কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তরুণকে গুলি করে হত্যা
Published: 11th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রাজু হোসেন (১৮) নামের এক তরুণকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রাজু ওই ইউনিয়নের ফারাকপুর ভাঙ্গাপাড়া এলাকার ইব্রাহীম প্রামাণিকের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
রাজুর নিকট আত্মীয় মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও একই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ আগে এলাকার এক যুবকের সঙ্গে রাজুর বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে ওই যুবক রাজুর ওপর চরম ক্ষিপ্ত ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে একজন রাজুকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাতে শুনতে পান, রাজুকে গুলি করা হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান বলেন, রাজু বুকের বাঁ পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে জানতে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদাকে কল দিলে তিনি ধরেননি।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস ও মিডিয়া) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, রাজুর শরীরে গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এ ঘটনায় তাঁর সঙ্গে থাকা একজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস, আরো ৫ বিএনপি নেতা কারামুক্ত
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসপ্রাপ্ত আরো পাঁচ বিএনপি নেতা কারামুক্ত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা কারামুক্ত হন। এর মধ্যে রাজশাহী কারাগার থেকে চারজন ও পাবনা কারাগার থেকে একজন মুক্তি পান।
রাজশাহী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম আক্তারুজ্জামান, সাবেক পৌর কমিশনার শামসুল আলম ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন।
এছাড়া পাবনা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন।
আরো পড়ুন:
ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছে ইসি
তিস্তা ইস্যুতে বিএনপির দুই দিনের নতুন কর্মসূচি
এ সময় পাবনা জেলা ও ঈশ্বরদী বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তারা কারামুক্ত নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন। দীর্ঘ বছর পর স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পাবনা কারাগার থেকে মুক্তি পান একই মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসপ্রাপ্ত ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, পৌর বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম অটল ও ঈশ্বরদীর যুবদল নেতা মোস্তফা নুরে আলম শ্যামল।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় ওই সময় ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার অভিযোগে ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী এই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সরকার পতনের পর ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের যৌথ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামি বাদে ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত ১২ জন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৮ জনকে জামিন দেন আদালত। পরে তারা কারামুক্ত হন।
আর নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ফাঁসির ৯ জনসহ সাজাপ্রাপ্ত ৪৭ জনের সবাইকে খালাস দেন।
ঢাকা/শাহীন/বকুল