জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের ইতি টানতে চান ট্রাম্প, অন্যান্য দেশের কী অবস্থা
Published: 11th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশ বেশ কিছু আইনি চ্যালেঞ্জের ও অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
প্রায় ১৬০ বছর ধরে মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী এমন নীতি প্রতিষ্ঠা করেছে যে দেশটিতে জন্ম নেওয়া যে কেউই একজন মার্কিন নাগরিক হবেন।
কিন্তু ট্রাম্প অবৈধভাবে বা অস্থায়ী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অভিবাসীদের সন্তানদের নাগরিকত্বের অধিকার অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর নীতির অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর এ পদক্ষেপে জনসমর্থন আছে বলেও মনে হচ্ছে। এমারসন কলেজের একটি জরিপে দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিরোধিতার পরিবর্তে অনেক বেশি মার্কিন নাগরিক তাঁর পক্ষে আছেন।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলসংক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডেমোক্র্যাট–শাসিত অঙ্গরাজ্য ও শহর, নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিবিশেষে কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করেন।বিশ্বজুড়ে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বজন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বা ‘জাস সোলি’ (মাটির অধিকার) বিশ্বব্যাপী খুব বেশি প্রচলিত রীতি নয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের মধ্যে একটি, যারা নিজ দেশে জন্ম নেওয়া যে কাউকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব দেয়। এসব দেশের বেশির ভাগই আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত।
এ নিয়মের বিপরীতে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু অংশের অনেক দেশই ‘জাস সাঙ্গুইনিস’ বা রক্তের অধিকার নীতি মেনে চলে। এ নীতির মূল বক্তব্য হলো—জন্ম যেখানেই হোক না কেন, শিশুরা তাদের মা–বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে নাগরিকত্ব লাভ করবে।
আবার কোনো কোনো দেশে এ উভয় নীতির সমন্বয়ও দেখা যায়। স্থায়ী বাসিন্দাদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়ার নিয়মও দেখা যায় এসব দেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জন স্ক্রেন্টনি বিশ্বাস করেন, আমেরিকা মহাদেশজুড়ে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বা জাস সোলি প্রচলিত থাকলেও এ ক্ষেত্রে প্রতিটি জাতি-রাষ্ট্র স্বতন্ত্র কারণে এ রীতি গ্রহণ করেছিল।
আমেরিকা মহাদেশজুড়ে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বা ‘জাস সোলি’ প্রচলিত থাকলেও এ ক্ষেত্রে প্রতিটি জাতি-রাষ্ট্র স্বতন্ত্র কারণে এ নীতি গ্রহণ করেছিল।জন স্ক্রেন্টনি, যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকজন স্ক্রেন্টনির মতে, কিছু দেশ দাস ও সাবেক দাসদের জন্য জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নীতি গ্রহণ করেছিল। কিছু দেশ একেবারেই ভিন্ন কারণে এ রীতি গ্রহণ করে। যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্বের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া মানুষদের আইনি স্বীকৃতি দিতে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল।
তবে স্ক্রেন্টনি যুক্তি দেন যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রায় সব দেশের মধ্যে একটি মিল পাওয়া যায়। আর তা হলো, ‘সাবেক উপনিবেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে নিজেদের একটি জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক স্ক্রেটনি বলেন, ‘কাকে নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, কাকে বাদ দিতে হবে ও কীভাবে জাতি-রাষ্ট্রকে শাসনযোগ্য করে তুলতে হবে, সেসব সম্পর্কে দেশগুলোকে কৌশলী হতে হয়েছিল। অনেক দেশ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান তৈরি করেছিল।’
জন স্ক্রেন্টনি আরও বলেন, কোনো কোনো দেশ ইউরোপ থেকে অভিবাসনকে উৎসাহিত করতে নাগরিকত্বের বিধান রেখেছিল। আবার কোনো কোনো দেশ নিশ্চিত করেছিল যে আদিবাসী জনগোষ্ঠী, সাবেক দাস ও তাঁদের সন্তানদের পূর্ণ সদস্য (নাগরিক) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাঁদের রাষ্ট্রহীন রাখা হবে না। এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট কৌশল ছিল। সেই সময়টি হয়তো চলে গেছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলসহ বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৪তম বাংলাদেশে
বৈশ্বিক দুর্নীতির ধারণা সূচকে ফের দুঃসংবাদ পেলো বাংলাদেশ। এই সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫১তম। গত বছর এ অবস্থান ছিল ১৪৯তম। সর্বনিম্ন স্কোর পাওয়া দেশগুলো মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। ১৮০টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে এ র্যাংকিং প্রকাশ করা হয়েছে।
বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) পরিচালিত ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪’-এর বৈশ্বিক প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
টিআইবি জানায়, দুর্নীতির ধারণা সূচক-২০২৪ এ বাংলাদেশের স্কোর ১ পয়েন্ট কমে গত ১৩ বছরে এখন সর্বনিম্ন ২৩ পয়েন্ট। উচ্চক্রম অনুযায়ী দুই ধাপ অবনতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫১তম।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচকে দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ থেকে ১০০-এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। ‘০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বাধিক সুশাসিত বলে ধারণা করা হয়।
টিআই বলেছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৪।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১২ সালের পর এবার দুর্নীতি সূচকে সবচেয়ে কম স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। ভুটান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের স্কোর কমেছে।
বিস্তারিত আসছে…
এনজে