শত বাগানে ১৩ লাখ গোলাপ, অপেক্ষা ভালোবাসা দিবসের
Published: 11th, February 2025 GMT
কক্সবাজার শহর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়ন। একসময় বরইতলীর বিভিন্ন গ্রামে বরই চাষ হতো। তবে এখন হচ্ছে গোলাপের চাষ। এ কারণে ইউনিয়নটি পরিচিত হয়ে উঠেছে গোলাপ গ্রাম নামে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে মহাসড়কের ওপর দিয়ে যেতে অতিক্রম করতে হয় চকরিয়ার এই বরইতলী এলাকা। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার অংশে দুপাশে চোখে পড়ে লাল গোলাপের বাগান। বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা গোলাপের ঘ্রাণ মোহিত করে সড়কের যাত্রীদেরও।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের দুপাশে বিভিন্ন বাগানজুড়ে ফুটে আছে লাল গোলাপ। দূর থেকে দেখে মনে হয়, কেউ যেন সবুজের ওপর লালগালিচা বিছিয়ে রেখেছে। বেলা ১১টার দিকে সড়কের পূর্বপাশের একটি বাগানে ঢুকে দেখা যায়, সাতজন শ্রমিক বাগান থেকে গোলাপ কাটছেন। দূরে দাঁড়িয়ে গোলাপ কাটার কাজ তদারক করছেন বাগানের মালিক ইদ্রিস আহমদ।
রিপন দে (৪০) নামে বাগানের এক শ্রমিক বলেন, সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ৮ শতাধিক গোলাপ কেটেছেন (সংগ্রহ) তিনি। রিপন জানান, প্রতিদিন সকালের দিকে গোলাপ কাটেন তিনি। তারপর সেই গোলাপ গাড়িতে করে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম। বাগানের নারী শ্রমিক শিল্পী রানি দে (৫৫) বলেন, তিন ঘণ্টায় তিনি সাত শতাধিক গোলাপ কেটেছেন। ১০ বছর ধরে তিনি বাগানে গোলাপ কাটছেন।
বাগানের মালিক ইদ্রিস আহমদের (৬০) সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, ২৩ বছর ধরে তিনি গোলাপ চাষ করে আসছেন। প্রতিবছর তিনি ৫০ লাখের বেশি গোলাপ বিক্রি করেন। আয় করেন ২৫ লাখ টাকার বেশি। অনেক সময় গোলাপ বিক্রি হয় না, গাছেই নষ্ট হয়। তখন মনটা খারাপ হয়ে যায়। এ ধরনের সময়ে ফুল বিনা মূল্যে বিতরণের জন্যও কাউকে পাওয়া যায় না।
বাগানটির মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, ৬ কানির (কানিতে ৪০ শতক) বাগানটিতে গাছ আছে ২৪ হাজার। প্রতিটি গাছে ফুটেছে দুই থেকে পাঁচটি গোলাপ। প্রতিদিন ৬ হাজার গাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার গোলাপ কাটা হয়। তারপর সেই ফুল পাঠানো হয় চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় এলাকার ফুলের দোকানগুলোয়। প্রতিটি গোলাপ সাধারণত পাইকারিতে বিক্রি হয় দেড় টাকায়। ইদ্রিস আহমদ বলেন, গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি করেছেন ১০ টাকা দরে। এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হতে পারে। ওই দিন তিনি ৬০ হাজার গোলাপ বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ইদ্রিস আহমদের দক্ষিণ পাশে আবদুল মান্নানের তিন কানির আরেকটি গোলাপবাগান। এই বাগানের প্রতিটি গাছে ফুটেছে তিন থেকে চারটি লাল গোলাপ। সকালের কয়েক ঘণ্টায় গাছগুলো থেকে কাটা হয় দেড় হাজারের বেশি গোলাপ। এই ফুলও চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় এলাকায় সরবরাহ করা হবে জানিয়ে আবদুল মান্নান (৫৫) বলেন, একসময় বাগানের এ জমিতে তামাকের চাষ হতো। লাভজনক তামাক চাষ বাদ দিয়ে তিনিসহ গ্রামের ৪০ জন চাষি ৬০ কানি জমিতে ছোট-বড় ১৫টি গোলাপবাগান সৃজন করেন। প্রথম দিকে চাষিরা লাভবান হলেও এখন ফুলের বাজার মন্দা।
গোলাপ বাগানে এক নারী শ্রমিক কাজ করছেন। সম্প্রতি চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় সংগঠনটির এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
আহত যুবকের নাম মোবাসের হোসেন (২৬)। তিনি নগরীর হারিনাল দক্ষিণপাড়া এলাকার আলী আহমেদের ছেলে। মোবাসের বৈষম্যবিরোধী গাজীপুর জেলার সদস্য।
আরো পড়ুন:
নামাজের সময় গানবাজনার অভিযোগ
কলেজের অনুষ্ঠানে হামলা, চেয়ার-বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর
গোপালগঞ্জে শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচারের দাবিতে গাজীপুরের শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে দিনভর বিক্ষোভ চলে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাজীপুর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান শিক্ষার্থীদের সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ার এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন। এরপর বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা চলে যায়।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিল। এসময়ে একটি মোটরসাইকেল আসা দুইজন সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে তারা পালিয়ে যায়। গুলিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোবাসের হোসেনের ডান হাতের এক পাশে লাগে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মনজুর মোর্শেদ গণমাধ্যমকে জানান, রোগীর ডান বাহুতে গুলি লেগেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “একজনের হাতে গুলি লেগেছে শুনেছি। ঘটনা কি ঘটেছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ