কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম নামে যুবদল নেতাকে হত্যাকাণ্ডের পর এক সপ্তাহেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ বলছে, আসামিদের কেউ এলাকায় না থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি। 
এ ঘটনার পর ‘বিচার চাই বিচার চাই, খুনিদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই’ স্লোগান সংবলিত আসামিদের ছবি ও যুবদল নেতা তৌহিদের ছবি দিয়ে নগরীর দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এতে আসামি তানজিল, সাইফুল, খাইরুল ও নাজমুলের ছবি দিয়ে তাদের ফাঁসির দাবি জানানো হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মামলার ছয় আসামি হলেন– আদর্শ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর (পান্ডানগর) গ্রামের সাইফুল ইসলাম, নিহত তৌহিদুলের প্রতিবেশী ইটাল্লা গ্রামের তানজিল উদ্দিন, নাজমুল হাসান টিটু, খাইরুল হাসান মাহফুজ, সাইদুল হাসান সবুজ ও বামইল গ্রামের সোহেল। অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে এতে আসামি করা হয়েছে।
মামলার পর সাতদিন পার হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি অভিযোগ করে তৌহিদের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এদিকে তিন ছেলে নাজমুল, খাইরুল ও সাইদুলকে আসামি করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তাদের বাবা মোক্তল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার তিন সন্তান তৌহিদুলের পরিচিত। তারা তাঁকে হত্যা ও নির্যাতনে জড়িত ছিল না। মামলার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ তিনি এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, মামলার আগেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। এ কারণে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
মামলার এজাহার ও নিহত যুবদল নেতার পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, তৌহিদুলের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধে আসামিদের সঙ্গে এলাকায় একাধিকবার সালিশ হয়েছে। তাঁকে হত্যার হুমকি দেন আসামিরা। গত ৩০ জানুয়ারি রাতে পূর্ববিরোধের জেরে ২০-২৫ জন লোক তৌহিদ ও প্রতিবেশী লুৎফুর রহমানকে আটক করে নিয়ে যায়।
পরের দিন সকালে তারা তৌহিদ ও লুৎফুরকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরে তল্লাশি চালায়। এ সময় লুৎফুরকে ছেড়ে দিলেও তৌহিদকে নিয়ে চলে যায় তারা। পরে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে গোমতী 
বাঁধের ঝাঁকুনিপাড়ায় ফেলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।নিহত তৌহিদ আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি চট্টগ্রামে বেসরকারি শিপিং কোম্পানিতে 
চাকরি করতেন তিনি। গত ২৬ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর বাবা মারা যাওয়ার খবরে তিনি বাড়ি আসেন। ঘটনার দিন তাঁর বাবার কুলখানির আয়োজন হওয়ার কথা ছিল। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি

হাসপাতালে ভর্তি বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ‘আমি বাংলায় গান গাই’খ্যাত এই শিল্পী।

হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শারীরিক অসুস্থতার কারণে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয় প্রতুলকে। তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এরপর স্নায়ু এবং নাক-কান-গলার (ইএনটি) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাকে পরীক্ষা করে দেখেন। প্রতুলের শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয়। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।

ভারতীয় আরেকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রতুল মখোপাধ্যায়ের অন্ত্রের একটি অপারেশনের পরে হার্ট অ্যাটাক হয়। পরবর্তীতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণের শিকার হন। আপাতত ঘোর সঙ্কটে রয়েছেন অশীতিপর গায়ক। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত প্রতুল।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল বিধানসভার অধিবেশন শেষে এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের ফোন করে প্রতুলের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন মমতা। শুধু তা-ই নয়, এই শিল্পীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এবং অরূপ বিশ্বাসকে হাসপাতালে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী।

১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তার বাবা প্রভাতচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। দেশভাগের সময় সপরিবারে ভারতে পাড়ি জমান। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুঁড়ায়। ছোটবেলা থেকেই নিজের লেখা গানে সুর দিতেন। তার অনেক সৃষ্টির মধ্যে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি বিশেষভাবে সমাদৃত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ