জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় এবার গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন। আদালত তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। এ দিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।


মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুল ইসলামের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯৫ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করে ভোগ দখলে রাখা এবং ১৫টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২১ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকা লেনদেন হয়েছে। 

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ঢাকা-২ আসনের এই সাবেক সংসদ সদস্য।

গত বছর ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা–১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

কামরুল ইসলাম ১৯৫০ সালের জুন ঢাকার মোহাম্মদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বারে যোগদানের মাধ্যমে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে।  ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ও ১১ দফা ভিত্তিক গণআন্দোলনে অংশ নেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।  ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কামরুল ইসলাম ঢাকা-২ আসন (সাভার-কেরানীগঞ্জ-কামরঙ্গীরচর) থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে বিজয়ী হন। এ সময়ে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে একই এলাকা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। বিদেশ থেকে পচা গম আমদানি করে ওই সময় তিনি বেশ সমালোচিত হন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড

তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বগুড়ার বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিন সরকারকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের স্পেশাল পিপি আবুল কালাম আজাদ।

সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা, অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা 

রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের নেতা ঢাকায় গ্রেপ্তার

এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলা করেন বগুড়ার সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। চার্জশীট দাখিল করেন ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।

দুদকের আইনজীবী (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‍“আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই আব্দুল মতিন সরকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মতিনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করে দুদক ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পায়। তিনি এই সম্পদের মধ্যে ১ কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আব্দুল ‍মতিন সরকারের বিরুদ্ধে এই দুই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তথ্য গোপনের জন্য তাকে ৩ বছর এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূথ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।”

প্রসঙ্গত, মতিন সরকার বগুড়ার আলোচিত ধর্ষণ এবং মা মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া কাণ্ডের নায়ক তুফান সরকারের বড় ভাই। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে মামলা করেন। মতিনের ছত্রছায়াতেই তুফান বেপরোয়া জীবযাপন করতেন। বর্তমানে তুফান হত্যা মামলা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক, তাঁর স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • যুবলীগ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড
  • বগুড়ায় যুবলীগ নেতা মতিনের ১৩ বছরের কারাদণ্ড