এবার দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার কামরুল ইসলাম
Published: 11th, February 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় এবার গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন। আদালত তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। এ দিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুল ইসলামের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯৫ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করে ভোগ দখলে রাখা এবং ১৫টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২১ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকা লেনদেন হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ঢাকা-২ আসনের এই সাবেক সংসদ সদস্য।
গত বছর ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা–১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
কামরুল ইসলাম ১৯৫০ সালের জুন ঢাকার মোহাম্মদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বারে যোগদানের মাধ্যমে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে। ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ও ১১ দফা ভিত্তিক গণআন্দোলনে অংশ নেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কামরুল ইসলাম ঢাকা-২ আসন (সাভার-কেরানীগঞ্জ-কামরঙ্গীরচর) থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে বিজয়ী হন। এ সময়ে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে একই এলাকা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। বিদেশ থেকে পচা গম আমদানি করে ওই সময় তিনি বেশ সমালোচিত হন।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার সাবেক সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে খুলনা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পঞ্চানন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬ লাখ ৭১ হাজার ৪১৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চানন বিশ্বাস ১৯৯৬ সালে খুলনা-১ আসনের (দাকোপ ও বটিয়াঘাটা) উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে পঞ্চানন বিশ্বাস আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। ওইবার ৭৮ হাজার ৫৫২ ভোট পেয়ে বিএনপি জোটের প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ওই নির্বাচনে খুলনা জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি একাই জিতেছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি।
২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পঞ্চানন বিশ্বাস ৬৬ হাজার ৯০৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে পঞ্চানন বিশ্বাস বিএনপির আমীর এজাজ খানকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ মনোনীত হন। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেয়নি।