ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান জিম্মি-বন্দী বিনিময় চুক্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা এখন রয়েছে। তবে এ জন্য দেশটিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পূরণ করতে হবে।

সোমবার বিকেলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস এ কথা জানিয়েছে। এর আগে একই দিন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে অনির্দিষ্টকালের জন্য চুক্তি স্থগিত রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছিল সংগঠনটি। 

নতুন ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘নির্ধারিত বন্দী বিনিময়ের পাঁচ দিন আগে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘোষণা (স্থগিতের) দিয়েছিল হামাস। এর উদ্দেশ্য ছিল চুক্তির শর্ত পূরণের জন্য যাতে (ইসরায়েলি) দখলদারির বিরুদ্ধে চাপ তৈরির জন্য মধ্যস্থতাকারীরা পর্যাপ্ত সময় পান। দখলদারেরা চুক্তির শর্ত মেনে চললে পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে বন্দী বিনিময়ের কাজ এগিয়ে নিতে দরজা খোলা থাকবে।’

চুক্তি স্থগিতের ঘোষণায় হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেছিলেন, ইসরায়েলের কারণে যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরতে দেরি হয়েছে। তাঁদের গুলির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতে দেয়নি ইসরায়েল। তাই পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জিম্মি মুক্তি স্থগিত থাকবে। 

হামাসের এই ঘোষণার পর পাল্টা এক বিবৃতি দেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। তিনি বলেন, ‘হামাস জিম্মি মুক্তি বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছে, তা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির পুরোপুরি লঙ্ঘন। আমি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গাজায় সম্ভাব্য যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’ আর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামাসের ঘোষণার বিষয়ে জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১৫ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এরই মধ্যে হামাসের কাছে বন্দী থাকা ১৬ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মুক্তি পাচ্ছেন ইসরায়েলে বন্দী কয়েক শ ফিলিস্তিনিও। এ ধারাবাহিকতায় আগামী শনিবার আরও তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল হামাসের।

আরও পড়ুনজিম্মি মুক্তি স্থগিত হামাসের, সেনা সতর্কতা ইসরায়েলের১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাকৃবিতে এক শিক্ষার্থীকে একাধিকবার বহিষ্কার

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এক শিক্ষার্থীকে বারবার বহিষ্কার ও শাস্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিচারের স্বচ্ছতা ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রশ্ন উঠেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হল ফিস্টের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণামূলক গান বাজানোর ঘটনায় কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজমাঈন হাসান মাঈনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি এডিশনাল রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

এরপর কোনো আপিল বা দরখাস্ত ছাড়াই গত বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রয়ারি) হল প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যেখানে তাকে হল থেকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আজমাঈন হাসান মাঈন জানান, ওইদিন শাহজালাল হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠান চলছিল। গানগুলোও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাই বাজিয়েছিলেন। তিনি শুধু পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। গানা বাজানোর ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা না থাকার পরেও হল প্রাধ্যক্ষ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে তাকে হেনস্থা করার জন্য এসব কাজ করছেন।

ভুক্তভোগীর প্রশ্ন রেখে জানান, হলের অনুষ্ঠানে গান বাজাচ্ছিলেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আওয়ামীলীগের গান বাজানোর ওই ঘটনায় কেন একমাত্র তাকেই শাস্তি দেওয়া হলো?

হল প্রভোস্টের সাথে ব্যক্তিগত আক্রোশের বিষয়ে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রদল নেতার সঙ্গে তার সুসস্পর্ক রয়েছে। এদিকে ছাত্রদলের আরেক নেতা শাহজালাল হলে প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টায় আছেন। এ কারণেই ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে সরানোর জন্য এমন কাজ করছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদিউজ্জামান খান। বারবার এভাবে শাস্তি দেওয়া ও পরিবর্তনের ঘটনাকে প্রশাসনের অন্যায্য ও প্রতিহিংসামূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন ভুক্তভোগী। 

শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখার এডিশনাল রেজিস্ট্রার মো. সারওয়ার জাহান বলেন, “এখানে প্রশাসনিক কিছু ত্রুটি ছিল। হলভিত্তিক সমস্যায় প্রাধ্যক্ষই সবকিছু নির্ধারণ করেন। এ কারণেই প্রথমে শিক্ষার্থী আজমাঈন হাসান মাঈনকে একাডেমিক বহিষ্কার করা হলেও পরবর্তীতে সেটি বাতিল করা হয়েছে। হল প্রাধ্যক্ষ পরবর্তীতে তার বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন।”

শাহজালাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদিউজ্জামান খান বলেন, “ওই শিক্ষার্থী যখন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণার ওই গানটি বাজাচ্ছিলেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তবর্গ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাকে প্রথমে তার শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শাস্তি কিছুটা কমিয়ে তাকে হল থেকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রথম বর্ষের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীকে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।”

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার হলের একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত আক্রোশ কেন থাকবে? এ রকম হলে তার শাস্তি কমানোর বিষয়ে আমরা ভাবতামই না।”

গত বছর ২৬ ডিসেম্বর বাকৃবির শাহজালাল হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত একটি ফিস্টে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রচারণা এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে অস্তিরতা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষিপ্ত হয় এবং কেউ ইচ্ছে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার পায়তারা করছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। শিক্ষার্থীরা সে সময় প্রশাসনকে বলেছিলেন, তারা ব্যঙ্গ করার উদ্দেশ্যে গান বাজিয়েছে।

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিম্মি মুক্তির জন্য হামাসকে আলটিমেটাম, নইলে যুদ্ধবিরতি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের
  • জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের দরজা এখনো খোলা আছে: হামাস
  • বার্সার ‘বৃহস্পতি’ এখন তুঙ্গে!
  • জিম্মি মুক্তি স্থগিত করল হামাস, ‌‘সর্বোচ্চ সতর্কতায়’ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
  • গর্ভাবস্থায় ফাইব্রয়েড টিউমার কতটা ভয়ের?
  • মতবিনিময় সভা: অধূমপায়ী ও তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি
  • নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হবে জবির প্রথম ফেজের কাজ: উপাচার্য 
  • অপরিবর্তিত থাকছে নীতি সুদহার
  • বাকৃবিতে এক শিক্ষার্থীকে একাধিকবার বহিষ্কার