‘দ্য মাউন্টেন স্টোরি’ নামটি মনে গেঁথে যাওয়ার মতো। কঙ্গনা রানাউতের সমালোচকরাও স্বীকার করবেন, কাহিনি যেমনই হোক তাঁর সিনেমার নামকরণে ভিন্নতা থাকে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, দ্য মাউন্টেন স্টোরি কোনো সিনেমা নয়, কঙ্গনার একটি ক্যাফের নাম। তাই এই অভিনেত্রীর সর্বশেষ সিনেমা ‘ইমার্জেন্সি’ কিংবা এরও আগে মুক্তি পাওয়া ‘ধাকড়’, ‘তেজস’, ‘পাঙ্গা’, ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’ দেখে যারা হতাশ হয়েছেন, তাদের আঁতকে ওঠার কিছু নেই। কয়েক বছর ধরে নানা বিতর্কের জন্ম দেওয়া কঙ্গনা এবার হাঁটা শুরু করেছেন ভিন্নপথে। 

জন্মস্থান হিমাচল প্রদেশের বিখ্যাত খাবার ভোজনরসিকদের পাতে তুলে দিতে খুলেছেন দ্য মাউন্টেন স্টোরি নামের ক্যাফে। এর সুবাদে অভিনেত্রী, মডেল, প্রযোজক, পরিচালকের পাশাপাশি ক্যাফে ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর তালিকায় উঠে এসেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত এই অভিনেত্রীর নাম।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, কঙ্গনার শৈশবজুড়ে আছে শুধুই মায়ের হাতের রান্না করা খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ। আর সেই স্মৃতিতে ভর করেই ক্যাফে খুলতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এই অভিনেত্রী। এ নিয়ে একটি পোস্টে কঙ্গনা লিখেছেন ‘শৈশবের একটি স্বপ্ন জীবন্ত হলো হিমালয়ের কোলে আমার ছোট্ট ক্যাফের মধ্য দিয়ে। পর্বতের গল্প নামের এই ক্যাফেটি এক প্রেমের গল্পও রচনা করছে।’

কঙ্গনার এ কথা স্পষ্ট যে দ্য মাউন্টেন স্টোরির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে শৈশবের প্রেম, যে প্রেমে শিকড়কে চিনিয়ে দিতে চান। সে কারণেই অভিনেত্রী ক্যাফেতে রাখছেন ঐতিহ্যবাহী হিমাচলি থালি ও অন্যান্য স্থানীয় সুস্বাদু খাবার; যা নান্দনিকভাবে খাদ্যপ্রেমীদের কাছে পরিবেশন করা হবে।   

এদিকে ক্যাফের খবরটি অনুরাগীদের অনেকের মুখে হাসি ফোটালেও সিনেমা দর্শকের হতাশা এখনও কাটেনি। কঙ্গনার সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ইমার্জেন্সি’ বলিউডের বক্স অফিসে মুখে থুবড়ে পড়েছে। শুধু ব্যবসায়িক ব্যর্থতা নয়, সিনেমার কাহিনিতে ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক ইতিহাস যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিয়ে চলছে বিস্তর সমালোচনা।

প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন সিনেমায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্র উপস্থাপন নিয়ে। মুজিবুর রহমানের চরিত্রটিকে দিয়ে যে সংলাপ তুলে ধরা হয়েছে, তা মিথ্যা এবং পুরোপুরি মনগড়া বলেও সমালোচকদের দাবি। এমনকি ১৫ আগস্ট মুজিব হত্যাকাণ্ডের যে দৃশ্য ‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমায় দেখানো হয়েছে, সেটাও সঠিক নয় বলে দর্শক ও ইতিহাসবিদরা দাবি করেছেন। এত কিছুর পরও কঙ্গনা এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। সিনেমার তুলে ধরা ইতিহাস নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠে আসছে, তার জবাব দেওয়ার বদলে মুখে কুলুপ এঁটে আছেন।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মিটারে না চললে অটোরিকশাচালকের জরিমানা হতে পারে ৫০ হাজার টাকা

সিএনজি বা পেট্রলচালিত অটোরিকশার চালক মিটারের বেশি ভাড়া আদায় করলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সড়ক পরিবহন আইনে ভাড়াসংক্রান্ত অপরাধে চালকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের সই করা এক চিঠি থেকে বিষয়টি জানা যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠিটি দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাস বা পেট্রলচালিত ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা রুজু করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

আরও বলা হয়েছে, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮–এর ধারা ৩৫(৩) অনুযায়ী কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা চালক রুট পারমিট এলাকার মধ্যে যেকোনো গন্তব্যে যেতে বাধ্য থাকবেন এবং মিটারে প্রদর্শিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। এর ব্যত্যয় হলে আইনের ধারা ৮১ অনুযায়ী অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কর্তন করার বিধান রয়েছে।

বর্তমানে অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা নির্ধারিত আছে ৯০০ টাকা। তবে চালকেরা বলছেন, মালিকেরা দিনে দুই বেলায় চালকের কাছে অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলকারী প্রায় ২৮ হাজার অটোরিকশার জন্য পৃথক নীতিমালা রয়েছে। এসব অটোরিকশাকে কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ বা ভাড়ায় চালিত যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নীতিমালা অনুসারে, সিএনজি ও পেট্রলচালিত অটোরিকশার ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা নির্ধারিত রয়েছে।

বর্তমানে অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা নির্ধারিত আছে ৯০০ টাকা। তবে চালকেরা বলছেন, মালিকেরা দিনে দুই বেলায় চালকের কাছে অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন।

অটোরিকশার বর্তমান সর্বনিম্ন (প্রথম দুই কিলোমিটার) ভাড়া ৪০ টাকা; অর্থাৎ একজন যাত্রী চাইলে ৪০ টাকায় অটোরিকশা ভাড়া করার সুযোগ পাবেন। যাত্রীদের অভিযোগ, ১৫০ টাকার নিচে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত করা যায় না। দুই কিলোমিটারের পরের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১২ টাকা নির্ধারিত থাকলেও তা কেউ মানেন না।

২০০৩ সালের দিকে রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে বেবিট্যাক্সি তুলে দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালু করে তৎকালীন চার–দলীয় জোট সরকার। মিটারে নির্ধারিত ভাড়া ও যাত্রীদের চাহিদামতো গন্তব্যে চলাচল করতে বাধ্য থাকবে, এই ছিল মূল শর্ত। কিন্তু নগরবাসী বলছেন, কখনোই শর্তগুলো মানা হয়নি। ভাড়া নির্ধারিত হয় চালকের ইচ্ছেমতো। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে চাইলে অনেক ক্ষেত্রেই চালকেরা অনীহা দেখান।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার নীতিমালা অনুসারে, মালিকেরা অটোরিকশা কিনে চালকদের চালাতে দেবেন। বিনিময়ে সরকার নির্ধারিত হারে দৈনিক জমা পাবেন তাঁরা। আর চালকেরা মিটারে নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ