হাউজিংয়ের থাবায় হারাতে যাচ্ছে আরেকটি পুকুর
Published: 10th, February 2025 GMT
বরিশাল নগরীর বর্ধিত এলাকা ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীতে ড্রেজার স্থাপন করে পাইপ টেনে ওই এলাকাতে বালু দিয়ে পুকুর-জলাশয় ভরাটের যেন হিড়িক পড়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিটি করপোরেশনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিচ্ছে স্থানীয়রা।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগর এলাকায় গত চার দিন ধরে একটি পুকুর প্রায় ভরাট করে ফেলেছে ‘ছালাম হাউজিং’ প্রকল্প। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা গত রোববার বিকেলে গিয়ে ভরাট বন্ধ করেন। তবে তার আগেই পুকুরটির বেশির ভাগ ভরাট করা হয়ে গেছে। ওই এলাকায় ব্যবহারযোগ্য ওই পুকুরটিই অবশিষ্ট আছে। আশপাশের অনেক পুকুর, জলাশয়ের মতো খ্রিষ্টানপাড়ার এ পুকুরটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবে কিনা তা নিয়ে মানুষ সন্দিহান।
গতকাল সোমবার দুপুরে জিয়ানগর খ্রিষ্টানপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে হাউজিং প্রকল্প গড়া হয়েছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত ছালাম মিয়া হাউজিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বছর দুয়েক আগে মারা গেলে তার ছেলে ওহায়েদুর আনাম তানু পৈতৃক ব্যবসার দেখভাল করেন। ওই এলাকাটি আগে ছিল ফসলি জমি, পুকুর, জলাশয়। ছালাম হাউজিং একটু একটু করে সেগুলো ভরাট করে প্লট করে বিক্রি করছে।
এখন চোখ পড়েছে খ্রিষ্টানপাড়া থেকে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় যেতে সড়কের পাশের বড় পুকুরটিতে। পুকুরের পশ্চিম প্রান্তে পাইপ স্থাপন করে বালু দিয়ে একাংশ ভরাট করেছে ছালাম হাউজিং। পুকুরের পাশের দোকানি কামাল হোসেন বলেন, গত ২০ বছর ধরে এই দোকানে বসে পুকুরটি দেখছি। স্থানীয়রা গোসল ও গৃহস্থালি কাজে পুকুরটি ব্যবহার করে আসছেন। চেয়ারম্যান ছালাম মিয়ার ছেলে তানু গত ৪ দিন ধরে পাইপ বসিয়ে বালু দিয়ে ভরছেন।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, আগে এটি সরকারি খাস পুকুর ছিল। ৩০-৪০ বছর আগে প্রভাবশালী ছালাম চেয়ারম্যান কাগজপত্র তৈরি করে পুকুরটির মালিক হয়েছেন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, তারা লোক পাঠিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দিয়েছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার পরিদর্শক ইমরান রাজিব জানান, রোববার বেলা ১টার পর গিয়ে দেখেন ছালাম হাউজিং পাইপ বসিয়ে বালু ফেলছে পুকুরটিতে। তিনি তাৎক্ষণিক পাইপ অপসারণ করে ভরাট বন্ধ করেন। ছালাম হাউজিংয়ের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানো হবে। পরিদর্শক বলেন, ছালাম হাউজিং দাবি করেছে এটি নালা জমি ছিল। কিন্তু আমরা বলে এসেছি, সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া ভরাট করা যাবে না।
এসব প্রসঙ্গে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালাম মিয়া হাউজিংয়ের স্বত্বাধিকারী ওয়াহেদুর আনাম তানু বলেন, পুকুর ভরাট হচ্ছে কিনা তা জানা নেই। জেনে এ বিষয়ে জানাবেন।
তবে ছালাম হাউজিংয়ের কেয়ারটেকার জাকির হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে পাইপ খুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা কাগজপত্র দেখিয়েছি যে এটা নালা জমি। হাউজিংয়ের রাস্তা করার জন্য পুকুরের একাংশ ভরছেন বলে দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছালাম হাউজিংয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের পুকুর, জলাশয় ও বিল ভরাট নতুন কিছু নয়। এলাকায় তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, তারা ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
গণ–অভ্যুত্থানের ৬ মাস: আংশিক সহায়তা পেয়েছে ৮১% শহীদ পরিবার, আহতদের ২৩%
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ৮১ শতাংশ শহীদের পরিবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আংশিক আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। আর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আংশিক সহায়তা পেয়েছে ২৩ শতাংশ। এখনো তিন শতাধিক আহত ব্যক্তি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ও বাড়িতে থাকা আহত ব্যক্তিদের একটি অংশের মধ্যে অসন্তুষ্টি আছে। মাঝেমধ্যেই এই অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে।
রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীরা ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দুই দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরদিন আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন রোগীরা প্রথমে শ্যামলী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং মধ্যরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাড়ির সামনে উপস্থিত হন।
আহত ব্যক্তিদের দাবির মধ্যে ছিল আহত ব্যক্তিদের ইউরোপে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, পুনর্বাসন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, বিনা মূল্যে যাতায়াত সুবিধা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা ব্যবহারের অনুমতি এবং আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল ঢাকায় নির্ধারণ করা।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার শহীদ পরিবারের সদস্যরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় সম্মান–স্বীকৃতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেন।
বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন আহত ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ব্যাপারে সরকারের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত। অজুহাত দেখিয়ে আমাদের কাজগুলো ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ছে।’
* জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ৮৪৪ জন। আহত ১৩ হাজার ২৫৮। * শহীদ পরিবারকে দুই কিস্তিতে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হবে। * আহতদের চার শ্রেণিতে ভাগ করা হচ্ছে। অতিগুরুতররা ভাতা পাবেন।শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তালিকাসহ ডেটাবেজ তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম। এতে প্রত্যেকের জন্য একটি আইডি (পরিচয় শনাক্তকরণ) নম্বর আছে। হাসপাতালের কাগজ, জাতীয় পরিচয়পত্র, স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যয়নের পর শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজ হবে বা হচ্ছে এই তালিকা ধরে।
পুনর্বাসন শুরু হতে বাকিজুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, ৮৪৪ শহীদ পরিবারের মধ্যে ৬৮৬ পরিবারকে অর্থাৎ ৮১ শতাংশ পরিবারকে পাঁচ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, কিছু পরিবারে শহীদের পক্ষে কে টাকা গ্রহণ করবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তাই টাকা দেওয়াও বন্ধ আছে।
এ ছাড়া আহত ১৩ হাজার ২৫৮ জনের মধ্যে ৩ হাজার ২৫ জনকে অর্থাৎ ২৩ শতাংশ আহত ব্যক্তিকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে (এই হিসাব ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত)।
অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহত ও শহীদদের সব ধরনের কাজ পরিচালিত হবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি পৃথক অধিদপ্তর থেকে। এ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, খুব শিগগির অধিদপ্তর কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। অধিদপ্তরকে ২৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকে প্রতিটি শহীদ পরিবার পাবে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। জুলাই মাসে দ্বিতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।
তবে আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজটি এখনো শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান বলেন, আহত ব্যক্তিদের চাকরি দেওয়ার চেয়ে তাঁদের কর্মসংস্থানের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে সরকার। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ছাড়াও বেসরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার আহত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে। তাঁদের কাছ থেকে দুটি তথ্য (শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের অভিজ্ঞতা) ও একটি ছবি চাওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মাত্র ৯০০ জন এ ব্যাপারে সাড়া দিয়েছেন।
অতিগুরুতর আহতরা ভাতা পাবেনওয়েবসাইটে দেওয়া খসড়া হিসাবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সারা দেশে ১৩ হাজার ২৫৮ জন আহত হয়েছেন। তালিকায় থাকা আহত ব্যক্তিরা প্রত্যেকে কোনো না কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে বিনা মূল্যে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিরা উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারলে তাঁদের খরচ সরকার ফেরত দেওয়ার কথা বলেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গণ–অভ্যুত্থানে ৪০০ জন এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৯ জন। এক পা কেটে ফেলতে হয়েছে ২১ জনের। এক হাত ফেলে দিতে হয়েছে সাতজনের।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. সায়েদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের চারটি ভাগে ভাগ করার চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এই চার শ্রেণি হবে এ, বি, সি ও ডি। অতিগুরুতর আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা ১৩৪। গুরুতর আহত ৮০০। এ ছাড়া মোটামুটি আহত তিন হাজার এবং সামান্য আহত সাত হাজার। এই সংখ্যার হেরফের হতে পারে।
যাঁরা পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বা শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে গেছেন তাঁদের অতিগুরুতর (এ শ্রেণি) হিসেবে চিবেচনা করা হচ্ছে। তাঁরা সারা জীবন অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারবেন না। সরকার তাঁদের ভাতা দেবে। গুরুতর আহত ব্যক্তিরা (বি শ্রেণি) নিজে কাজ করে চলতে পারবেন। তাঁদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার। তাঁদের কেউ কাজের উপযুক্ত হয়ে না উঠলে তাঁকেও ভাতা দেওয়া হবে। বাকি আহত ব্যক্তিদেরও প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার।
কেউ টাকা ফেরত পাননিসরকারি হাসপাতালে সবার চিকিৎসা হয়েছে বিনা মূল্যে। কিন্তু জুলাই ও আগস্টে অনেকেই বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। সরকার বলেছে, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তি ব্যয়ের উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারলে চিকিৎসা খরচের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার মো. ইকবাল হোসেন ১৭ জুলাই রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় আহত হন। তিনি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ইকবাল হোসেন জানান, চিকিৎসা বাবদ তাঁর ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। চিকিৎসা ও চিকিৎসা ব্যয়ের কাগজপত্র তিনি জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সেই টাকা এখনো ফেরত পাননি।
বৃহস্পতিবার গণ–অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেলে গিয়ে দেখা যায়, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসা ব্যয় ফেরত চেয়ে সেদিন পর্যন্ত ১৩৫ জন আবেদন করেছেন। ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা জানালেন, সেদিন পর্যন্ত একজনকেও কোনো টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জমা দেওয়া কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করছে বলে জানান তাঁরা।
বিদেশে চিকিৎসা, বিদেশি চিকিৎসকউন্নত চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত ৩০ জন আহত ব্যক্তিকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে পাঠিয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। এ সপ্তাহে একজনের চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় যাওয়ার কথা আছে। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও নেপাল থেকে চিকিৎসক এসে বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের দেখেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন ও অস্ত্রোপচার করেছেন।
সর্বশেষ সিঙ্গাপুর থেকে পাঁচজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ ঢাকায় এসেছিলেন। ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি সরকারি জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও বেসরকারি বাংলাদেশ আই হসপিটালে আহত ২৭৮ জনের চোখ পরীক্ষা করেছেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকেরা বলেছেন, আমাদের চিকিৎসা ঠিক আছে। আটজনের ব্যাপারে তাঁরা বলেছেন, বিদেশে নিলে কিছুটা উন্নতির সম্ভাবনা আছে।’ এই আটজনকে সিঙ্গাপুর পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
বিভিন্ন হাতপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৩০৯ জন আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০৩ জন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত) ৯৮ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৩৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৪৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জন এবং জাতীয় নিউরো সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১ জন। এ ছাড়া সাভারের সিআরপিতে ১৯ জন।