অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন ৬ স্থলবন্দর বন্ধের সুপারিশ
Published: 11th, February 2025 GMT
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ছয়টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর প্রাথমিকভাবে বন্ধ ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি স্থলবন্দর কার্যকর বা অকার্যকরের বিষয় যাচাইয়ের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটি এ সুপারিশ করে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.
ওই ছয়টি স্থলবন্দর হলো— নীলফামারীর চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর, রাঙ্গামাটির তেগামুগ স্থলবন্দর, দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর, ময়মনসিংহের কড়ইতলী স্থলবন্দর এবং হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দর।
সভায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “বিগত সরকারের আমলে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে, যা রাষ্ট্রের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি, বরং রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হয়েছে। একটি উপজেলায় অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বে দুটি স্থলবন্দরও নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য যেটি মঙ্গলজনক হবে সে সব স্থলবন্দর সচল রাখা হবে।”
অর্থনৈতিক কার্যক্রম না থাকা এবং রাষ্ট্রের জন্য লাভজনক না হওয়ায় ওই স্থলবন্দরগুলোর কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, এসব স্থলবন্দরের ভারতের অংশে উপযুক্ত কোনো স্থাপনাও গড়ে উঠেনি। তবে বাংলাদেশ অংশে স্থলবন্দরের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা বা অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় ওই বন্দরগুলোর বিষয়ে অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ এএএম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমধুমে স্থলবন্দর করার পরিকল্পনা সরকারের: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে স্থলবন্দর নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। আজ শনিবার সকালে তিনি ঘুমধুম সীমান্ত সড়ক ও স্থলবন্দরের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এ সময় এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভবিষ্যতে মিয়ানমারে যা–ই থাকুক না কেন, আমাদের সঙ্গে রাখাইন রাজ্যের একটা সম্পর্ক আগে ছিল, এখনো আছে এবং থাকবে। রোহিঙ্গারা যেহেতু ওই এলাকার। কাজেই ওটাও দেখব, ভবিষ্যতের জন্য একটা পরিকল্পনা করে রাখব, যাতে এখানে একটা স্থলবন্দর করা যায়।’
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে নৌপথের চেয়ে স্থলপথ সুবিধাজনক। ঘুমধুমের এশিয়ান অঞ্চলের আন্তদেশীয় মহাসড়ক দুই দেশের যোগাযোগব্যবস্থার জন্য সহজ। টেকনাফে আমাদের একটা বন্দর আছে মিয়ানমারের সঙ্গে। একই সঙ্গে ঘুমধুমে স্থলবন্দর নির্মাণেরও সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। এটিই হবে আরাকান বা রাখাইনের সঙ্গে আমাদের সহজ স্থল যোগাযোগ। টেকনাফ বন্দরকে আমরা স্থলবন্দর বলি, আসলে এটা স্থলবন্দর না। এটা হয়তো নৌবন্দরে পরিণত হবে। সেই সঙ্গে এটিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন ন্যস্ত করা যেতে পারে।’
উপদেষ্টার সফরকালে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মানজারুল মান্নান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল্লাহ ইয়ামিন, কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফারুক হোসেন খানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
পরে উপদেষ্টা কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর ও মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেন। ইয়াঙ্গুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর পর্যন্ত বাণিজ্য কীভাবে সচল রাখা যায়, সেই চেষ্টাও চলছে বলে জানান এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘টেকনাফ স্থলবন্দর ঘুরে দেখেছি, এটি নৌপরিবহন, সমুদ্রবন্দর নাকি স্থলবন্দর থাকবে, সেটি আমরা দেখছি।’
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শনকালে এ বন্দরের বিভিন্ন সমস্যা ও অনিয়মের বিষয় উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন স্থলবন্দরটির সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। এ সময় উপদেষ্টা এসব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন ব্যবসায়ীদের।
উপদেষ্টার টেকনাফ স্থলবন্দর সফরকালে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থলবন্দর পরিচালনাকারী ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার জায়েদ আহসান, টেকনাফের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে পণ্যবাহী কার্গো বোট আটকের ঘটনায় জান্তা সরকার সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে ২৩ দিন ধরে ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোনো পণ্যবাহী বোট আসেনি।