‘সৃজনে মননে আমরা সুহৃদ’– এ প্রতিপাদ্যে সমকাল সুহৃদ সমাবেশের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন ইউনিটের সুহৃদদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে ‘সুহৃদ আড্ডা’। বছর ঘুরে আবার এসেছে ফেব্রুয়ারি। বাঙালির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ মাসটির পরিচিতি ‘ভাষার মাস’ হিসেবে। এ মাসটিকেই সুহৃদরা বেছে নিয়েছেন আড্ডা-আসরের জন্য। গান, আবৃত্তি, গল্প-আড্ডা আর কথামালায় সাজানো অনলাইন এ আসর ৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। ৮ বিভাগের আট জেলার সুহৃদ প্রতিনিধির পাশাপাশি ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সুহৃদরা অংশ নেন সূচনা পর্বে। সুহৃদ আড্ডা ২০২৫-এর উদ্বোধন করেন সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
তিনি বলেন, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে অনলাইন আড্ডা অত্যন্ত কার্যকর একটি পদক্ষেপ। যানজটসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের মাঝে যে স্থবিরতা নেমে এসেছে তা কাটিয়ে তরুণ মনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে এবং দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সুহৃদদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ভাবের আদান-প্রদানের সময়োপযোগী উদ্যোগ ‘সুহৃদ আড্ডা’। কোনো ভালো উদ্যোগ গ্রহণের পরে তা চলমান রাখা কঠিন, তাই আমি প্রত্যাশা করি সুহৃদরা এ আড্ডা নিয়মিতভাবে আয়োজন করবে; যাতে আমরা পাস্পরিক ভাবের লেনদেন করতে পারি। এই যোগাযোগের ফলে তোমরা নিজের কাজ সম্পর্কে অন্যকে জানাতে ও অন্যের কাজ সম্পর্কে নিজেরা জানতে পারবে। আমরা আমাদের লেখালেখি নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এ আড্ডায় ধারাবাহিকভাবে অধিকসংখ্যক সুহৃদকে যুক্ত করা যেতে পারে। গল্প, কৌতুক, গান, আড্ডায় সুহৃদদের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে। সবাই নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। তোমাদের সেই স্বপ্নকে মেধা ও শ্রম দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।
উদ্বোধনী পর্বে অংশ নেন– সুহৃদ সমাবেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য সচিব ফরিদুল ইসলাম নির্জন, ফরিদপুরের সহসভাপতি শিক্ষক মো.
আবু হেনা মোস্তাফা কামালের ‘একুশের কবিতা’ থেকে আবৃত্তির মধ্য দিয়ে আড্ডা শুরু করেন সঞ্চালক সমকাল সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান। সুহৃদদের মধ্যে পরিচয় পর্ব শেষে সাংগঠনিক আলোচনার পর সুস্মিতা সিনহা বীথি ও জান্নাতুল ফিরদাউস মিমের গানে নতুন উদ্যম পায় আড্ডা। সাইয়ারা আফিয়া ঝুমুরের আবৃত্তি আর প্রশান্ত সরকারের অভিনয় দর্শকের প্রশংসা কুড়ায়। শিক্ষাজীবন থেকে ক্যারিয়ার পর্বে যাত্রার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির পাশাপাশি সংগঠন চর্চার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত থেকে বিভিন্ন ইউনিটের কর্ম পরিকল্পনা সবই আলোচনায় উঠে আসে। সুহৃদদের আগ্রহের ভিত্তিতে পরবর্তী আড্ডা লেখক ও সুহৃদদের প্রকাশিত বই নিয়ে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। v
সুহৃদ ঢাকা
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, হত্যার পর ঝলসানো হয় মুখ
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিখোঁজের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখ ঝলসানো অবস্থায় শিশুটির বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায়। সে ছিল স্থানীয় একটি হেফজখানার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।
স্বজনরা জানান, সোমবার পহেলা বৈশাখ বিকেলে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় শিশুটি। এর পর আর ফেরেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে চাটমোহরের হরিপুর এলাকায় ভুট্টাক্ষেতের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে। এ সময় তার মুখে পোড়া ক্ষতচিহ্ন এবং পরনের প্যান্ট গলায় পেঁচানো ছিল।
পুলিশের ধারণা, ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার পর শিশুটির মুখ ঝলসে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, তার মুখ এসিড দিয়ে পোড়ানো হয়েছে।
চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, শিশুটির স্বজন লাশ দেখে পরিচয় শনাক্ত করেছেন। লাশ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এদিকে ফেনীতে থাইল্যান্ডের নাগরিক এক নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নারীর করা মামলায় মোখসুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে সোমবার গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মোখসুদুর ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ মুসলিম মেম্বার ভূঁইয়াবাড়ির আব্দুর রবের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও থাইল্যান্ডের নাগরিক ওই নারী ২০২০ সাল থেকে হংকংয়ের একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করেন। সেখানেই মোখসুদুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে মোখসুদুর তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে মোখসুদুর বাংলাদেশে চলে এলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। বিয়ের কথা বলা হলে গত বছরের ২২ মার্চ তিনি প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন। একইভাবে মোখসুদুর গত বছরের ১২ অক্টোবর আবার ওই নারীকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে ধর্ষণ করেন।
সবশেষ ১৩ এপ্রিল ওই নারী বাংলাদেশে এসে মোখসুদুরের ফেনীর বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন মোখসুদুর।
ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববারের এ ঘটনায় উলফাত মোল্লা নামে এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী একটি মহল ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনগত পদক্ষেপ না নিতে চাপ দেয় এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার রাতেই অভিযুক্ত উলফাতকে নিয়ে বাজারের সভাপতি কামরুল ইসলাম সাবু ও স্থানীয় মাতবর লাভলু, নাজির, তাইজেল, জাকির, বোরাকসহ ১০-১২ জন বাজারের মধ্যে সালিশ বৈঠকে বসেন। তারা সবার সম্মতিতে উলফাতকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ভুক্তভোগীর চাচা বলেন, ‘ওই বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। ইজ্জত তো চলেই গেছে; টাকা দিয়ে কী হবে?’ এ ব্যাপারে মাতবর নাজিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সালিশ বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, উলফাতকে সোমবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ না করায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন নামে এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত জানুয়ারি মাসে মেয়েটিকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করে মোজাম্মেল। এ ঘটনায় মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে কলমাকান্দা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। এর পর মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় ভাড়া বাসায় আলু তোলার কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে বাবু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বাবুকে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এ তোলা হলে বিচারক নুসরাত শারমিন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাবু উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের শামসুল মোল্লার ছেলে। টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম জানান, ২০ মার্চ ধর্ষণের ঘটনার পর মামলা হলে বাবু পালিয়ে যায়।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)