দর বৃদ্ধিতে বি ক্যাটেগরির শেয়ার এগিয়ে
Published: 10th, February 2025 GMT
রোববারের পতনের পর গতকাল সোমবার মিশ্র ধারা দেখা গেছে শেয়ারবাজারে। দর হ্রাস বা বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারের সংখ্যা ছিল প্রায় সমান। এর মধ্যে এ ক্যাটেগরির শেয়ারগুলোর বেশির ভাগ দর হারিয়েছে। বিপরীতে বেশির ভাগ বি ক্যাটেগরির শেয়ারদর বেড়েছে। জেড ক্যাটেগরিতে ছিল মিশ্রধারা। মূল্যসূচক ও টাকার অঙ্কে শেয়ার কেনাবেচা কিছুটা বেড়েছে।
সার্বিক হিসাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ১৬৪টির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ১৪৮টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ৫১টির দর। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৪টির দর কমেছে, অপরিবর্তিত বাকিগুলোর দর।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ ক্যাটেগরিভুক্ত ২১৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৭৭টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৯২টি দর হারিয়েছে। বেশি সংখ্যক শেয়ার দর হারালেও এই ক্যাটেগরির শেয়ারগুলোর গড়ে বাজারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ।
পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, বি ক্যাটেগরিভুক্ত ৮৪ কোম্পানির মধ্যে ৪৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৮টির। এসব শেয়ারের গড় শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জেড ক্যাটেগরিভুক্ত ৯২ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে সমান ৪২টি করে শেয়ারের দর বেড়েছে ও কমেছে। বাকি শেয়ারগুলোর দর অপরিবর্তিত।
সার্বিক মিশ্রধারার মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাজারদর বেড়েছে ২৪ কোম্পানির। এর মধ্যে এ ক্যাটেগরির শেয়ার সাতটি। বি ক্যাটেগরির ৯টি এবং জেড ক্যাটেগরির আটটি। ৯ শতাংশের ওপর দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারগুলো ছিল সোনালি পেপার, পেপার প্রসেসিং, আলহাজ টেক্সটাইল, পাওয়ার গ্রিড, খুলনা প্রিন্টিং, ইনটেক, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার এবং কাট্টলী টেক্সটাইল। বিপরীতে প্রায় ১০ শতাংশ হারে দর হারিয়েছে আইসিবি সোনালি প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড এবং এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স।
খাতওয়ারি শেয়ারের দর ওঠানামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাগজ ও ছাপাখানা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। বস্ত্রসহ অন্যসব খাতে দেখা গেছে মিশ্রধারা। কমেছে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ার।
এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৭৪ পয়েন্টে উঠেছে। আবার টাকার অঙ্কে শেয়ার কেনাবেচা সাড়ে ৪৬ কোটি টাকা বেড়ে ৪২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। সর্বাধিক ১৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে বিচ হ্যাচারির। পরের অবস্থানে থাকা আলহাজ টেক্সটাইলের পৌনে ৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: রদর ব ড় ছ দর ব ড় ছ দর ব দ ধ দর হ র র দর ব ব পর ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটে ৫৩ হাজার কোটি টাকার কাটছাঁট
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারের ব্যয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করে বাজেট সংশোধন করেছে সরকার। ফলে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা থেকে সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। সে অনুযায়ী প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ সরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই বরাদ্দের বিস্তারিত বিভাজন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কাছে সম্প্রতি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এতে সংশোধিত বরাদ্দের অতিরিক্ত কোনো ব্যয় বিল গ্রহণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই আর্থিক সক্ষমতা না থাকার বাস্তবতায় এক লাখ কোটি টাকার বাজেট কাটছাঁট করার আলোচনা ছিল। শেষ পর্যন্ত গত অর্থবছরের মতোই সংশোধিত বাজেটের আকার কমানো হয়। চলতি অর্থবছর মূল বাজেটের চেয়ে সংশোধিত বাজেটের আকার কমেছে ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত বছর যা ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছর মূল বাজেটের আকার কমেছিল মাত্র ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি রোধে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে সরকারি ব্যয়েও সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই সঙ্গে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কাটছাঁট করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে আনাও হয়েছে। তবে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়টি মাথায় রেখে যৌক্তিক জায়গাগুলোতে বরাদ্দ ব্যয় বাড়ানো না হলেও স্বাভাবিক ব্যয় অব্যাহত রাখা হয়েছে। তা ছাড়া সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয়ে সাশ্রয়ী পদক্ষেপ থাকলেও বিগত সরকারের নেওয়া অনিয়ন্ত্রিত ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এ ছাড়া পরিচালন বাজেটে কাটছাঁটের খুব একটা সুযোগ থাকে না। আবার অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ব্যয় বাড়ায় পরিচালন বাজেটে ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি।
বাজেটের মূল দুটি অংশ উন্নয়ন এবং অনুন্নয়ন বা পরিচালন বাজেট। সূত্র জানায়, এবার সংশোধিত বাজেটে কাটছাঁটের প্রায় পুরোটাই কমেছে উন্নয়ন অংশে। যার পরিমাণ ৪৯ হাজার কোটি টাকা। মূল বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বাকি ৪ হাজার কোটি টাকা পরিচালন বাজেট থেকে কমেছে। মূল বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।
এদিকে কাটছাঁটের ভিত্তিতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ সরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পুনর্বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বরাদ্দের বিস্তারিত বিভাজন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কাছে পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগ। সংশোধিত বরাদ্দের অনুলিপিটি সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি অন্যান্য দপ্তরেও পাঠানো হয়। এতে প্রত্যেক খাতের বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ হিসেবে উল্লিখিত অর্থের অতিরিক্ত কোনো ব্যয় বিল গ্রহণ না করার অনুরোধ করা হয়। তবে এ কর্তৃত্ব জারির পর যেসব খাতে অর্থ বিভাগ কর্তৃক অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হবে সেসব অতিরিক্ত বরাদ্দ এই সংশোধিত কর্তৃত্বের অংশ হিসেবে গণ্য হবে।
অর্থ বিভাগ চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছে যে প্রকল্প পরিচালকরা নিজেরাই প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের টাকা খরচ করতে পারবেন এবং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে সংশোধিত অননুমোদিত প্রকল্পসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্পের অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের জারি করা ২০১৮ সালের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
এবার সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৭। প্রতিটি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ নির্ধারণ করা থাকে। সেই বরাদ্দ অনুসারে চার কিস্তিতে অর্থ ছাড় করা হয়। আগে অর্থ বিভাগ ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। কাজে গতি আনার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল প্রকল্প পরিচালকদের। তবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতো। প্রকল্প পরিচালকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ বিভাগ অর্থছাড়ে সংস্থাগুলোকে এখতিয়ার দিয়ে দেয়। এর ধারাবাহিকতা এখনও চলছে। তবে ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শর্ত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার শর্ত মানতে হবে।