ওয়াশিংটনে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী: গাজা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করেছে আরর দেশগুলো
Published: 11th, February 2025 GMT
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে বলেছেন, আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করছে। তারা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরানো এবং উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই কথা জানায়। বৈঠকে গাজা পুনর্গঠনের গতি বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি।
আরও পড়ুনফিলিস্তিনিদের গাজায় ফেরার অধিকার দেওয়া হবে না: ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগেবদর আবদেলাত্তি বৈঠকে মার্কো রুবিওকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘ব্যাপক এবং ন্যায়সংগত শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ অর্জন করতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তাঁর দেশ।
ফিলিস্তিনিরা গাজাসহ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। তাই উপত্যকাটি থেকে তাঁদের সরে যেতে বলার যে কোনো ধরনের পরামর্শ ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আরব দেশগুলো এই ধরনের পরামর্শ ২০২৩ সালে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
আরও পড়ুনসৌদি আরবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের কড়া জবাব দিল রিয়াদ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান ‘ঐতিহাসিক অন্যায়ের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং তাঁদের ‘বৈধ ও অবিচ্ছেদ্য অধিকার’ পুনরুদ্ধারে কাজ করা।
ট্রাম্প সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে
বলেছেন, তাঁর গাজা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার অধীনে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটিতেফেরার কোনো অধিকার থাকবে না।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দা হচ্ছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেতারা বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
আরও পড়ুনগাজাকে ‘বড় আবাসন এলাকা’ মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র পরর ষ ট রমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধীকে ময়দানে-রাজপথে কোথাও দেখতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সারাদেশে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কোনো শয়তান যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে পালাতে না পারে। আমরা কোনো অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে কোথাও দেখতে চাই না। প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে চাই। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে বলবো।
সোমবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের অডিটরিয়ামে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবহিত আছেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুস্কৃতিকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে, কিন্তু তাদের দোসররা দেশে বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা এদেশের জনগণের সম্পদ অন্যায়ভাবে লুটপাট করে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে। যারাই তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তাদেরকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়েছে, দলীয় বাহিনীর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে, অন্যায়ভাবে মামলা-হামলা দিয়ে হেনস্থা করেছে। গণমাধ্যমগুলো দখল ও নিয়ন্ত্রণ করেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে শায়েস্তা করেছে। অনুগত পুঁজিবাদী শ্রেণি তৈরি করে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। সিভিল সার্ভিস ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে এবং আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। বর্তমানে তারা বিগত ১৬ বছরে তাদের অর্জিত অবৈধ সম্পদ ব্যবহার করে অপশক্তির সম্পৃক্ততায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসী, নরহত্যায় জড়িত বিশেষ হেলমেট বাহিনী, ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা, অর্থ পাচারকারী, লুণ্ঠনকারী, ষড়যন্ত্রকারী, দুস্কৃতিকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী, দুদকের মামলায় আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পুলিশ বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনি প্রক্রিয়ায় এবং অপরাধীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রেপ্তার করেছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সারাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীসমূহের সমন্বয়ে গত ৮ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশের অভিযান সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কার্যক্রম তদারকি করা হবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ সদরদপ্তর স্থাপিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের’ মাধ্যমে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।
গ্রেপ্তার অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে কর্মশালায় ঢাকা মহানগর ও গাজীপুর মহানগরের পুলিশ কর্মকর্তা, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পাবলিক প্রসিকিউটর এবং দুই জেলার ডিসিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে ঢাকা ও গাজীপুর মহানগর ও জেলা প্রশাসনের সর্বমোট ১২০ জন ডেলিগেট অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও গাজীপুর জেলা প্রশাসক; জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩১ জন, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ২০ জনসহ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) ১০ জন উপকমিশনারসহ ৫৭ ওসি অংশ নিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে দেশের সব মহানগর ও জেলা প্রশাসনকে এই কর্মশালার আওতায় আনা হবে।