বরিশাল নগরীর বর্ধিত এলাকা ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীতে ড্রেজার স্থাপন করে পাইপ টেনে ওই এলাকাতে বালু দিয়ে পুকুর-জলাশয় ভরাটের যেন হিড়িক পড়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিটি করপোরেশনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিচ্ছে স্থানীয়রা। 
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগর এলাকায় গত চার দিন ধরে একটি পুকুর প্রায় ভরাট করে ফেলেছে ‘ছালাম হাউজিং’ প্রকল্প। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা গত রোববার বিকেলে গিয়ে ভরাট বন্ধ করেন। তবে তার আগেই পুকুরটির বেশির ভাগ ভরাট করা হয়ে গেছে। ওই এলাকায় ব্যবহারযোগ্য ওই পুকুরটিই অবশিষ্ট আছে। আশপাশের অনেক পুকুর, জলাশয়ের মতো খ্রিষ্টানপাড়ার এ পুকুরটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবে কিনা তা নিয়ে মানুষ সন্দিহান।
গতকাল সোমবার দুপুরে জিয়ানগর খ্রিষ্টানপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে হাউজিং প্রকল্প গড়া হয়েছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত ছালাম মিয়া হাউজিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বছর দুয়েক আগে মারা গেলে তার ছেলে ওহায়েদুর আনাম তানু পৈতৃক ব্যবসার দেখভাল করেন। ওই এলাকাটি আগে ছিল ফসলি জমি, পুকুর, জলাশয়। ছালাম হাউজিং একটু একটু করে সেগুলো ভরাট করে প্লট করে বিক্রি করছে। 
এখন চোখ পড়েছে খ্রিষ্টানপাড়া থেকে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় যেতে সড়কের পাশের বড় পুকুরটিতে। পুকুরের পশ্চিম প্রান্তে পাইপ স্থাপন করে বালু দিয়ে একাংশ ভরাট করেছে ছালাম হাউজিং। পুকুরের পাশের দোকানি কামাল হোসেন বলেন, গত ২০ বছর ধরে এই দোকানে বসে পুকুরটি দেখছি। স্থানীয়রা গোসল ও গৃহস্থালি কাজে পুকুরটি ব্যবহার করে আসছেন। চেয়ারম্যান ছালাম মিয়ার ছেলে তানু গত ৪ দিন ধরে পাইপ বসিয়ে বালু দিয়ে ভরছেন।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, আগে এটি সরকারি খাস পুকুর ছিল। ৩০-৪০ বছর আগে প্রভাবশালী ছালাম চেয়ারম্যান কাগজপত্র তৈরি করে পুকুরটির মালিক হয়েছেন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, তারা লোক পাঠিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দিয়েছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার পরিদর্শক ইমরান রাজিব জানান, রোববার বেলা ১টার পর গিয়ে দেখেন ছালাম হাউজিং পাইপ বসিয়ে বালু ফেলছে পুকুরটিতে। তিনি তাৎক্ষণিক পাইপ অপসারণ করে ভরাট বন্ধ করেন। ছালাম হাউজিংয়ের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানো হবে। পরিদর্শক বলেন, ছালাম হাউজিং দাবি করেছে এটি নালা জমি ছিল। কিন্তু আমরা বলে এসেছি, সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া ভরাট করা যাবে না।
এসব প্রসঙ্গে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালাম মিয়া হাউজিংয়ের স্বত্বাধিকারী ওয়াহেদুর আনাম তানু বলেন, পুকুর ভরাট হচ্ছে কিনা তা জানা নেই। জেনে এ বিষয়ে জানাবেন। 
তবে ছালাম হাউজিংয়ের কেয়ারটেকার জাকির হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে পাইপ খুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা কাগজপত্র দেখিয়েছি যে এটা নালা জমি। হাউজিংয়ের রাস্তা করার জন্য পুকুরের একাংশ ভরছেন বলে দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছালাম হাউজিংয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের পুকুর, জলাশয় ও বিল ভরাট নতুন কিছু নয়। এলাকায় তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। 
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, তারা ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের লোকসভায় অবৈধ অভিবাসনবিরোধী বিল উত্থাপন

ভারতের লোকসভায় অভিবাসন ও বিদেশি বিল-২০২৫ উত্থাপন করল কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার উত্থাপিত এই বিলে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টির জন্য কঠোর শাস্তি আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করলে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ রুপি অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

বিলে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভারতের অখণ্ডতার জন্য হুমকিস্বরূপ কোনো বিদেশিকে প্রবেশ বা থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা ইমিগ্রেশন অফিসারদের থাকবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের মতো প্রতিষ্ঠানে থাকা বিদেশি নাগরিকদের তথ্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

প্রস্তাবিত এই বিল লঙ্ঘনে কঠোর শাস্তির সুপারিশ করে বলা হয়েছে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ রুপি অর্থদণ্ড করা হবে। জাল কাগজপত্র ব্যবহার করলে দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে এক থেকে ১০ লাখ রুপি অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া, ভারতীয় ভিসার শর্ত লঙ্ঘন বা অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ রুপি জরিমানা করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাল সনদে চাকরির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
  • ভারতের লোকসভায় অবৈধ অভিবাসনবিরোধী বিল উত্থাপন