জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। দুদকের করা এ–সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

এর আগে আজ কামরুল ইসলামকে আদালতে হাজির করে দুদক। পরে দুদকের পক্ষ থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে কামরুল ইসলামকে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা হয়। অন্যদিকে এসব ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে জমা আছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর নামে মামলা করে দুদক। দুদক বলছে, ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ার পর কামরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

দুদক বলছে, কামরুলের ছেলে তানজীর ইসলামের নামে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৫ টাকা ও মেয়ে সেগুপ্তা ইসলামের নামে ১ কোটি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর দুই সন্তানের নামে আরও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকতে পারে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি কামরুলের নামে ৬ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। মো.

কামরুল ইসলামের নিজ ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ১৫টি হিসাবে মোট ২১ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকার লেনদেন হয়। তিনি এই টাকা সন্দেহজনকভাবে হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করেছেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।

গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা–১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাঁকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে।

২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে তাঁকে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড

তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বগুড়ার বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিন সরকারকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের স্পেশাল পিপি আবুল কালাম আজাদ।

সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা, অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা 

রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের নেতা ঢাকায় গ্রেপ্তার

এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন বগুড়ার সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। চার্জশীট দাখিল করেন ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।

দুদকের আইনজীবী (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‍“আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই আব্দুল মতিন সরকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মতিনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করে দুদক ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পায়। তিনি এই সম্পদের মধ্যে ১ কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে এই দুই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তথ্য গোপনের জন্য তাকে ৩ বছর এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূথ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।”

প্রসঙ্গত, মতিন সরকার বগুড়ার আলোচিত ধর্ষণ এবং মা মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া কাণ্ডের নায়ক তুফান সরকারের বড় ভাই। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে মামলা করেন। মতিনের ছত্রছায়াতেই তুফান বেপরোয়া জীবযাপন করতেন। বর্তমানে তুফান হত্যা মামলা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্রামীণ ব্যাংক–প্রবাসীদের আর্থিক সেবা প্ল্যাটফর্ম-প্রথম নারী ফরেস্টার-বৃহত্তম স্থলবন্দর কোনটি—জেনে নিন
  • সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক, তাঁর স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড
  • বগুড়ায় যুবলীগ নেতা মতিনের ১৩ বছরের কারাদণ্ড