পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জেলবন্দীদের মুক্তি ও চাকরিচ্যুত সবাইকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিডিআর সদস্যরা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মসূচির প্রথম দিনে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন বিডিআর সদস্যরা।

এসময় তাদের ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর বিডিআর’, ‘দেশপ্রেমিক বিডিআর, সীমান্তে যাবে আরেকবার’, ‘বিডিআরের ঠিকানা, পিলখানা পিলখানা’সহ একাধিক স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিস্তারিত আসছে.

..

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ড আর

এছাড়াও পড়ুন:

নটর ডেম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

নটর ডেম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এনডিইউবি) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হল। শনিবার রাজধানীর আরামবাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই বিশেষ দিন উপলক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে শুরু করেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। সমাবর্তনের বিশেষ পোশাকে সদ্য স্নাতকদের পদচারণে মুখর হয় এনডিইউবি প্রাঙ্গণ।

সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের পরেই সামনে বড় মাঠে বসানো হয়েছিল ছবি তোলার কয়েকটি বুথ। সেখানে কখনো বন্ধুদের সঙ্গে, কখনো মা–বাবার সঙ্গে ছবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আনন্দঘন পরিবেশে নিজেদের মধ্যে পরিচয় পর্ব সেরে নেন।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের স্নাতক রাফাত ভূঁইয়া বলেন, ‘‘আমাদের বেশ কয়েকটি সেমিস্টার কোভিডের সময় হয়েছে। ওই সময় ক্যাম্পাস ও বন্ধুদের মিস করেছি। এ ছাড়া সার্বিক অভিজ্ঞতা দারুণ। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় তুলনামূলকভাবে নতুন। তবে ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়ছে। এটাও ভালো দিক।’’

শোভাযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে পবিত্র কোরআন, বাইবেল, গীতা ও ত্রিপিটক থেকে ধর্মীয় বাণী পাঠ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফাদার প্যাট্রিক ডি. গ্যাফনি অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন।

এবারের সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘তোমার আলোকে বিকশিত হতে দাও’। জ্ঞানের প্রতীকী উপস্থাপন হিসেবে অনুষ্ঠানের শুরুতে মোমবাতি জ্বালানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ১৯৭১ সালের শহীদ ও ২০২৪–এর বিপ্লবে আত্মত্যাগকারীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘প্রিয় গ্র্যাজুয়েট, এখন আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় তৈরি হয়েছে। তোমরাই এই বিপ্লবের অগ্রদূত। তাই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়া পর্যন্ত তোমাদেরই এটা রক্ষা করতে হবে।’’

ফাওজুল কবির খান আরো বলেন,  ‘‘মনে রাখবে, আমরা শুধু আমাদের নিজের, পরিবারের ও বন্ধুদের কেন্দ্র করেই চিন্তাভাবনা করি। তোমাদের আজকের অর্জনের পেছনে আরও অনেকের অবদান আছে। তাদের জন্যও কিছু করবে।’’

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব নটর ডেমের কিওঘ-হেসবার্গ অধ্যাপক আর স্কট অ্যাপলবি। তিনি বলেন,  ‘‘এনডিইউবির যাত্রা অল্প দিনের হলেও চমকপ্রদ। মাত্র ১১ বছরে এটি একাডেমিক উৎকর্ষের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। লালিত হচ্ছে সত্য, ন্যায় ও শান্তির মূল্যবোধ।’’

অ্যাপলবি আরো বলেন, ‘‘আপনারা আজ যা অর্জন করেছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকবেন। আপনাদের অনেকে ভালোবেসেছে বলেই আজ আপনি এখানে। এই ভালোবাসার উপহার নিয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবহার করে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের জন্য ন্যায়বিচার, সহমর্মিতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করার কাজ করতে হবে। গত আন্দোলনে তরুণদের প্রতিবাদী ও সাহসী সত্তা পুরো বিশ্বের প্রশংসা পেয়েছে। সেটা নষ্ট করবেন না।’’

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দ্যেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফাদার প্যাট্রিক ডি গ্যাফনি বলেন, ‘‘অনেক গুণের মধ্যে আমি আপনাদের বিশ্বাসযোগ্যতা (ক্রেডিবিলিটি) অর্জনে জোর দিতে চাই। এর দ্বারা আমি সততা, বিশ্বাস ও প্রত্যয়ের মতো গুণকে বোঝাচ্ছি। বিশ্বাসযোগ্যতা মানে বোঝায় নিজেকে নিয়ে ভাবার সক্ষমতা। আপনি যেন ভালো–মন্দের পার্থক্য করতে পারেন। এটি আপনার সুনাম ও সম্মান প্রতিষ্ঠা করতেও সাহায্য করে।’’

সমাবর্তনে ১ হাজার ৩৬১ জনকে সনদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জনকারী গ্র্যাজুয়েটদের মধ্য থেকে দুজনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল এবং সাতজনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়। পাশাপাশি চারজনকে কুইনলিভান সিলভার মেডেল, তিনজনকে আর্চবিশপ টি এ গাঙ্গুলি সিলভার মেডেল, সাতজনকে ফাদার বেনজামিন কস্তা ব্রোঞ্জ মেডেল এবং দুজনকে ফাদার পিশোতো ব্রোঞ্জ মেডেল দেওয়া হয়। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ক্যাটাগরিতে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক পরিমল চন্দ্র দত্তকে দেওয়া হয় ফাদার বাসিল অ্যান্থনি মেরি মরো গোল্ড মেডেল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, আর্চবিশপ বিজয় এন ডি' ক্রুজ, ওএমআই ও এনডিইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. ফাদার জর্জ কমল রোজারিও, সিএসসি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফাদার অসীম থিওটোনিয়াস গনসালভেস।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বেলা তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড শিরোনামহীনের পরিবেশনা হয়।

ঢাকা/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ