সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন তৃতীয় ধাপের প্রার্থীরা। এদিকে, আলোচনার জন্য তাদের একটি প্রতিনিধিদল যাচ্ছে সচিবালয়ে। 

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে প্রতিনিধিদল সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

প্রতিনিধিদলে রয়েছে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক পিয়াস তালুকদার, নওরিন আক্তার, জান্নাতুল নাইম, মালা বোস, শামীমা আক্তার, রাশেদ শাহরিয়ার।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা প্রথমে শাহবাগ মোড় অবরোধের চেষ্টা করেন। পুলিশের বাধায় সেখানে যেতে না পেরে জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ‘জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছেন।”

আন্দোলনরত সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক নওরীন চাঁদনী রাইজিংবিডি বলেন, “আমাদের ওপর গতকাল যে হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দ্রা ও প্রতিবাদ জানাই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ, জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহারে শতাধিক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক গুরুতর আহত হন এবং সুপারিশপ্রাপ্ত অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকা ও ছোট বাচ্চারাও পুলিশের নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাবো না।” 

এর আগে গতকাল সোমবার একই দাবিতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেন তারা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বলপ্রয়োগ করে পুলিশ; লাঠিচার্জ করে তাদের সরাতে না পেরে একইসঙ্গে জলকামান ব্যবহার করে। একপর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয় তাদের ওপর।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের কর্মক্ষেত্রে যোগদান করার কথা, কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তারা তা পারেননি। যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হননি, এমন ৩১ জনের রিটে তাদের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। তারা বলছেন, এ কেমন প্রহসন? এ দায় আসলে কে নেবে? তারা একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এর আগে আন্দোলনকারীরা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম ও অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন যেন থামছেই না। ২০২৩ সালের ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল এবং ভাইভা সম্পন্ন হয় ১২ জুন।

বিজ্ঞপ্তির বর্ণনা অনুযায়ী, আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়। ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন, যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। এরইমধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে চারটি শুনানির পর চূড়ান্ত জাজমেন্টে ৬ তারিখ বাতিল ঘোষণা করা হয়।

প্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলেন,  ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৫ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিস এবং ৮ ডিসেম্বর স্কুল পদায়ন সম্পর্কিত নিয়োগ আদেশ জারি করে। সে অনুযায়ী, প্রার্থীরা নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জন অফিসে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদানপত্র হাতে পেয়েছেন। সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। সবাই এক প্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৪ স ল র অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কাউখালীতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু গ্রেপ্তার 

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চিড়াপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাইকুজ্জামান তালুকদার মিন্টুকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে পিরোজপুরের আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের সামনের একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাকে কাউখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়।

কাউখালী থানা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর উপজেলার শিয়ালকাঠি চিড়াপাড়ার বেকুটিয়া ব্রিজ সংলগ্ন নতুন বাজার এলাকায় বিএনপির একটি কর্মসূচির পোস্টার লাগানোর সময় আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

ডিবি পুলিশ ওই মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে লাইকুজ্জামান মিন্টুকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার  দেখায় এবং রাতেই তাকে কাউখালী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোলায়মান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বিএনপির পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় কাউখালী থানায় একটি মামলা হয়। উক্ত মামলার তদন্তের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে লাইকুজ্জামান মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বুমরাকে ছাড়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি রোনালদোবিহীন বিশ্বকাপের মতো’
  • হত্যা মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর কারাগারে
  • জুলাই অভ্যুত্থানের নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন বুধবার
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা: প্রবেশপত্র ডাউনলোডের সূচি প্রকাশ
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ১৫০ নম্বরে নয়, ১২০-এ, নম্বর বণ্টন কীভাবে
  • রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • সার্টিফিকেশন বোর্ড কী করছে
  • ভারতে আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে সংখ্যালঘুবিদ্বেষী বক্তব্য বেড়েছে ৭৪ শতাংশ
  • কাউখালীতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু গ্রেপ্তার