মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে প্রতিবেশীর লাঠির আঘাতে জামাই কনাই শব্দকর (৩০) নিহত হয়েছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ধীতেশ্বর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত কনাই শব্দকর মইদাইল গ্রামের বজি শব্দকরের ছেলে।

পুলিশ জানায়, কনাই শব্দকরের বাচ্চাদের সাথে প্রতিবেশীর বাচ্চাদের ঝগড়া হলে ওইদিন রাতে প্রতিবেশী সুশিল শব্দকর ও তার ছেলে সুমিত শব্দকর কনাইকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় কনাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, স্থানীয়রা ঘাতক দুজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মৌলভীবাজার হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জমিতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো

চলতি মৌসুমে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এর পরও দুশ্চিন্তায় বৃহত্তর সিলেটের শস্যভান্ডারখ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা। স্থানীয় টমেটো চাষিরা বলছেন, ফলন ভালো, বাজারে চাহিদাও আছে। এর পরও টমেটো তুলে আড়তে বিক্রি করে পরিবহন খরচও ওঠাতে পারছেন না তারা। ফলে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে  অনেক কৃষকের টমেটো।

জানা গেছে, উপজেলার প্রান্তিক কৃষক এবং স্থানীয়দের অনেক দিনের দাবি একটি হিমাগার স্থাপনের। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পর্যায় থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। একটি হিমাগার থাকলে এভাবে নষ্ট হতো না কৃষকের কষ্টের ফসল। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই এই টমেটো বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। এখন হিমাগারে সংরক্ষণ করা গেলে তখন লাভের মুখ দেখতেন চাষিরা।

উপজেলার ভানুগাছ বাজারের আড়তদার শরিফ উদ্দিন জানান, গত এক মাস ধরে আড়তে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা কেজিতে। এর আগের সপ্তাহে বিক্রি ছিল ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি। বাজারে টমেটোর দাম এতটাই কম যে, কৃষক টমেটো তুলতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। সংরক্ষণের সুযোগ থাকলে এখন কমে বিক্রি করে পরে মুনাফাও করতে পারতেন কৃষক। এতে বাজারে টমেটোর দামও সহনীয় থাকত। কোনো পক্ষের কষ্ট হতো না।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার আদমপুর এবং মাধবপুরে সবচেয়ে বেশি টমেটো চাষ হয়। যারা আগাম টমেটো চাষ করেছিলেন তারা লাভবান হলেও বাকিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মাধবপুর ইউনিয়নের টমেটো চাষি সুলেমান, বকুল, শামীম ও বুরহান জানান, আগে বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা টমেটো নিতে এলেও এখন কোনো পাইকার আসছে না। আগের মতো টমেটোর চাহিদা এখন নেই। টমেটো তোলা বা ভাড়া দিয়ে বাজারে নিয়ে ৪-৫ টাকা কেজি বিক্রি করে কোনো লাভ হয় না। তাই ফসলই তোলা বন্ধ।

আমদপুরের কৃষক মোস্তাফা কামাল জানান, বিক্রির চেয়ে খরচ বেশি। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে মানুষ এখনও কম দামে খেতে পারত, পরেও বাজারে টমেটো পাওয়া যেত। দাম অসহনীয় হতো না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, টমেটো একটি পচনশীল কৃষিপণ্য। উৎপাদ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। যারা আগাম টমেটো চাষ করেছেন, তারা ভালো দাম পেয়েছেন। এ ছাড়া এখন যারা টমেটো লাগাবেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তারাও ভালো দাম পাবেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় হিমাগার স্থাপনের বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, এ উপজেলার কৃষকের কষ্টের ফসল সংরক্ষণে সম্প্রতি সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করা হয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের নজরে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জমিতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো