সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। সোমবার বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশের মধ্যে এ কথা উল্লেখ করেছে।

এ ছাড়া গত বছর বিভিন্ন গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন এবং অমানবিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিচারের সম্মুখীন করতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

অধিকারের পাঠানো ৫৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত বছর ২ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ২ হাজার ৪৭৮ জন আহত হয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ১৮ জন সাংবাদিক আহত, ৬ জন লাঞ্ছিত, ৬ জন হুমকি পেয়েছেন এবং তিনটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা অফিসে হামলা করা হয়েছে।

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে গণহত্যায় উস্কানি দেওয়ায় ৩২ সিনিয়র সাংবাদিক অভিযুক্ত।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর সারাদেশের অধস্তন আদালতে ৩০৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই সময় গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়েছে ১২১ জনকে। বিভিন্ন কারাগারে মারা গেছেন ৮৩ জন।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ৩০২ হিন্দুর ওপর হামলা ও ভাঙচুরে ১ হাজার ৪১৫টি অভিযোগ পেয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। ১ দশমিক ৫২ শতাংশ ঘটেছে সাম্প্রদায়িক কারণে।

এ ছাড়া ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফ ২৪ জনকে হত্যা এবং ২১ জনকে আহত করেছে। নিহত ২৪ বাংলাদেশির মধ্যে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা এবং তিনজনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। অবিলম্বে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে এবং প্রতিটি হত্যা ও নির্যাতনের বিচার করতে সুপারিশ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সহায়তা বন্ধ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন আর্থিক সহায়তা বন্ধের জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। খবর রয়টার্সের।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন ভূমি আইন ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ওয়াশিংটনের মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যার মামলার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাহী আদেশটিতে স্বাক্ষর করেছেন। 

মার্কিন সরকারের সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা বরাদ্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরো পড়ুন:

ইউএসএআইডি কর্মীদের ছুটিতে পাঠাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আদালতে স্থগিত

বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছেন ট্রাম্প

ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ আইনের বিরুদ্ধে এবং এটি সাধারণ মানুষের জন্য হুমকি হতে পারে বলে মনে করেন।

ট্রাম্প প্রমাণ ছাড়াই বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার নাগরিকদের জমি ছিনিয়ে নিচ্ছে এবং ‘কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোকদের’ সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।”

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ধনকুবের ইলন মাস্ক বলেছেন, শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানরা ‘বর্ণবাদী মালিকানা আইনের’ শিকার হচ্ছেন।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ওয়াশিংটন দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ কৃষক ও তাদের পরিবারকে শরণার্থী হিসেবে পুনর্বাসনের জন্য একটি পরিকল্পনাও তৈরি করবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা নতুন আইনকে ‘ভূমি অধিগ্রহণের অস্ত্র’ হিসেবে না দেখে, এটি একটি সাংবিধানিক অধিকার বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এই আইনটি মানুষের মধ্যে ভূমির অধিকার নিয়ে ন্যায্যতা আনার জন্য কাজ করছে।” এই আইনের মাধ্যমে সরকার জমি দখল করতে পারবে, তবে যখন জমি অব্যবহৃত থাকবে এবং মালিকের সঙ্গে আলোচনার পর কোনো সমঝোতা হবে না, তখনই এটি করা হবে।

রামাফোসা আরো বলেন, তার দেশ একতাবদ্ধ থাকবে এবং তারা সংকীর্ণ স্বার্থের বিরোধিতা করবে। তিনি জানিয়ে দেন, তারা কোনোভাবেই ভয় পাবে না এবং নিজেদের অবস্থান থেকে সরবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এই আইনটি তৈরি করেছে যাতে, ঔপনিবেশিক সময় এবং জাতিগত বর্গীকরণের কারণে জমির মালিকানা নিয়ে যে বিরাট সমস্যাগুলো রয়েছে, তা সমাধান করা যায়।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা মামলার বিরুদ্ধেও ওয়াশিংটন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় এবং মানবিক সংকট দেখা দেয়।

ইসরায়েল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালানোর পর আত্মরক্ষায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছিল।

হোয়াইট হাউজ দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার উদাহরণ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। 

ঔপনিবেশিক ও বর্ণবাদী যুগের উত্তরাধিকারের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় জমির মালিকানার প্রশ্নটি রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কৃষ্ণাঙ্গদের তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল এবং সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।

শ্বেতাঙ্গরা এখনও দক্ষিণ আফ্রিকার তিন-চতুর্থাংশ কৃষিজমির মালিক। ২০১৭ সালের সর্বশেষ ভূমি নিরীক্ষা অনুসারে, কৃষ্ণাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানরা দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, কিন্তু তারা মাত্র ৪ শতাংশ জমির মালিক।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারে বিভক্তির গন্ধ পেলে মানুষ গ্রহণ করবে না: মির্জা আব্বাস
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধীদের মশালমিছিল
  • জুলাই গণহত্যার মামলায় দুই পুলিশসহ আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
  • ডিআওয়ামীফিকেশনের উদ্যোগ নিতে হবে
  • বিএনপি মঙ্গলবার থেকে জেলা-মহানগরে সভা-সমাবেশ করবে
  • গণহত্যায় জড়িতদের বিচারে প্রতিটি পুলিশ সদস্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
  • ৬৪ জেলায় জনসভা করবে বিএনপি
  • আগে চব্বিশের গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ
  • ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সহায়তা বন্ধ