বইমেলার স্টলে হামলায় দোষীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
Published: 11th, February 2025 GMT
অমর একুশে বইমেলার স্টলে মব হামলার (মব অ্যাটাক) কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একুশে বইমেলা এ দেশের লেখক ও পাঠকদের প্রাণের মেলা। এ দেশের সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, চিন্তক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মিলনস্থল। বইমেলায় এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বাংলাদেশের উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চাকে ক্ষুণ্ন করে, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের মর্যাদার প্রতি অবমাননা প্রদর্শন করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ ও বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে এ ঘটনার তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে। মেলায় নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং এই তাৎপর্যপূর্ণ স্থানে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশে ‘মব ভায়োলেন্সের’ (দলবদ্ধ সহিংসতা) যেকোনো ঘটনা প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় একদল ব্যক্তি বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকা ‘সব্যসাচী’ নামের স্টলে গিয়ে হট্টগোল করেন। তাঁরা ওই স্টল থেকে তসলিমা নাসরিনের বইগুলো সরিয়ে ফেলতে বলেন। স্টলে থাকা ব্যক্তি তাঁদের কথার প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। স্টলের সামনে জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের বিভিন্ন স্লোগানের মধ্যে স্টলের ওই ব্যক্তি পাল্টা স্লোগান দেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলার মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্টলের ওই লোককে সরিয়ে নেয়। পরে স্টলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় অমর একুশে বইমেলার ‘সব্যসাচী’ স্টল গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আগেই দেওয়া হয়েছিল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার ওই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লেখক ও প্রকাশক শতাব্দী ভবকে মেলা থেকে বের করে নিয়ে যায় পুলিশ এবং স্টলটিও বন্ধ করে দেয়। তবে বাংলা একাডেমি বলছে তারা কোনো স্টল বন্ধ করেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বইম ল বইম ল র বন ধ ক
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিবেশীকে মারধর, কারণ জানতে চাওয়ায় যুবদল নেতার রগ কাটল প্রতিপক্ষ
বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিনের দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। বুধবার রাতে শহরের বাসাবাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাঁকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল এবং পরে ঢাকার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা সেলিম ভূঁইয়ার ভাই আজিম ভূঁইয়া ও তাঁর লোকজন শহরের নাগেরবাজার এলাকায় আজিম খান নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। আজিম যুবদল নেতা জসিম উদ্দিনের প্রতিবেশী। পরে রাত ৮টার দিকে বাসাবাটি এলাকার বগা ক্লিনিকের সামনে আজিমের কাছে মারধরের কারণ জানতে চান জসিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিম ও তাঁর লোকজন জসিমের ওপর হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে জসিম স্থানীয় একটি বাড়িতে ঢোকেন। আজিম ও তাঁর লোকজন ওই বাড়ির ফটক ও দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে জসিমকে বেধড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। তাঁর দুই পায়ের রগও কেটে দেয়।
জসিমের মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম পিঞ্জুর বলেন, প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পায়নি জসিম। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। আমরা খুলনা থেকে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর আগে জসিমের ভাগনে রাব্বিকে মারধর ও মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছিল আজিম। সেই মোটরসাইকেল এখনও ফেরত দেয়নি।
প্রথমে মারধরের শিকার আজিম খানের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, আজিম ও তাঁর লোকজন এর আগেও আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিয়েছে। আজিমের সঙ্গে গতকাল কয়েল ফারুক, মাসুদ, মুরাদ, অভি, শাওনসহ ১৫-১৬ জন ছিল। আমরা এ হামলার বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনায় আজিম ভূঁইয়ার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। মাছ ব্যবসায়ী মো. ওসমান বলেন, জসিমকে মারধর করার পর আজিম ও তাঁর লোকজন এসে মাছ ব্যবসায়ী কুটুকে মারধর করেছে। এর আগে আব্দুস সালাম নামে আরেকজন এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারধর করে। আমরা তাদের বিচার চাই।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি মাহমুদ উল হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।