চোখ শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ। অথচ চোখের ওপরেই যাবতীয় চাপ। অফিসে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা, ঘন ঘন জুম মিটিং, মোবাইলের অত্যধিক ব্যবহার– সবক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ছে চোখের ওপর। শরীর সুস্থ রাখতে চিকিৎসকরা যেমন শরীরচর্চা করতে বলেন, তেমন চোখের আলাদা করে যত্ন নেওয়াও প্রয়োজন। চোখ ভালো রাখতে কাজের ফাঁকেই চোখের বিশ্রাম নেওয়াও জরুরি। মাঝেমধ্যে চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দেওয়া প্রয়োজন। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে, চোখব্যথা, অনবরত জল পড়ার মতো কিছু সমস্যা মেটাতে ভরসা রাখতে পারেন সহজ কয়েকটি ব্যায়ামের ওপর।
হাতের তালুর ব্যবহার: প্রায় ১০-১৫ মিনিট দুই হাতের তালু একটির সঙ্গে অপরটি ঘষে নিন। ঘর্ষণের ফলে হাতের তালুতে যে তাপ উৎপন্ন হবে, চোখ বন্ধ করে হাত দুটি চোখের ওপরে রাখুন। চাপ দেবেন না। হালকা হাতে তাপ দিন চোখে। দিনে ৩-৪ বার এটি করতে পারেন। চোখ ভালো থাকবে।
ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলা: প্রতি ৩-৪ সেকেন্ড অন্তর চোখের পাতা ফেলা, চোখের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। বিশেষ করে একভাবে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাঝেমধ্যে চোখের এ ব্যায়ামটি করে নেওয়া ভালো। টানা ১ মিনিট ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলাও খুব উপকারী একটি অনুশীলন।
চোখ ঘোরানো: গোল করে চোখের মণি ঘোরানোও চোখ ভালো রাখার জন্য বেশ কার্যকর একটি ব্যায়াম। ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে চারবার করে মণি ঘোরান। তার পর চোখ বন্ধ করে রাখুন ২-৩ সেকেন্ডের মতো। দিনে দু’বার করে এই ব্যায়ামটি করুন। চোখের পেশি ভালো থাকবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে প্রতারণার ফাঁদ
ফরিদপুর সদর উপজেলায় একটি পরিবারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক বছর ধরে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করে প্রবাসীসহ বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে অর্থ ওঠানো হলেও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় কোনো বাস্তব উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। প্রস্তাবিত মাদ্রাসার জন্য এখনও এক ছটাক জমিও কেনা হয়নি, এমনকি কোনো ব্যাংক হিসাব নম্বরও খোলা হয়নি। শুধু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কথা বলে টাকা তোলার একটি কার্যক্রমই দৃশ্যমান!
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা মীর ইন্তাজ আলী ও তাঁর তিন ছেলে মো. ইব্রাহীম আলী, ইয়ামিন আলী ও ইয়াসিন আলী। যে মাদ্রাসার কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানের নাম ‘দারুল কুরআন মীর ইন্তাজ আলী মাদ্রাসা’। সরেজমিন ওই মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইন্তাজ আলীর ভাতিজা মো. মিজানুর রহমান মিজান জানান, প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির নামে ২০২১ সাল থেকে তাদের এই অভিনব প্রতারণা শুরু হয়। মাদ্রাসার কথা বলে এ পর্যন্ত চারটি ওয়াজ মাহফিল করা হয়েছে। মুফতি আমির হামজাও এখানে এসে ওয়াজ করেছেন। প্রতি ওয়াজেই মাহফিলের মাঠ থেকে মাদ্রাসার নামে লাখ লাখ টাকা ওঠানো হয়েছে। এমনকি প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কল্পিত মাদ্রাসার নামে গত কয়েক বছরে প্রায় কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। অথচ ইন্তাজ আলী বা তাঁর ছেলেরা মাদ্রাসার নামে তোলা অর্থের বিষয়ে কারও কাছেই হিসাব দেননি। মাদ্রাসার জন্য এক ছটাক জমিও কেনেননি।
ইন্তাজ আলীর প্রতিবেশী ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ মোল্লা বলেন, ইন্তাজ আলী ও তাঁর ছেলেরা একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসার নাম দিয়ে প্রতিবছর ওয়াজ মাহফিল করেন। তাদের বক্তব্য ছিল, এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করবেন। তারা প্রতিবছর অর্থ সংগ্রহ করেন কিন্তু মাদ্রাসার জন্য কিছু করেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মিলু বলেন, ওই মাদ্রাসার দৃশ্যমান কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। কোনো কিছুই নেই।
অভিযোগ অস্বীকার করে মীর ইন্তাজ আলী বলেন, ইসলামের অগ্রগতির জন্য তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে মাদ্রাসার নামে কোনো অর্থ সংগ্রহ করা হয়নি।
ইন্তাজ আলীর ছেলে ইয়ামিন আলীর ভাষ্য, এটি একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। ইন্তাজ আলীর আরেক ছেলে প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম আলী বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। অর্থ সংগ্রহ ও আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে.এম বাশারুল আলম বাদশা বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওই পরিবার প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তারা নিজেরা কোটিপতি হচ্ছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা না করে আর কোনো ওয়াজ মাহফিল তারা আয়োজন করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, এখনও তাঁর কাছে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।