Samakal:
2025-04-18@14:55:31 GMT

শিশুরও হতে পারে লুপাস

Published: 10th, February 2025 GMT

শিশুরও হতে পারে লুপাস

রোগটির সংক্ষিপ্ত নাম লুপাস। পুরো নাম সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস (এসএলই)। এটি একটি অটোইমিউন রোগ। এই রোগে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও কোষ আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে কিডনির লুপাস বা লুপাস নেফ্রাইটিস অন্যতম। শতকরা ২০ থেকে ৭৫ শতাংশ লুপাস রোগীর কিডনি আক্রান্ত হতে পারে। বড়দের (৩৪%-৬৭%) ক্ষেত্রে এর প্রচলন বেশি।
কিডনির পাশাপাশি শিশুর স্নায়ুতন্ত্র, রক্তরোগ, চামড়ার ক্ষত, গিড়া, মাংসপেশি, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র এমনকি চুল পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। রোগের প্রভাব এমন যে মানবদেহে যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে।
কাদের বেশি হয়
লুপাস সাধারণত ১১/১২ বছর বয়সে হতে পারে, ৫ বছরের নিচে এই রোগ কম হতে দেখা যায়। এতে নবজাতক শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগে ছেলে বা মেয়ে শিশু উভয়ই আক্রান্ত হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই রোগের হার বেশি।
রোগের কারণ
এই রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। কিছু বিষয় যেমন, বংশগত প্রভাব, পরিবেশগত প্রভাব, ভাইরাসের সংক্রমণ এবং হরমনজনিত প্রভাব রোগের বিস্তার এবং তীব্রতাকে প্রভাবিত করে। মূলত এটি অটোইমিউন  ডিজঅর্ডার। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য যখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তার নিজের কোষ এবং অঙ্গকে আক্রমণ শুরু করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে তখন উল্লিখিত রোগটি ঘটে। 
রোগের উপসর্গ:
এই রোগে আক্রান্ত রোগীর উপসর্গগুলো মৃদু থেকে গুরুতর হতে পারে। 
lদীর্ঘদিন ধরে জ্বর
lপ্রচণ্ড ক্লান্তিবোধ lচুল পড়া  lমুখে ঘা
lরোদে সংবেদনশীলতা
lসারা শরীরে লাল র‌্যাশ, মুখের র‌্যাশের ধরনকে বাটারফ্লাই র‌্যাশ বলা হয়ে থাকে
lওজন কমে যাওয়া 
lপ্রস্রাবের রং পরিবর্তন, তলানি জমা
lশরীর ফুলে যাওয়া lউচ্চ রক্তচাপ
lগিড়া ব্যথা বা ফুলে যাওয়া
lমাথাব্যথা, চোখে দেখতে অসুবিধা lখিচুনি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা
রোগ নির্ণয়:
রোগের লক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্ভব।
lবিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা; lপ্রস্রাব পরীক্ষা
lকিডনির টিস্যু পর্যবেক্ষণ
রোগের চিকিৎসা: 
এই রোগের চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যেতে হবে। এই রোগের কোন স্থায়ী নিরাময় নেই। চিকিৎসার লক্ষ্য হলো এর প্রাবল্য কম করা বা রোধ করা এবং অঙ্গগুলোকে আরও ক্ষতিসাধন থেকে রক্ষা করা। কিডনির টিস্যু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রোগ কোন পর্যায়ে আছে বের করা এবং পর্যায়ক্রমে রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। কিছু ওষুধ সারাজীবন খেয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত, যাতে রোগ জটিলতর বা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে ক্ষতি সাধন না হয়।
শেষ কথা:
লুপাস রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর কিডনি, স্নায়ুতন্ত্রসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে কার্যক্রম কমে যেতে পারে। এ কারণে সময়মতো চিকিৎসা নিলে এ লক্ষণগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে, জীবনের মান উন্নত করে লেখাপড়াসহ অন্যান্য কাজে নিয়জিত রাখা সম্ভপর।
[অধ্যাপক, শিশু বিভাগ 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়,
কনসালট্যান্ট, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার]
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই র গ র

এছাড়াও পড়ুন:

বড় ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু

পাবনার ঈশ্বরদীতে বড় ভাই মনিরুল ইসলাম সরদারের হাতুড়ির আঘাতে ছোট ভাই জিপু সরদারের নিহতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষীকুন্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একদিন পরও এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি।

নিহত জিপু সরদার (৩০) ও আহত মনিরুল ইসলাম সরদার (৩৮) ওই গ্রামের রিকাত আলী সরদারের দুই ছেলে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক বিভিন্ন বিরোধ, বাড়ির সীমানা ও জমিজমা নিয়ে প্রায়ই দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লাগতো। আগের ঝগড়ার জের ধরে বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া বাধে। ঝগড়া থেকে মারামারির এক পর্যায়ে বড় ভাই মনিরুলকে আঘাত করে জিপু, পরে জিপুর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে মনিরুল। এতে দুজনই গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় দুই ভাইকে একই অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহীতে নেওয়ার পথে জিপু মারা যায়।

আহত বড় ভাই মনিরুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত ও আহত দুই ভাইয়ের বাবা রিকাত আলী সরদার বলেন, দুজনই আমার সন্তান। দুজনের মধ্যে আগে থেকেই বনিবনা ছিল না। কিন্তু এভাবে একজন আরেক জনকে হত্যা করবে তা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমি কী করবো তাও ভেবে পাচ্ছি না। এদিকে আহত বড় ভাই মনিরুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালে তার ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত জিপুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম করার পর মরদেহ দাফন করার অনুমতি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি বলে নিশ্চিত করে ওসি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ