পরী মানে ডানাওয়ালা পরী,পরীমণি না: শেখ সাদী
Published: 11th, February 2025 GMT
পরীমণির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কণ্ঠশিল্পী শেখ সাদী এমন গুঞ্জন বেশ কদিন ধরেই চর্চায। এই গায়ককে নিয়ে পরীমনি তার ফেইসবুকের ওয়ালে একাধিক পোস্ট করেছেন। ফলে গুঞ্জন ধীরে ধীরে সত্যি হিসেবে ধরে নিচ্ছেন অনুরাগীরা।
শেখ সাদীও পরীকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন একের পর এক। যেখানে ‘পরী’র প্রতি মগ্ন হওয়ার ভাব প্রকাশ করেন সাদী। সঙ্গে সেই পোস্টে পরীর প্রতিক্রিয়াও ইঙ্গিত দেয় আরও গভীর কিছুর। দরজার আড়াল থেকে উঁকি দেয়া একটি মেয়ে পুতুলের ইমোজি জুড়ে দিয়ে মন্তব্যের ঘরে লেখেন, ‘ওহ!’ ব্যস, দুজনকে নিয়ে গুঞ্জন ডানা মেলেছে বাতাসে।
এ ব্যাপারে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদমাধ্যমকে শেখ সাদী বলেন, তেমন সিরিয়াস কিছু ভেবে দেইনি।
এরপরও সবাই যে এত সিরিয়াসলি নেবে, তা ভাবতেও পারিনি। তবে এখন থেকে ফেসবুকে কিছু লেখার আগে অবশ্যই ভাবব। আমরা সহকর্মী, একসঙ্গে কাজের পরিকল্পনা চলছে। এর থেকে আর বেশি কিছু নয়।
ক্যাপশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চ্যাটজিপিটির কাছে ক্যাপশন চেয়েছিলাম। সেখান থেকেই এ ধরনের একটি বাক্য পেয়েছি। তারপরই জানতে চাওয়া হয় গায়কের কাছে, চ্যাটজিপিটি কি আপনার মনের কথা বুঝে গেল? হাসতে হাসতে শেখ সাদী বলেন, বিশ্বাস করুন, চ্যাটজিপিটি বেশ স্মার্ট। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। তবে এটা ঠিক, প্রতিটি ছেলে চাইবে তার জীবনসঙ্গী পরীর মতো হউক।
এদিকে শেখ সাদীর এ পোস্ট নিয়ে দিনভর যখন নানা আলোচনা হচ্ছে, তখন ‘শেখ সাদী’র নাম উল্লেখ না করেই বিষয়টি স্পষ্ট করলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এদিন রাত ৯টার দিকে ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘ওরে পরী মানে ডানাওয়ালা পরী, পরীমনি না।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের পক্ষে ৮৬% মানুষ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হওয়া উচিত বলে মনে করেন দেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ। আনুপাতিক পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষে মানুষের সাড়া একেবারেই কম।
বেশির ভাগ মানুষ সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে। তবে সেখানে সরাসরি ভোট চান তাঁরা।
সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত জাতীয় জনমত জরিপ-২০২৪–এ মানুষের এ মতামত উঠে এসেছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে এ জরিপ করে। কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে জরিপটি প্রকাশ করা হয়েছে।
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, জরিপে গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
দেশের ৬৪ জেলা থেকে সরাসরি সাক্ষাৎকার পদ্ধতিতে ৪৫ হাজার ৯২৫টি খানার (পরিবার) ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী মানুষের কাছ থেকে জনসংখ্যা অনুপাতে মতামত নেওয়া হয়েছে।
কমিশন আরও বলেছে, তারা বিভিন্নভাবে অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ করেছে। তবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মতামতের প্রতিফলনের জন্য তারা জরিপ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
জরিপে প্রশ্নের একটি বিষয় ছিল নির্বাচনকালীন সরকার। এতে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ। আরও ৬ শতাংশের বেশি এ বিষয়ে না জানার কথা জানিয়েছেন। উত্তর দিতে রাজি হননি প্রায় ২ শতাংশ মানুষ। বাকি প্রায় ৮৬ শতাংশ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হওয়া উচিত বলে মত দেন।
১৯৯১ সালে গণতন্ত্রে ফেরার পর থেকে বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা–সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এরপর সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে করেছে। নির্বাচনগুলো ছিল একতরফা, পাতানো ও প্রহসনের।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
হাইকোর্ট গত ১৮ ডিসেম্বর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের দুটি ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাতিল ঘোষণা করেন।
রাজনৈতিক মহলে এখন ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুবারজরিপে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাতে রাষ্ট্রপতির হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৩৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৫ শতাংশ মনে করেন, ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকা উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুবারের পক্ষে প্রায় ৬৪ শতাংশ মানুষ। তবে ১০ শতাংশ বলেছেন, পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ হওয়ার পক্ষে নন তাঁরা। আর ১৫ শতাংশ মনে করেন, মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রধান পদে থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন ৪৯ শতাংশ মানুষ। ৩৭ শতাংশের মত হলো, দুই পদে এক ব্যক্তি থাকতে পারেন।
জাতীয় সংসদের মেয়াদ চার বছর করার পক্ষে নন সাধারণ মানুষ। পাঁচ বছর মেয়াদের পক্ষে ৭৮ শতাংশ, চার বছরের পক্ষে ১৬ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ।
সংসদ গঠনের ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে, সেই প্রশ্নে ৭৮ শতাংশ মানুষ প্রার্থীর প্রাপ্ত সর্বোচ্চ ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। মানে হলো, এখন প্রচলিত ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছেন তাঁরা। রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে সংসদ গঠনের পক্ষে ৯ শতাংশের কম মানুষ।
সংসদকে দুই ভাগে (উচ্চ ও নিম্নকক্ষ) বিভক্ত করার পক্ষে প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ। আর ৩৯ শতাংশ এর বিপক্ষে। ২৩ শতাংশের বেশি মানুষ এর উত্তর দিতে নারাজ।
বর্তমান পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যরা সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। ৮৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এ ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকা উচিত নয়।
সংবিধান সংশোধনসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৮২ শতাংশ মানুষ।
নারী আসনের পক্ষে ৭৫% মানুষজাতীয় সংসদে এখন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ৫০। তবে সেখানে সরাসরি ভোট হয় না।
সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৫ শতাংশ মানুষ। বিপক্ষে মত দিয়েছেন ১৯ শতাংশের কিছু কম উত্তরদাতা। নারী প্রার্থীদের মধ্যে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে ৮৩ শতাংশ মানুষ।
সংবিধানে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সুরক্ষিত করার সুস্পষ্ট বিধানের পক্ষে ৯১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ।
নাগরিকদের মতপ্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতায় কোনো ধরনের বিধিনিষেধ সংবিধানে থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৩ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ সাংবিধানিক বিধিনিষেধের পক্ষে।
সভা-সমাবেশ ও মিছিলে যোগ দেওয়ার স্বাধীনতা সীমিত করার ক্ষমতা সংবিধানে থাকার পক্ষে ৬১ শতাংশের বেশি মানুষ। ২৯ শতাংশ মনে করেন, এ ক্ষমতা সংবিধানে থাকা উচিত নয়।