প্রসাধন পণ্য তথা কসমেটিকস, স্কিন কেয়ার ও পারসোনাল কেয়ার খাত নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য ৩০ গণমাধ্যমকর্মী ‘লিলি মিডিয়া ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ শীর্ষক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রিন্ট, অনলাইন ও টেলিভিশন—তিন ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে সেরা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিন সাংবাদিক।

পুরস্কারপ্রাপ্ত সেরা তিন সাংবাদিক হলেন প্রিন্ট মিডিয়া শ্রেণিতে দৈনিক সমকালের জসিম উদ্দিন বাদল, অনলাইন শ্রেণিতে জাগো নিউজ ২৪ ডটকটমের ডিএম নাজমুল হোসাইন ও টেলিভিশন শ্রেণিতে আরটিভির সেলিম মালিক।

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে প্রাইজমানি, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। এতে অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের (এএসবিএমইবি) সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল জলিল ও ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার শিল্প খাতের পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি) এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) যৌথ আয়োজনে এই ফেলোশিপ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

ফেলোশিপে প্রিন্ট, অনলাইন ও টেলিভিশন শ্রেণিতে মোট ৩০ সাংবাদিক অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী ফেলোরা সরেজমিনে তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে নিজ নিজ গণমাধ্যমে এই খাতের সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় নিয়ে প্রতিবেদন করেন।

ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, বাজারে ভেজাল পণ্য রোধ ও ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম। সাংবাদিকেরা তাঁদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পণ্য নিয়ে অসঙ্গতির তথ্য তুলে ধরলে ডিএনসিআরপি দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর চ ল গণম ধ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিমা মাত্র

বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।

একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)

আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫

এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।

লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’

ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’

এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’

আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)

মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।

আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।

আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ