টানা চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজার লড়াইটা ফুটবলপ্রেমীদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। দু’দলের লড়াইকে অনেকেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মডার্ন ক্ল্যাসিকের মর্যাদাও দিচ্ছে। অনেকে আবার সময়ের সেরা দুই স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্লিং হালান্ডের লড়াই হিসেবেও দেখছে। ম্যানচেস্টারের ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আজ প্লে-অফ রাউন্ডের প্রথম লেগে মুখোমুখি হবে দু’দল।

ম্যানসিটির সময়টা এবার ভালো যাচ্ছে না। লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা বলতে গেলে শেষই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফে এসেছে ২২তম হয়ে। এর মধ্যে গত কিছু দিন ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যতম সেনানী আর্লিং হালান্ড। সিটির এ নওরোজিয়ান স্ট্রাইকার সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ আট ম্যাচে ৭ গোল করেছেন। রিয়ালের ভঙ্গুর রক্ষণের ফায়দা তোলার আশায় আছেন তিনি। 

রিয়ালের রক্ষণের অন্যতম দুই ভরসা দানি কারভাহাল ও এডার মিলিতাও লম্বা সময় ধরে মাঠের বাইরে। অ্যান্টিনিও রুডিগার, ডেভিড আলাবা ও লুকাস ভাসকুয়েজ নতুন করে চোটে পড়েছেন। বর্ষীয়ান নাচো গত গ্রীষ্মে দল ছেড়েছেন। তাই সিটির বিপক্ষে ডিফেন্ডার সংকটে আছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। বাধ্য হয়ে মিডফিল্ডার চুয়েমেনিকে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলাতে হচ্ছে। যে কারণে প্রায়ই দলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। মাদ্রিদ ডার্বিতে এ জন্যই পয়েন্ট খোয়াতে হয়েছে। এ দুর্বলতার জন্য আক্রমণভাগে একসঙ্গে এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস, বেলিংহাম ও রদ্রিগোকে খেলাতে পারছেন না। সিটির বিপক্ষে রক্ষণের এ দুর্বলতাই আনচেলত্তির সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা।

খোঁড়াতে খোঁড়াতে নকআউটে আসা সিটির চিন্তা মাঝমাঠ নিয়ে। রদ্রির অভাব এখনও পূরণ করতে পারেনি তারা। তাঁর বিকল্প হিসেবেই কয়েক দিন আগে পোর্তো থেকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নিকো গঞ্জালেসকে কিনেছিলেন গার্দিওলা। কিন্তু তিনিও গত সপ্তাহে চোটে পড়েছেন। গঞ্জালেস নাকি দ্রুত ফিট হয়ে উঠছেন। দুই ডিফেন্ডার নাথান এইকে ও রুবেন দিয়াজ ফিট হয়ে গেছেন। তারা মাঠে নামতে পারলে রিয়ালে ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’কে (এমবাপ্পে, ভিনি, বেলিংহাম, রদ্রিগো) আটকানো সম্ভব বলে মনে করছেন গার্দিওলা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নিউ জিল্যান্ডের প্রথম বড় আইসিসি টুর্নামেন্ট জয়

২০০০ সালে কেনিয়ায় আয়োজিত আইসিসি নকআউট ট্রফির দ্বিতীয় আসরে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ।সেবার আয়োজক কেনিয়াসহ মোট ১১টি দেশ অংশ নেয়। যেহেতু নকআউট ট্রফি, সেহেতু কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে ৮টি দল। 

নিয়মানুযায়ী ৩টি দলকে বাদ দিতে হবে। আর সেটা করা হয় প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে। র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ পাঁচটি দল (পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে) সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। বাকি দলগুলোকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে হয়। তাতে অংশ নেয় ভারত, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও কেনিয়া।

প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ পায় ইংল্যান্ডকে। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করে। জাভেদ ওমর  ৮৪ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। জবাবে ৮ উইকেট ও ৩৭ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের নাসের হুসেন ১২০ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের মোহাম্মদ রফিক ১টি উইকেট নেন। বাংলাদেশকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শেষ আটে যায় শ্রীলঙ্কা। আর স্বাগতিক কেনিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ভারতও কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পায়। কেনিয়ার বিপক্ষের এই ম্যাচে অভিষেক হয় ভারতের জহির খান, যুবরাজ সিং ও বিজয় দাহিয়ার।

কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তান পায় শ্রীলঙ্কাকে। নিউ জিল্যান্ড পায় জিম্বাবুয়েকে। ভারত পায় শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে। আর ইংল্যান্ড পায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সেমিফাইনালে ওঠে পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বিদায় নেয় শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে।

সেমিফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় ভারত। নিউ জিল্যান্ড পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে ও ভারত প্রোটিয়াদের ৯৫ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।

১৫ অক্টোবর নাইরোবির জিমখানা ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নামে ভারত। সৌরভ গাঙ্গুলি ও শচীন টেন্ডুলকারের অসাধারণ উদ্বোধনী জুটিতে ১৪১ রান তোলে ভারত। এরপর ব্যক্তিগত ৬৯ রানে আউট হন শচীন। কিন্তু সৌরভ তুলে নেন সেঞ্চুরি। সৌরভের ১১৭ ও শচীনের ৬৯ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান সংগ্রহ করে ভারত।

এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউ জিল্যান্ড। ৬ রানে প্রথম, ৩৭ রানে দ্বিতীয় ও ৮২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় কিউইরা। এরপর ১০৯ রানে চতুর্থ ও ১৩২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে অপরাজিত সেঞ্চুরি (১০২) করে নিউ জিল্যান্ডকে শিরোপা জেতান ক্রিস কেয়ার্নস। তার সঙ্গে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন ক্রিস হ্যারিস। তাতে ৪৯.৪ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। পাশাপাশি জিতে নেয় আইসিসি নকআউট ট্রফি। যা তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে আইসিসি আয়োজিত কোনো বড় ইভেন্টের শিরোপা।

ভারতের ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ৭ ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট নেন অনিল কুম্বলে। ফাইনালের ম্যাচসেরা হন নিউ জিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নস।

এক নজরে আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০

তারিখ : ৩ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর-২০০০

আয়োজক : কেনিয়া

ফরম্যাট : ওয়ানডে ইন্ডারন্যাশনাল

টুর্নামেন্ট : নকআউট ভিত্তিক

অংশগ্রহণকারী দেশ : ১১টি

মোট ম্যাচ : ১০টি

চ্যাম্পিয়ন : নিউজিল্যান্ড

রানার্স-আপ : ভারত

সবচেয়ে বেশি রান : ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলি (৩৪৮)

সবচেয়ে বেশি উইকেট : ভারতের ভেঙ্কটেশ প্রসাদ (৮ উইকেট)।

ঢাকা/আমিনুল/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গেইল না ক্যালিস, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সেরা কে
  • নিউ জিল্যান্ডের প্রথম বড় আইসিসি টুর্নামেন্ট জয়
  • চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুর ইতিহাস