স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই তাদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মোস্তফা সাকের উল্লাহ।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ‘শিবির মিট ব্রিলিয়্যান্স’ অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বিগত ১৬ বছরে আমরা যে ছাত্র রাজনীতি দেখেছি, তা ছাত্র রাজনীতি হলে আমরা সেটা চাই না। ছাত্র রাজনীতি যদি নৈতিকতা, আদর্শিক ও ছাত্রদের কল্যাণকামী হয়, তবে এমন রাজনীতিই আমরা চাই। যে রাজনীতি আদর্শের প্রভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আবু সাঈদের মতো গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দিতে দ্বিধা করবে না।”

তিনি আরো বলেন, “এ ক্যাম্পাসে এমন সাহসী ছিল শহীদ মাসউদ বিন হাবিব, মুজাহিদুল ইসলাম ও মামুন। দুঃখের বিষয় হলো তাদের মৃত্যুতে শিবির ছাড়া কেউ কাঁদেনি। গত ১৬ বছরে এমন ন্যারেটিভ প্রচলিত ছিল, ছাত্রশিবিরকে মারলে মানুষ মারা হত না। আপনারা এ বক্তব্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। চুপ থাকলে আপনিও একদিন আক্রান্ত হবেন। গত সময়ে আমরা তাই দেখেছি। যারাই স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদেরই শেষ করে দেওয়া হয়েছে।”

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন চবি শাখা শিবির। এতে শিবির নিয়ে শিক্ষার্থীদের থেকে আসা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকরা। অনুষ্ঠানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা গেছে।

শাখা সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন চবি শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি রাজিফুল হাসান বাপ্পি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন এআই বিজ্ঞানী মুজিবুর রহমান। এছাড়া ক্রিটিক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সভাপতি মোহাম্মদ আজহার ও চবি ক্লাব অ্যালায়েন্সের সভাপতি মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসাইন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের প্রশ্নগুলে শুনে আশান্বিত হয়েছি যে, আপনারা ছাত্রশিবিরকে জানার চেষ্টা করছেন। আমাদের এ দেশ অনেক জুলুমের শিকার হয়েছে। এ দেশের মানুষ বারবার অন্যায় জুলুম নিপীড়নের মধ্যে দিন কাটিয়েছে। আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এক অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাধীন ছিল। আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, তাদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই সম্ভবনাময় একটি বাংলাদেশ। আমাদের অনেক জনশক্তি রয়েছে যা কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করা যাবে। আমাদের দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের পরিপূর্ণ। এগুলো খুঁজে বের করার দায়িত্ব আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করব। ইসলামী ছাত্রশিবির সেই লক্ষ্যে সৎ, দক্ষ দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরিতে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “পেছনের অতীত ভুলে গিয়ে বিধ্বস্ত এ দেশটাকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার চেষ্টা করাই এখন আমাদের প্রধান কাজ। সেই লক্ষ্যে শুধু শিবির নয়, সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”

অনুষ্ঠানে ১৩ জন চবি শিক্ষার্থীকে লেখক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এই লেখকদের বই চলতি অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি মিশরের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ পাওয়া ১০ জনের অন্যতম চবি শিক্ষার্থী মিফতাহুল আবেদীন আশিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত আম দ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

দুবাই ডার্মায় অংশ নিচ্ছে স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল

বিশ্বের সর্বববৃহৎ ডার্মাটোলজি প্রদর্শনী-দুবাই ডার্মা-২০২৫ এ অংশ নিতে যাচ্ছে মেডিকেটেড স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল। ত্বক সুরক্ষায় ডক্টর রেকমেন্ডেন্ট এই ব্র্যান্ডের পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বব্যাপী। ত্বক ও চর্মরোগবিদ্যার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই আয়োজনে রিমার্ক এলএলসি ইউএসএ এর মেডিকেটেড ব্র্যান্ড হিসেবে অংশ নিচ্ছে সিওডিল।

এবারই প্রথম কোনো বিদেশি ব্র্যান্ডের বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এ ধরনের প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে রিমার্ক। সিওডিলের এই প্রতিনিধিত্ব দক্ষিণ এশিয়ার স্কিনকেয়ার খাতের জন্য একটি মাইলফলক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দুবাই ওয়ার্ল্ড ডার্মাটোলজি অ্যান্ড লেজার কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন (দুবাই ডার্মা) আগামী ১৪-১৬ এপ্রিল দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের আয়োজনে ১১৪টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এবং পৌনে দুই হাজার ব্র্যান্ড অংশ নিচ্ছে। বরাবরের মতো এবারের আয়োজনেও থাকবে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, চর্মরোগ ও কসমেটিকস এবং প্লাস্টিক সার্জারির ক্ষেত্রে নানা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিয়ে কর্মশালা এবং সেমিনার।

এবারের আয়োজনে সিওডিল তাদের পণ্যের প্রদর্শনীসহ ত্বকরোগ ও ত্বক সুরক্ষায় উদ্ভাবিত নতুন পণ্য প্রদর্শন করবে। সিওডিল এর হেড অফ বিজনেস সুকান্ত দাস জানান, এবারের দুবাই ডার্মায় উদ্ভাবনী পণ্যের তালিকায় অন্যতম আকর্ষণ থাকবে সিওডিল। এতে অংশ নিচ্ছেন রিমার্ক এলএলসি ইউএস এর প্রতিনিধি অলগা ইয়াকাভেনকা ও ওলা জ্যাজাক্সকাওক্সা। তাছাড়া বাংলাদেশের সেরা বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্ট ডা. শারমিনা হক, কিউ এম মাহবুবুল্লাহ, ডা. রাশেদ মাহমুদ খান, ডা. ঝুমু খান এবং ডা. জেসমিন মানজুর সিওডিলের আমন্ত্রণে এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা রেকমেন্ডেড এই ব্র্যান্ডটি সর্বস্তরের ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সিওডিলের এই সুদৃঢ় অবস্থানকে বিশ্বব্যাপী আরো ছড়িয়ে দিতেই আমাদের দুবাই ডার্মায় অংশগ্রহণ। গ্লোবাল ব্র্যান্ডের বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণ উৎপাদন খাতে বাংলাদেশের সুনাম আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

তিনি আরো জানান, অ্যাকনি, এজিং, ড্রাইনেস, স্ক্যাল্পের সমস্যাসহ ত্বকের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলপ্রসূ কর্মসূচির মাধ্যমে নিজের ত্বক সম্পর্কে সচেতন হতে সিওডিল তার ভোক্তাদের উৎসাহিত করছে। সিওডিল ছাড়াও রিমার্ক এর অপরাপর ত্বক সুরক্ষা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে হালাল সার্টিফিকেশন প্রাপ্ত পণ্যও বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হবে। আশা করছি মধ্যপ্রাচ্যসহ হালাল কসমেটিকস এর বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করতে পারবো আমরা।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে সিওডিল মেডিকেল খাতের অন্যতম প্রভাবশালী ‘ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব অ্যাডভান্স রিসার্চ অ্যান্ড রিভিউস’ এ প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে নিরাপদ স্কিনকেয়ার পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আশা করছি এ মেলায় গ্লোবাল মার্কেটে সিওডিল কাঙ্খিত রফতানি আদেশ পাবে।”

অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি) এর জেনারেল সেক্রেটারী জামাল উদ্দীন বলেন, উদ্ভাবনী দক্ষতা, সাশ্রয়ী মূল্য ও গুণগত মানের উপর জোর দিয়ে রিমার্ক এইচবি লিমিটেড বাংলাদেশের স্কিনকেয়ার শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রিমার্কের নিবিড় গবেষণা ও অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে সিওডিল ডাক্তার ও রোগী, উভয়ের চাহিদা মেটাতে কার্যকরি ও নিরাপদ স্কিনকেয়ার সমাধান দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে একদিকে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় উৎপাদনের দিকে ঝুঁকে প্রতিষ্ঠানটি যেমন পণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেছে, তেমনি বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করেছে। তাই এখন থেকে আমাদের বিদেশি নকল, ভেজাল ও মেয়াদোর্ত্তীণ পণ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। কারণ এখন আমাদের দেশেই বিশ্বমানের সেরা পণ্য তৈরি হচ্ছে।”

রিমার্কের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রকিবুল ইসলাম বলেন, “সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ রিমার্ক এইচবির উৎপাদন প্রক্রিয়া সিজিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস সার্টিফিকেট) এবং আইএসও স্বীকৃত যা নিশ্চিত করে যেসব পণ্য সর্বোচ্চ গুণগত ও নিরাপত্তা মানদণ্ড অনুসারে তৈরি করা হয়। এই উৎকর্ষতার প্রতিশ্রুতি রিমার্ক এইচবি লিমিটেডকে বাংলাদেশের স্কিনকেয়ার শিল্পে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি ত্বক বিশেষজ্ঞদেরকে অ্যাকনি, অতিরিক্ত মেলানিন (হাইপারপিগমেন্টেশন) এবং আর্দ্রতার অভাবসহ বিভিন্ন ত্বকের সমস্যার জন্য বিশ্বাসযোগ্য, গবেষণাভিত্তিক সমাধান প্রদান করে থাকে।”

লাখো ভোক্তার আস্থা অর্জন করে রিমার্ক এইচবি দক্ষিণ এশিয়ায় মেডিকেটেড স্কিনকেয়ার পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। গুণগত মান, সাশ্রয়ী মূল্য ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এই শিল্পে একটি নতুন সংজ্ঞা রচনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ত্বকের নানান সমস্যার সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছে রিমার্কের মেডিকেটেড স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল। ইতোমধ্যে সিওডিল এর পণ্য যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ