পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ করছে। স্মার্ট কার্ড রূপান্তরের কাজে খুলনা অঞ্চলের সাফল্যের হার সবচেয়ে বেশি। এ মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে বাকি কার্ডের অ্যকটিভেশন সম্পন্ন হবে, এর মাধ্যমে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়বে।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এমন দিনের স্বপ্ন দেখি, যেদিন টিসিবির কার্যক্রম আর চালাতে হবে না। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। সেটা হয়তো একটু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তারপরও আমরা সেটা অর্জন করতে চাই।’

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ, খুলনার পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কার্ডধারী যেকোনো ভোক্তা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি করে মসুর ডাল ও ছোলা, এক কেজি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ১৫৬ টাকা দামে বিক্রি করবে টিসিবি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

জলবায়ু সহনশীল মাছ চাষে নতুন সম্ভাবনা

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে মাটি ও পানিতে লবণাক্ততার বৃদ্ধি স্বাদু পানির মাছ চাষের জন্য বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

মাছ চাষে লাভবান হতে হলে ভালো মানের পোনা ও সঠিক পদ্ধতির প্রয়োজন। কিন্তু উপকূলের মাছচাষিরা নিম্নমানের পোনা ব্যবহার করায় কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাচ্ছিলেন না। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জে পুকুরে জলবায়ু সহনশীল মাছচাষের উদ্যোগ নেয় ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি। গতবছর জুলাই মাসে ব্র্যাকের এডাপটেশন ক্লিনিকের উদ্যোগে জলবায়ু সহনশীল মাছের পোনা হিসেবে দ্রুত বর্ধনশীল জি-৩ রুই,  তেলাপিয়া এবং অন্যান্য কার্পজাতীয় মাছের পোনা একটি প্রদর্শনী পুকুরে ছাড়া হয়, যা স্বল্প সময়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং জলবায়ু প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম। কলাপাড়া উপজেলায় নীলগঞ্জ, মহিপুর, চাকামইয়া, লতাচাপলী ইউনিয়নে প্রায় ৮৩টি পুকুরে এসব জলবায়ু সহনশীল মাছের পোনা ছাড়া হয়।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে পুকুরের পানির গুণমান নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়, যাতে মাছের জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন নিশ্চিত হয়। এতে সম্পূরক খাদ্যের ব্যবহার কমে আসায় খরচও কমে যায় এবং মাছের উৎপাদন বাড়ে। বিশেষ করে বড় আকারের পোনা ছাড়ার ফলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা লবণাক্ততার প্রভাব পড়ার আগেই বাজারজাত করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মাছচাষে কার্বণ নিঃসরণ মূলত সম্পূরক খাদ্য ব্যবহারের মাধ্যমে হয়। তবে জলবায়ু সহনশীল পদ্ধতিতে মাছচাষ করলে পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য— যেমন ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ও জুপ্ল্যাংকটনের ওপর নির্ভর করা যায়, যা পরিবেশবান্ধব এবং খরচ সাশ্রয়ী।

মাছ চাষি কবির ব্যাপারী বলেন, “আগে আমার পুকুরে পাঙাস মাছের চাষ করতাম। কিন্তু মাছের সম্পূরক খাবারের দাম অনেক বেশি থাকায় লাভ হতো না। এখন বড় আকারের পোনা ছাড়ার ফলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, সম্পূরক খাবার লাগে না, লাভ বেশি হচ্ছে।”

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক মো. লিয়াকত আলী বলেন “ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি জলবায়ু সহনশীল মাছ চাষে নতুন পদ্ধতির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষকদের এসব পদ্ধতির বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি অল্প সময় দ্রুত বর্ধনশীল মাছ চাষের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুরানো মাছ চাষ পদ্ধতিতে নতুনত্ব নিয়ে আসা হয়েছে যাতে কম কার্বণ নির্গমন হয় ও বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতেও ভূমিকা রাখতে পারেন স্থানীয় কৃষকরা।”

স্থানীয় পর্যায়ে সহজেই ভালো মানের পোনা নিশ্চিত করতে মাছচাষিরা জলবায়ু সহনশীল মাছের হ্যাচারি স্থাপনের উদ্যোগ চান।

ঢাকা/সুমি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬৩ লাখ পরিবারকে পণ্য দেয় টিসিবি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • জলবায়ু সহনশীল মাছ চাষে নতুন সম্ভাবনা