যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার থেকে এ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর চীনের শুল্কও কার্যকর হচ্ছে। চীনের সব ধরনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের গত গত ৪ ফেব্রুয়ারি বেইজিং এ ঘোষণা দিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দুই পরাশক্তির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ অনেকটাই স্পষ্ট হলো। 

দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্ক সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। স্থানীয় সময় রোববার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তাঁর এ শুল্ক কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশসহ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার– সবার জন্য কার্যকর হবে। তিনি বলেন, যে কোনো স্টিল যুক্তরাষ্ট্রে এলে তার জন্য ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রেও এটা কার্যকর হবে। সম্প্রতি ট্রাম্প জানান, তিনি ইউরোপ, তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশকে শুল্কের আওতায় আনছেন। তাদের তামা, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, ওষুধপণ্য ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেন তিনি। 

ট্রাম্প বলেন, ‘শুল্কের ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই– আমরা শুল্ক আরোপ করব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পারস্পরিক শুল্ক। এটি এমনভাবে হবে, যেখানে একটি দেশ আমাদের ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের ওপর একই পরিমাণ শুল্ক বসাব। তাই এটি খুবই পারস্পরিক হবে। আমি মনে করি, এটা ন্যায্য পদ্ধতি। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তারা আমাদের ওপর শুল্ক বসালে, আমরাও নির্দিষ্ট হারে তাদের ওপর শুল্ক বসাব।’ 

গত ১ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে কানাডা ও মেক্সিকোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প এ দুই দেশের ওপর শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত করেন।  চীনের শুল্ক স্থগিত করা হয়নি। 

বিশ্বের বড় দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ জোরদার হওয়া এবং আরও কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির মধ্যেই মার্কিন পণ্যে চীনের এ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়লা ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি। 

এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বড় কোনো আঘাত আনবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনালাপ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এর আগে বেইজিং বলেছিল, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে কেউই লাভবান হবে না। 

যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আসে মেক্সিকো ও কানাডা থেকে। নতুন এ শুল্ক আরোপ কার্যকর হওয়ায় এ দুটি দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কানাডা বলেছে, এ শুল্ক তাদের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসবে। অস্ট্রেলিয়া বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপে অনড় থাকলে হাজার হাজার মার্কিনি কর্মহীন হয়ে পড়বেন। 

বিবিসির লরা বিকার বলেন, প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে লড়াই করেছেন, বর্তমানে সেটি আর নেই। বেইজিং এরই মধ্যে অনেকটাই প্রস্তুতি নিয়েছে। এখন ২০১৭ সালের তুলনায় তারা রপ্তানির ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। এরই মধ্যে তারা গ্লোবাল সাউথ, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য বাড়িয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে বেইজিংয়ের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল ককর শ ল ক আর প র শ শ ল ক আর প শ ল ক আর প ক র ওপর শ ল ক দ র ওপর ক র যকর

এছাড়াও পড়ুন:

আদালতের ভেতরে পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আটক

পাবনায় আদালতের ভেতরে শুনানি চলাকালে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেওয়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

আটককৃতরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের ফতে মোহাম্মদপুর নিউ কলোনী এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে আওয়াল কবির (৩৮), হাবিবুর রহমানের ছেলে সরোয়ার জাহান শিশির (৩৩), দাশুড়িয়া গ্রামের মৃত আমজাদ খানের ছেলে কালাম খান (৪০), এম এস কলোনী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৩), লোকোসেড গাউছিয়া মসজিদ এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে সবুজ হোসেন (৩৫) এবং ভাঁড়ইমারী বাঁশেরবাদা গ্রামের মৃত আব্দুল গাফফার সরদারের জহুরুল ইসলাম (৩৫)।

তাদের মধ্যে আওয়াল কবির ঈশ্বরদী পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান শিশির পৌর ছাত্রদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী, কালাম খান দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রুবেল হোসেন পৌর ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এবং জহুরুল ইসলাম ডালিম সলিমপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ঈশ্বরদীতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সময় নাশকতা একটি মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় আটককৃতরা হাজিরা দিতে এসেছিলেন। হাজিরা চলা অবস্থায় তারা এজলাসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকেন। এসময় সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য শাহ আলম তাদের ছবি তুলতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ‌ সদস্যকে মারধর করেন ওইসব নেতাকর্মীরা। 

এসময় আদালতের আইনজীবী ও উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করেন এবং হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আদালতের শুনানি শেষে তাদের আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিদর্শক ( কোর্ট ইন্সপেক্টর) রাশেদুল ইসলাম জানান, সঙ্গে সঙ্গে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আইনজীবী মাসুদ খন্দকার বলেন, “আদালতের এসলাসে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়ার মত নয়। বিএনপির কেউ যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ