Samakal:
2025-04-17@14:17:43 GMT

বিজ্ঞানচর্চা কতটা নারীবান্ধব

Published: 10th, February 2025 GMT

বিজ্ঞানচর্চা কতটা নারীবান্ধব

প্রতিবছর ১১ ফেব্রুয়ারি ‘বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েদের আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান দিন দিন বাড়ছে। তবে জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এই জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং। এ ক্ষেত্রে নীতিগত, সামাজিক ও শিক্ষাগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীশিক্ষায় দেশে গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে। প্রাথমিক (৫১.

২১ শতাংশ) ও মাধ্যমিক (৫৫.০৫ শতাংশ) পর্যায়ে ছাত্রীদের উপস্থিতি ছাত্রদের চেয়ে বেশি। তবে টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষা (২৯.৫৩ শতাংশ), উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় (৩৭.৪৭ শতাংশ) নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলক কম (ব্যানবেইস, ২০২৩)। বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) শিক্ষায় তারা পিছিয়ে। বর্তমানে মাত্র ১৪ শতাংশ নারী এসটিইএম শিক্ষায় নিয়োজিত। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্বে এসটিইএম শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত কম। এসটিইএম স্নাতকের মধ্যে নারীর হার মাত্র ৩৫ শতাংশ। ১০ বছর ধরে এ সংখ্যা অপরিবর্তিত! বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি জেন্ডার অ্যাসেসমেন্ট ২০২১-এর রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৯ সালের প্রেক্ষাপটে এসটিইএম পেশাজীবীর মধ্যে মাত্র ১৪ শতাংশ নারী ছিল। দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়ায় এসটিইএমে নারীর অনুপাত বিশ্বে সর্বনিম্ন এবং বাংলাদেশ একেবারে তলানির দিকে। 

এসটিইএম শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গড়ার সময় নারীরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তার সরাসরি ফল আত্মবিশ্বাসের এই ঘাটতি। ইউনিসেফের মতে, মেয়েদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জেন্ডার প্রেক্ষাপট দ্বারা প্রভাবিত। মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা অধিক সংখ্যায় বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী (৭৮টি দেশের মধ্যে ৭২টিতে) অথবা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে পেশাদার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী। এসটিইএমকে একটি পুরুষতান্ত্রিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা এবং মেয়েরা এসটিইএমে কী করতে পারে এবং কী করা উচিত, সে সম্পর্কে সামাজিক রীতিনীতি ও ভ্রান্ত ধারণা  অভিভাবকদের প্রত্যাশাকেও প্রভাবিত করে। এগুলো এসটিইএম সম্পর্কে মেয়েদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে নারীদের উৎসাহিত করতে কার্যকর প্রণোদনার অভাব রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় স্কলারশিপ, মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের অপ্রতুলতা বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের অনেক নারী বিজ্ঞানী ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে নিজ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। যেমন গবেষণায় অবদানের জন্য ২০২৩ সালে ১০০ জন ‘সেরা এবং উজ্জ্বল’ এশিয়ান বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন দুই বাংলাদেশি নারী। তারা হলেন ডা. গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী ও ডা. সেঁজুতি সাহা। এই দু’জন ছাড়াও অনেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদাহরণ স্থাপন করেছেন। এসব সফল নারী বিজ্ঞানীর অভিজ্ঞতা ও অর্জনকে সবার সামনে তুলে ধরলে অনেক মেয়ে তাদের মতো হতে আগ্রহী হবেন। 
সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্প যেমন–‘নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন’, ‘এসটিইএমে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি’ ইতোমধ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, এনজিও এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নারীদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু করেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে রোবোটিক্স, কোডিং ও ডেটা অ্যানালিটিকসে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এসব প্রশিক্ষণ মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলছে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে। 

তবুও নারীদের উল্লেখযোগ্যভাবে গবেষণার সুযোগ বাড়াতে এবং উদ্ভাবনে সম্পৃক্ত করতে বিশেষ অনুদান ও ফান্ডিং প্রোগ্রাম চালু করা প্রয়োজন। দেশের সব নারী যদি তাদের যোগ্যতা অনুসারে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিজ প্রতিভা ও দক্ষতা প্রয়োগ করার সুযোগ পান, তবে তা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তাই এ বিষয়ে দেশের সব পর্যায় থেকে আশু পদক্ষেপ নেওয়া অত্যাবশ্যক। 
 
মো. রমজান আলী: ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার ফর এডুকেশন, ইউনেস্কো, ঢাকা অফিস;
ফাতেমা বেগম পপি: সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগের ঘোষণা

আগে আবেদন করলে আগে ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল, ইপিজেড, বিসিক শিল্পনগরীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ প্রদান করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। গ্যাস পেলেই উৎপাদনে যেতে পারবে এমন শিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই লোডবৃদ্ধি করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। 

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে গ্যাসের সিস্টেম লস হ্রাস সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব নির্দেশনা দেন। 

বিইআরসি নির্ধারিত ট্যারিফে পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলে অগ্রাধিকার এবং পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলের বাইরের বিষয়ে রপ্তানিমুখী শিল্পে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে নতুন পরিপত্র জারিকরার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ফাওজুল কবির খান বলেন, গ্যাসের প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে গ্রাহকের সংযোগ কার্যকর ও নতুন সংযোগের অনুমোদন দিতে হবে। রাজস্ব বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নতুন গ্যাস সংযোগ ও লোডবৃদ্ধির কার্যকর করতে হবে। এতে কি পরিমাণ রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে তার হিসাব নিরূপণ করারও নির্দেশ দেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৩১ মে তারিখের মধ্যে গ্যাস পাইপলাইনের সকল লিকেজ মেরামত নিশ্চিত করতে হবে। 

সভায় উত্থাপিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সিস্টেম লস ৪ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। 
বিইআরসির তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) গ্যাসের সামগ্রিক সিস্টেম লস আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাসের সিস্টেম লস ছিল ৮.৪৩ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে হয়েছে ১৩.৫৩ শতাংশ। বিশ্বজুড়ে ২ শতাংশের নিচে সিস্টেম লসকে আদর্শ বিবেচনা করা হয়। অনেক আগেই বিইআরসি সিস্টেম লস ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪ হাজার ৭০ কিলোমিটার পাইপলাইনে জরিপ পরিচালনা করা হয়। ওই জরিপে ৯ হাজার ৩৮৪টি ছিদ্র পাওয়া গেছে।  একই সময়ে জালালাবাদে ১১৮টি, জিটিসিএল’ এ মাত্র ২টি লিকেজ, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি মাত্র ১১টি, বাখরাবাদে ৩টি, এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসে ১টি ছিদ্র চিহ্নিত ও মেরামত করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চরমোনাই পীরের ভাই ফয়জুলকে বিজয়ী চেয়ে মামলা 
  • কিস্তি ছাড়ের সমঝোতা এখনো হয়নি, তবে আলোচনা চলবে: আইএমএফ
  • স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলে আবার আলোচনায় হিরো আলম
  • গত বছর সোয়া ৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে আইপিডিসি
  • শিল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগের ঘোষণা
  • সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • সুদানে প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ঘোষণা করেছে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফ
  • কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ
  • এবার যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কার কথা জানাল ফেডারেল রিজার্ভ সান ফ্রান্সিসকো
  • বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ট্রাম্প কি সত্য বলছেন, তাঁর চিন্তা কি পশ্চাৎপদ