৬ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের অবস্থান
Published: 11th, February 2025 GMT
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা চাকরি ফিরে পাওয়াসহ ৬ দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।
এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা অংশ নিয়েছেন। বিডিআর কল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
দুপুর ১২টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলছিল।
আরও পড়ুনপিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ৯ দাবিতে কী আছে২৯ আগস্ট ২০২৪শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তবে তাঁরা সড়কে নামেননি।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনদের ছয় দাবি হলো—শেখ হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় বাতিল করে ‘ঢালাওভাবে’ আটককৃত বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ ও কার্যপরিধি ২-এর (ঙ) নম্বর ধারা বাদ দিতে হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ও ষড়যন্ত্রের শিকার (কারাবন্দী কিন্তু বাইরে আছেন) দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্যদের কমিশনে যুক্ত করতে হবে; পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে শহীদ হওয়া ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুনচাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দাবি১৯ জানুয়ারি ২০২৫দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে—কারাগারে মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে; স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সব বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; বিজিবি আইন ২০১০ বাতিল করে পূর্বের বিডিআর আইন পুনর্বহাল করতে হবে। ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নামকে পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে; পিলখানার ভেতরে ও বাইরে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস চালু করতে হবে।
আরও পড়ুনচাকরিতে পুনর্বহাল ও কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দাবি১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনপাঁচ মাসে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকারসহ নানা দাবিতে ১০১ আন্দোলন ০৬ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার মতো এখনও নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে: আব্দুস সালাম
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেছেন, শেখ হাসিনার মতো দেশে এখনও নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। নির্বাচন পেছানো মানে ফ্যসিস্টকে আবার ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নির্বাচন না দিলে গণতন্ত্র ফিরবে না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বগুড়া শহরের মফিজ পাগলার মোড়ে স্থানীয় একটি মোটেলে রাজশাহী বিভাগের সব জেলা-মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধারে বিএনপি ১৬ বছর রাজপথে ছিল। নির্বাচন নিয়ে কোনো তালবাহানা করলে বিএনপি তা মানবে না। তাই, নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি রাজনৈতিক দলসহ দেশের জনগণ চায় অতিদ্রুত নির্বাচন। কিন্তু কেউ কেউ আবার চান নির্বাচন যেন দেরিতে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কালক্ষেপণ করলে দেশে আবারও ফ্যাসিস্টরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, এই দেশ জনগণের। তাই জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিএনপি বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করছে। তার মানে এই না জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভোট না দিয়ে ক্ষমতার গদি আঁকড়ে ধরবেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি সেখানে বসে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। ফ্যাসিস্টদের কোনো ষড়যন্ত্র এই দেশে বাস্তবায়ন হতে দিবে না বিএনপি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্যই বিএনপি জন্মলাভ করেছে। যেখানে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে বিএনপি সফল হয়েছে। যেখানে শেখ মুজিব ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন। যেখানে শেখ হাসিনা ব্যর্থ হয়েছেন সেখানে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে লড়াই করে সফল হয়েছেন। জনগণই তাকে রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন বার বার।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, পতিত শেখ হাসিনাকে বলা হয়েছিল, বিনা ভোটে না গিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন। কিন্তু তিনি ক্ষমতার দম্ভে নির্বাচনের পথে যাননি। আজকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজয় হলে পেছনের দরজা দিয়ে তাকে ভারতে পালাতে হতো না। ভারতে আশ্রয় নিতে হতো না। তাই ক্ষমতা দেখানোর কিছু নেই। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতা পেয়ে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার যা খুশি তা শুরু করেছিল। তাই ক্ষমতার দম্ভ কমাতে হবে। জনগণ কী চায় সেটা জানতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী দিনে ক্ষমতায় যেতে হবে। এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যাতে জনগণ বিএনপিকে খারাপভাবে, দোষারোপ করেন।
বিএনপি রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত খালেকের সভাপতিত্বে ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, কৃষক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি জাহির রায়হান আহমেদ, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল বাসার প্রমুখ।