রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অনেক স্থানে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কুয়াশা পড়ে। বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা অনেক স্থানে কেটে যায়। রোদ ওঠে। তবে সেই রোদ আবার ঢেকে যাচ্ছে মেঘ ও কুয়াশায়। রাজধানীতে বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণাঞ্চলে মূলত এ কুয়াশা হয়। আজ রাজধানী বা দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত তা বিস্তৃত হয়েছে। আগামী দুয়েক দিন এমন কুয়াশা থাকতে পারে সকালের দিকে। আবার দেশের দুই বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনাও আছে।

আজকের সকাল কুয়াশায় ঢাকা থাকলেও রাজধানীতে কিন্তু গতকালের চেয়ে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েছে। আজ নগরীরর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল তা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এক দিনে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়ে গেছে রাজধানীর।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আজ দেশের সার্বিক তাপমাত্রাও বেড়েছে এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়—১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও এখানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, আর তা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ তা বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাপমাত্রা এভাবে আরও অন্তত দুই দিন বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। তিনি বলেন, আগামী শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা আবার কমতে পারে। তবে সেটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ না। দুই দিন এমন থাকার পর আবার তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

আজ রাজধানীতে এত কুয়াশা পড়ার কারণ হিসেবে নাজমুল হক বলছিলেন, এ সময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কুয়াশা সৃষ্টি হয়। দক্ষিণের বায়ুর সঙ্গে জলীয় বাষ্প মিশে থাকে। এর আধিক্যে এমন মেঘলা আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়। দক্ষিণের কুয়াশা বাতাসের তারতম্যের জন্য দেশের মধ্যাঞ্চল বা এই রাজধানী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। আগামী দুয়েক দিন সকালে এমন কুয়াশা থাকতে পারে।

এর মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলেছে আবহাওয়া অফিস। আজ রংপুর ও সিলেটের কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, এমন পূর্বাভাস আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স লস য় স গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শিশুদের জন্য ইফতারি

টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও এতিম শিশুদের জন্য ইফতারি ও রাতের খাবারের আয়োজন করেছে ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন’। পাঁচ বছর ধরে বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর বাজার কেন্দ্রীয় দারুস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা 
ও এতিমখানার ৬৫ এতিম শিশুর জন্য রমজান মাসজুড়েই এ আয়োজন করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। 
২০১৬ সালে সরকারি বেড়া বিপিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন’ গড়ে তোলে। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শুরুর দিকে তারা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা করত। পরে খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসাসামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ করে। তাদের এ উদ্যোগ দেখে সচ্ছল ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তহবিলে অর্থসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। মূল দায়িত্বে রয়েছেন প্রতিষ্ঠাকালের উদ্যোক্তারা। তারা এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। 
সংগঠনের শিক্ষার্থীরা জানান, হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর বাজার কেন্দ্রীয় দারুস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি অর্থাভাবে বন্ধের উপক্রম হলে তারা পাশে দাঁড়ান। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সারা বছরই অনেক হৃদয়বান মানুষ এতিম শিশুদের জন্য খাবার, পোশাকসহ নানা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করেন। রমজান মাসের ৩০ দিন তাদের টিফিনের টাকার পাশাপাশি এসব সহৃদয়বান মানুষের সহায়তায় ইফতারি ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। 
সংগঠনের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা মেহরাব হোসেন জিম জানান, ২০২১ সাল থেকে আমাদের সংগঠন রমজানের ফুড ইভেন্টের মাধ্যমে এতিমখানা ও মাদ্রাসার বাচ্চাদের ইফতারি ও রাতের খাবারের আয়োজন করে আসছে। ‘শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনের’ নামে ফেসবুকে আমাদের একটি পেজ রয়েছে। রমজান মাসের কয়েকদিন আগে এই পেজে এতিমদের সহায়তার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়ে থাকে। এর পর থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করে কোনো না কোনো দিনের ইফতারি ও রাতের খাবারের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। 
এতিমখানার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইফতারিতে প্রতিদিন খেজুর, কলা, আপেল, আনারস, বিস্কুট, সরবত অথবা জুস, ছোলা, বুন্দিয়া, চপ, বেগুনি, পেঁয়াজু, নুডলস দেওয়া হয়। রাতের খাবারে ভাতের সঙ্গে মুরগির মাংস, ডাল দেওয়া হয়। বিশেষ বিশেষ দিনে গরুর মাংস ও মুরগির রোস্টের ব্যবস্থা থাকে। 
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও এতিমখানাটির তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ মাওলানা আসাদুল ইসলাম সিরাজী সমকালকে জানান, রোজার মাসে প্রতিদিন এতিম শিশুদের জন্য ইফতারি ও রাতের খাবার দেওয়া হয়। এ জন্য তারা শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
ইফতারি ও রাতের খাবারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তৃতীয় বর্ষের (সম্মান) শিক্ষার্থী রবিউল ইসলামের বাড়ি এতিমখানার পাশেই। তিনি বলেন, এতিম ও অতিদরিদ্র শিশুদের পাশে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। সমাজের কিছু হৃদয়বান মানুষের জন্য আমাদের কাজটা সহজ হয়েছে। তাদের আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ