রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়ার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন: প্রেস সচিব
Published: 10th, February 2025 GMT
আগামী জাতীয় নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের চাওয়ার উপর নির্ভর করবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘‘এখন যদি সব পার্টি বলে আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই, সেক্ষেত্রে উনিতো (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, এমন নয় যে উনি একটি জায়গায় স্থির আছেন। রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার উপর নির্ভর করবে।’’
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
বৈঠকে বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘‘জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশনের কাজটাই হবে এ বিষয়ে তাড়াতাড়ি কাজ করা। নির্বাচন চলতি ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে হওয়ার ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন।’’
আরো পড়ুন:
‘রাষ্ট্র মেরামতে এখনো সফলতা দেখাতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার’
সহিংসতা-হানাহানি যেন না হয়, সজাগ দৃষ্টি রাখুন: প্রধান উপদেষ্টা
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা হয়নি। জাতীয় নির্বাচন ওনারা দ্রুত চাচ্ছেন, এই ডিসেম্বরেই চাচ্ছেন। আমাদের তরফ থেকে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ দেখবেন, সিদ্ধান্ত হলে জানবেন।’’
বিএনপির পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানবেন।’’
গণহত্যা, দুর্নীতি, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘দেশের বেশিরভাগ মানুষ শান্তির রাজনীতি করতে চান। আমরা চাই সেই পরিবেশটা শুরু হোক। সেই আলোকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশনের প্রথম বৈঠক হবে। সংস্কার কমিশনের ছয়টি প্রতিবেদন নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। প্রথম বৈঠকটি এক সাথে সব দলের সঙ্গে হবে।’’
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘তার দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় জোর দিয়েছেন। অন্যায়-অত্যাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিচার কাজ যাতে দ্রুত হয় সেগুলোর জন্য বলেছেন।’’
আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘হয়রানি’ মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিএনপি আলোচনা করেছে বলে জানান প্রেস সচিব।
অপারেশন ডেভিল হান্টের বিষয়েও দলটি কথা বলেছেন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘তারা বলেছেন এখানে যেন মানবাধিকারের কোন রকমের লঙ্ঘন না হয়। প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকেও বলা হয়েছে কোনভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেওয়া যাবে না। যারা অন্যায়-অবিচারের সঙ্গে যুক্ত, সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে তাদের অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় আনা হচ্ছে। যা গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করা হচ্ছে। কোন রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘন চায় না, হবেও না। গায়েবী মামলার বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে বলে বিএনপিকে বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন।’’
ডেভিল হান্টের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- অভিযানে কোন ধরনের নিরপরাধ, নির্দোষ ব্যক্তি এর ধরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিএনপির তরফ থেকে সংস্কারের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘তারা বলেছে আপনারা সংস্কার করবেন, তা আমরা চাই। আমরা সব কমিশনে প্রস্তাবনা দিয়েছি। আপনাদের সঙ্গে আছি।’’
বিএনপি স্থিতিশীলতার দিকে জোর দিয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তারপর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে, দেশে কোন ধরনের ভাঙচুর দেখছি না। পরিস্থিতি এখন নরমাল। একই সঙ্গে বিএনপি এসব ঘটনায় শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার পেছনে তারই ভূমিকা।’’
সাম্প্রতিক ঘটনায় সরকার দায় এড়াতে পারে না বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই আজ বা কালের মধ্যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমরা দেশের মানুষের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’’
বইমেলায় সব্যসাচীর স্টলে ভাঙচুরের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাংলা একাডেমির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দ্রুত ঘটনা জানাতে বলেছি, কারণ পুরো ঘটনা এখনো জানি না। বইমেলা খুবই পবিত্র জায়গা, তার পবিত্রতা আমরা রাখতে চাই।’’
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড স ম বর ব এনপ র বল ছ ন সরক র র করব
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিবেশীকে মারধর, কারণ জানতে চাওয়ায় যুবদল নেতার রগ কাটল প্রতিপক্ষ
বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিনের দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। বুধবার রাতে শহরের বাসাবাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাঁকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল এবং পরে ঢাকার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা সেলিম ভূঁইয়ার ভাই আজিম ভূঁইয়া ও তাঁর লোকজন শহরের নাগেরবাজার এলাকায় আজিম খান নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। আজিম যুবদল নেতা জসিম উদ্দিনের প্রতিবেশী। পরে রাত ৮টার দিকে বাসাবাটি এলাকার বগা ক্লিনিকের সামনে আজিমের কাছে মারধরের কারণ জানতে চান জসিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিম ও তাঁর লোকজন জসিমের ওপর হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে জসিম স্থানীয় একটি বাড়িতে ঢোকেন। আজিম ও তাঁর লোকজন ওই বাড়ির ফটক ও দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে জসিমকে বেধড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। তাঁর দুই পায়ের রগও কেটে দেয়।
জসিমের মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম পিঞ্জুর বলেন, প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পায়নি জসিম। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। আমরা খুলনা থেকে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর আগে জসিমের ভাগনে রাব্বিকে মারধর ও মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছিল আজিম। সেই মোটরসাইকেল এখনও ফেরত দেয়নি।
প্রথমে মারধরের শিকার আজিম খানের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, আজিম ও তাঁর লোকজন এর আগেও আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিয়েছে। আজিমের সঙ্গে গতকাল কয়েল ফারুক, মাসুদ, মুরাদ, অভি, শাওনসহ ১৫-১৬ জন ছিল। আমরা এ হামলার বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনায় আজিম ভূঁইয়ার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। মাছ ব্যবসায়ী মো. ওসমান বলেন, জসিমকে মারধর করার পর আজিম ও তাঁর লোকজন এসে মাছ ব্যবসায়ী কুটুকে মারধর করেছে। এর আগে আব্দুস সালাম নামে আরেকজন এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারধর করে। আমরা তাদের বিচার চাই।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি মাহমুদ উল হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।