আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০২ সালে ‘‘আইসিসি নক আউট ট্রফির’’ নামকরণ করা হয় ‘‘আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’’ নামে। সেই থেকে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নামেই আয়োজিত হচ্ছে মিনি বিশ্বখ্যাত এই আসর।

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির তৃতীয় আসর বসে শ্রীলঙ্কায়। ২০০২ সালের ওই আসরটি ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতে ট্যাক্স থেকে ছাড় না দেওয়ায় সেটি শ্রীলঙ্কাতে অনুষ্ঠিত হয়। ওই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহনকারী দল ছিল ১২টি। দুটি সেমিফাইনাল এবং একটি ফাইনাল সহ মোট ১৫ ম্যাচ খেলা হয়েছিল।

সবগুলো ম্যাচ কলম্বোর দুটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়। একটি হচ্ছে প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম এবং অপরটি সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ড।

আরো পড়ুন:

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির পরিবর্তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের ম্যাচগুলোতে আম্পায়ার যারা

১০ টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে ২০০২ আসরে যুক্ত হয়েছিল কেনিয়া এবং নেদারল্যান্ডস। দলগুলো চারটি গ্রুপের আওতাভুক্ত ছিল। প্রতিটি গ্রুপে ছিল ৩টি করে দল। গ্রুপের প্রতিটি দল পরস্পরের সঙ্গে একবার করে মুখোমুখি হয়েছিল। আর চার গ্রুপের সেরা দল অংশ নেয় সেমিফাইনালে।

প্রথম সেমিফাইনালে শক্তিশালী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল ভারত। ফাইনাল ম্যাচটি ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে দুইবার অনুষ্ঠিত হলেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। ২৯ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভার ব্যাটিংয়ের পর ভারত মাত্র ২ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পায়। বৃষ্টির জন্য সেদিন খেলা বিঘ্নিত হয়।

পরদিন শ্রীলঙ্কা পুনরায় ৫০ ওভার ব্যাটিং করলেও ভারত ৮ ওভার ব্যাটিং করতে সক্ষম হয়।আবারো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। অবশেষে আয়োজক কমিটি উভয় দলকে যৌথভাবে বিজয়ী ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। দল দু’টি ১১০ ওভার খেললেও কোন ফলাফল আনতে ব্যর্থ হয়। ওই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান বীরেন্দ্র শেবাগ (২৭১)। আর ১০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন লঙ্কান বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরন।

২০০২ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টোটাল প্রাইজমানি ছিল ১.

১৫ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য অংশগ্রহনকারী ১২ দলের প্রত্যেকেই ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার করে পায়। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ১ লাখ ২৫ এবং ফাইনালে জয়ী দল ৩ লাখ ডলার করে পেয়েছিল।

এক নজরে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০০২

তারিখ : ১২সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর-২০০২

আয়োজক : শ্রীলঙ্কা

ফরম্যাট : ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল

টুর্নামেন্ট : রাউন্ড-রবিন

অংশগ্রহণকারী দেশ : ১২টি

মোট ম্যাচ : ১৫টি

চ্যাম্পিয়ন : যৌথভাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা

সবচেয়ে বেশি রান : ভারতের বীরেন্দ্র শেবাগ (২৭১)

সবচেয়ে বেশি উইকেট : শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন (১০ উইকেট)।

ঢাকা/ইয়াসিন

ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম ফ ইন ল উইক ট আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব আদায়ে পদক্ষেপ নিন

স্টেশন বন্ধ। কিন্তু ট্রেন আসে, ট্রেন যায়। যাত্রীরাও ওঠানামা করেন। তবে টিকিট ছাড়া। কারণ, স্টেশন বন্ধ থাকায় কোনো টিকিট বিক্রি হয় না। কুমিল্লার লাকসাম থেকে রেলপথে নোয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটারের দূরত্বে এ রকম ছয়টি স্টেশন আছে। প্রায় দুই দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতগুলো স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠানামা করেন। ফলে প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ১২টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে লাকসামের দৌলতগঞ্জ, মনোহরগঞ্জের খিলা ও বিপুলাসার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বজরা, নোয়াখালী সদরের মাইজদী ও হরিনারায়ণপুর স্টেশনের কার্যক্রম ২০০৩ সালের পর থেকে পর্যায়ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে লাকসাম পৌর শহরের দৌলতগঞ্জ স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আগে এই রেলপথে প্রতিদিন আন্তনগর, এক্সপ্রেস, লোকাল, ডেমুসহ অন্তত ১২টি ট্রেন চলাচল করত। এ রেলপথে এখন আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন চলাচল করে। আর তিনটি ভিন্ন নামে আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে, যেটি স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে লোকাল ট্রেন হিসেবে পরিচিত।

পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, জনবলসংকটসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মানুষের কথা চিন্তা করে এখনো ট্রেনসেবা চালু রাখা হয়েছে। এসব স্টেশনে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠার পাশাপাশি বুকিং ছাড়াই মালামালও পারাপার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় যে মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনসেবাটি তারা বন্ধ করেনি। তবে স্টেশনগুলো আবার চালু করাও সময়ের দাবি। কারণ, স্থানীয় লোকজনই বলছেন স্টেশনগুলো দিয়ে বিপুল মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এক ব্যক্তি বলছেন, ‘খিলা ও বিপুলসার স্টেশন আমাদের গ্রামের দুই দিকে কাছাকাছি। একসময় এই স্টেশনগুলো জমজমাট ছিল। দিনরাত ট্রেনের হুইসেল বাজত। কিন্তু এখন জৌলুশ নেই। স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রাতে সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ অসামাজিক কার্যক্রমও চলে। আমরা চাই, রেলের সোনালি দিনগুলো ফিরে আসুক।’

দৌলতগঞ্জ স্টেশনটি দেড় দশক আগেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্টেশনটি ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে আসা মালামাল ট্রেনে আনা-নেওয়ার জন্য এটিকে ব্যবহার করা হতো। এখন টিকিট বেচা ও মালামাল পরিবহনে বুকিং কার্যক্রম বন্ধ। কিছু জায়গা এখন দখল হয়ে কয়েক শ অস্থায়ী দোকান বসে গেছে, যার মধ্যে গড়ে উঠেছে লাকসামের বৃহৎ কাঁচাবাজার।

আমরা আশা করব, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে স্টেশনগুলো আবারও চালু করা হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারছি। এখন কবে নাগাদ পরিবর্তন দেখতে পাব আমরা, সেটিরই অপেক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ