রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারকে যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তাঁর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত বছরের ২১ নভেম্বর এক আদেশে ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারকে আরবি বিভাগের সভাপতির পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়। একই আদেশে বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক মো.

জাহিদুল ইসলামকে সাময়িকভাবে সভাপতি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর গত ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক সিদ্ধান্তে বলা হয়, আরবি বিভাগের ২২ জন শিক্ষকের মধ্যে ছবিরুল ছাড়া বাকি ২১ শিক্ষক তাঁর (ছবিরুল) একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে অভিযোগ এবং অনাস্থা আনার পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির কার্যক্রম চলাকালে বিভাগের যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে তাঁকে (ছবিরুল) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ওই দুই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন ছবিরুল ইসলাম। আদালতে তাঁর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম মাহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শামীমা সুলতানা।

পরে আইনজীবী এস এম মাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুটি সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়েই রিট করা হয়। ছবিরুল ইসলামকে আরবি বিভাগের যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া আরবি বিভাগের সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া এবং বিভাগের যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির পৃথক সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে’

ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তানভীর আহমেদ আশা প্রকাশ করেছেন, সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির (সিআরইউ) কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।

জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের নিউজগুলো আমি সুশাসন ও নানা অভিযানে কাজে লাগিয়েছি। তাদের তথ্যের মাধ্যমে অনেক অ্যাকশান নিয়েছি। এজন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মিডিয়া উইং থাকে। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কাজে সহযোগিতা করেন।”

আরো পড়ুন:

টেন্ডার জমা ‌নি‌য়ে ২ পক্ষের হাতাহাতি, ‌মারধরে সাংবাদিক আহত

আরএফইডির সভাপতি জেবেল, সম্পাদক রাব্বানী

জেলা প্রশাসক তার কিছু পরিকল্পনার কথাও জানান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার কিছু পরিকল্পনা আছে, এর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্য হ্রাস, ঢাকার বিভিন্ন খাস জমিতে জনতার বাজার হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাজার কন্ট্রোল করা। চাইলেই কোনো সিন্ডিকেট যেন পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। আমরা ঢাকার ২১টা খাল উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বাউনিয়া খালের মাধ্যমে আমরা এ কার্যক্রম শুরু করেছি। সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে এ প্রত্যাশা করছি।”

এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নতুন ভবন করে জায়গা মেনেজমেন্ট করার পরিকল্পনা আছেও বলে জানান তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, “তখন বিশৃঙ্খলভাবে ছড়িয়ে থাকা ভেন্ডার (দলিল লেখক) ও কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য আলাদা বড় পরিসরে অফিস করার পরিকল্পনা আমরা নিব।”

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই আদালত পাড়ায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি বেড়েছে। সে সময় দেখেছি বসার জায়গা না থাকায় সাংবাদিকরা সারাদিন গাছতলায় অতিবাহিত করলেও নিরপেক্ষতার জন্য কখনো আইনজীবীদের থেকে সুবিধা নিতেন না। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোর্টে কি হচ্ছে তা জাতির কাছে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রে বার্তা যায়। ছাত্র আন্দোলনেও সাংবাদিকদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালতে ফ্যাসিস্ট আসামিদের আদালতে আনা হলে সাংবাদিকরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরছেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাদের রুমের স্পেস বড় করাসহ অফিসের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসক দেখবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।”

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, “আদালত পাড়ার নিউজ আপনারা (সাংবাদিক) কাভার করেন। যার যে দলই থাক, সবাই সত্য প্রকাশ করবেন। ঢাকা আইনজীবীদের সঙ্গে আপনাদের সাংবাদিকদের সমন্বয় থাকবে বলে আশা করি। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সংগঠনটি আরো বড় হবে। অফিস রুম যেন আরো বড় হয় সেজন্য আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি আপনাদের পাশে থাকব। ছাত্র-জনতার নতুন বাংলাদেশের যে আশা আকাঙ্ক্ষা তা আপনারা বজায় রাখবেন প্রত্যাশা করছি।”

কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, “হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪ বছর অতিবাহিত করল কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি। প্রথমে ১২ জন দিয়ে শুরু। এখন প্রায় শতাধিক সাংবাদিক এই সংগঠনে। এই সংগঠনে পেশাদার মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই কাজ করেন। সবাই নিরপেক্ষ জায়গা থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা জাতীয় পর্যায়ে অনেক বড় বড় সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি প্রত্যাশা করবো, পেশাদার এই সংগঠনের জায়গার পরিধি বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া ডিসি প্রসিকিউশন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাব, আদালতে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টা দেখবেন।”

সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি হাসিব বিন শহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কোষাধাষ্য আব্দুর রশিদ মোল্লা, পুলিশের অপরাধ ও প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি নাসির উদ্দিন,  বর্তমান সভাপতি লিটন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মামুন খান প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অবসরের আগেও বিচারকদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে
  • ফার্মগেট থেকে সাবেক এমপি আব্দুল মজিদ খান গ্রেফতার
  • ‘সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে’
  • ভয় দেখিয়ে নয়, ভালবাসা দিয়ে জয় করতে হয়
  • ফের ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন
  • ফের ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ মামুন
  • ৮০ শতক জমি নিয়ে ১৮ বছরের টানাপোড়েন
  • বিচারক এজলাসে ওঠেননি, সাইবার ট্রাইব্যুনালে কোনো মামলার শুনানি হয়নি
  • খালেদা জিয়ার ৮ মামলা বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ