বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরে অভিযুক্ত যুবদল নেতার পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন
Published: 10th, February 2025 GMT
বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবদল নেতা ও তাঁর ভাইয়ের পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ও বিকেলে শহরের শেরপুর সড়কের কানুছগাড়ি এলাকায় এসব মানববন্ধন হয়।
দুপুরে কানুছগাড়ি এলাকার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধনে কানুছগাড়ি বণিক সমিতির সাবেক উপদেষ্টা জোবায়ের হাসান বলেন, দেড় বছর আগে কানুছগাড়ি বণিক সমিতির কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গঠনের বিষয়ে বুধবার সভা আহ্বান করা হয়। এ জন্য গতকাল রোববার বিকেলে ব্যবসায়ীদের জানিয়ে সবার দোকানে চিঠি দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর জেলা যুবদলের সদস্য কামরুল হাসান ওরফে ঝিনুক ও তাঁর বড় ভাই জিলহজ্জ উদ্দিন ওরফে কাঞ্চন ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবুল কালামের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং তাঁকে মারধর করেন।
জোবায়ের হাসান অভিযোগ করেন, যুবদল নেতা কামরুলের বড় ভাই জিলহজ্জ উদ্দিন কানুছগাড়ি বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে না জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বুধবার বণিক সমিতির সভা আহ্বান করায় তাঁর ওপর চড়াও হন এই দুই ভাই। কামরুল ও জিলহজ্জ এর আগেও একাধিকবার ব্যবসায়ীদের মারধর করেছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুল হাসান বলেন, ‘আমাকে বিতর্কিত করতে জোবায়ের হাসান চক্রান্ত করছেন। আমার বড় ভাই কানুছগাড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে না জানিয়ে জোবায়ের হাসান ও আবুল কালাম আজাদ বণিক সমিতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে আবুল কালাম আজাদের দোকানে যান আমার বড় ভাই। সে সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। অথচ আমাকে জড়িয়ে মানববন্ধন করা হয়।’
আজ বিকেল পাঁচটার দিকে যুবদল নেতা কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে চক্রান্তের প্রতিবাদে শেরপুর রোডের কানুছগাড়ি এলাকায় মানববন্ধন করা হয়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়াও এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বগুড়া শহরের বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, মারধরের ঘটনায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য পুলিশ সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য বদল ন ত র বড় ভ ই ব যবস য় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন: টার্গেট চাঁদাবাজি
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নামে-বেনামের সংগঠন ও অধিকার আন্দোলন ব্যানারে চলছে সভা-সেমিনার ও মানববন্ধন। খোলা চোখে তাদের পেছনের উদ্দেশ্য পরিষ্কার বোঝা না গেলেও মূলত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেই এসব আন্দোলন বা সভা সেমিনার হচ্ছে। তাদের টার্গেটে পড়ে কেউ হচ্ছেন সর্বস্বান্ত; আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী বা কোম্পানির সুনাম প্রশ্নের মুখে ফেলে আদায় হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। ‘অধিকার আদায়ের’ নামে বিভিন্ন ব্যানার ব্যবহার হচ্ছে হরদম। এ ধরনের ডজনখানেক প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
`ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’ এমনই এক ভুঁইফোড় সংগঠন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি চিঠি বিলি করা হয়। তাতে বলা হয়, ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হবে। তবে মজার বিষয় হলো চিঠির তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ থাকলেও গণমাধ্যমে পাঠানো হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রেরকের ঠিকানা না থাকলেও বাইপাল, আশুলিয়া, সাভারের ঠিকানায় চিঠি ছেড়েছে এই নামসর্বস্ব সংগঠন।
বিষয়টি জানতে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন প্রেরকের সঙ্গে। তিনি জানান, তাকে ওপর থেকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন। প্রশ্ন করা হয়, “আপনি চিঠির তারিখ উল্লেখ করেছেন ১০ ফেব্রুয়ারি, তাহলে ৮ ফেব্রুয়ারি অগ্রিম তারিখ দিয়ে কীভাবে স্বাক্ষর করলেন?”
জবাবে জাহাঙ্গীর আলম রাজীব নামের এই চিঠি প্রেরক বলেন, তাকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন, আর কিছু জানেন না।
যে সংগঠনের ব্যানারে চিঠি পাঠিয়েছেন, সেটির নিবন্ধন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না নেই।” তবে তাকে এই চিঠি পাঠানোর জন্য ঢাকা থেকে জনৈক এক ব্যক্তি পরামর্শ দিয়েছেন, তাই তিনি স্বাক্ষর করে সেটি পাঠিয়েছেন বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম রাজীব।
শুধু একটি বা দুটি নয়, জানা গেছে এমন ডজনখানেক সংগঠনের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দারা। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজির স্বার্থে এসব সংগঠনের নাম ব্যবহার করে থাকে।
জাহাঙ্গীর আলম রাজীবের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি গত এক দশক ধরে সাভারের বাইপালে স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বেক্সিমকো গ্রুপে কাজ করতেন। মূলত বেক্সিমকো গ্রুপের অর্থায়নে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন যুবলীগের এই কর্মী।
বাইপালের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল চৌধুরী। ৫ আগস্টের পর তিনি এখন অধিকার আন্দোলনের নেতা বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে লোক জড়ো করে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের নামে শিল্পকারখানায় অস্থিরতার নেপেথ্যওে একই ধরনরে ভুঁইফোড় সংগঠন জড়িত বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।