ইসলাম উদ্দিনের কিচ্ছার রাত শেষ হলো ‘দেওরা’ দিয়ে
Published: 10th, February 2025 GMT
ভৈরবে অনুষ্ঠিত হলো সপ্তম ভৈরব পিঠা উৎসব। গতকাল রোববার ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন। পালা ছাড়াও উৎসবে লাঠিখেলা, পুতুল নাচ, আঞ্চলিক ভাষায় আবৃত্তি, নৃত্য, পুঁথিপাঠ, যন্ত্রসংগীতের মেলবন্ধন, মঞ্চনাটক, বাউলগানসহ বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক উঠে এসেছিল। উৎসব ঘুরে এসে লিখেছেন নাজমুল হক।
মাঘের সন্ধ্যা, সরকারি কাদির বকস পাইলট মডেল হাইস্কুল মাঠে তখন তিলধারণের জায়গা নেই। ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালা দেখতে এদিন হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এর মধ্যে কারও কারও পালা দেখার অভিজ্ঞতা থাকলেও বেশির ভাগই দর্শকই প্রথমবারের মতো সামনে থেকে দেখতে এসেছেন পালা। আবার তরুণদের অনেকেই এসেছিলেন ইসলাম উদ্দিনের কণ্ঠে ‘দেওরা’ গান শুনতে। রাত সাড়ে নয়টায় মঞ্চে এসে টানা দুই ঘণ্টা ‘কমলা রানির সাগর দিঘির পালা’র অংশবিশেষ শোনান ইসলাম উদ্দিন পালাকার। পালা শেষে ‘দেওরা’ ও ‘বিয়ে কেন হলো না’ গান গেয়ে মঞ্চ থেকে বিদায় নেন তিনি।
এদিন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনেতা কচি খন্দকার ও অভিনেতা আবদুল্লাহ আল সেন্টু। পালা শেষে প্রতিক্রিয়ায় কচি খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসলাম উদ্দিনের অনেক নাম শুনেছি, আজ প্রথম সামনে থেকে তাঁর পালা শুনলাম। তিনি অসম্ভব গুণী একজন শিল্পী, মুগ্ধ হয়ে পালা শেষ করলাম। পালা শেষে তাঁর গানে, তরুণদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখলাম, তা অনেক দিন মনে থাকবে।’
আলোচনা পর্ব.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শাল-গজারি বনে রং ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে বসন্ত
প্রকৃতি থেকে বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। আসছে গ্রীষ্ম। বসন্তের বিদায়বেলায় বিস্তৃত সবুজ শাল-গজারি বনে বাসন্তী রং ছড়াচ্ছে হলদে শাল-গজারি ফুল। গাজীপুরের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে এখন বসন্তের এই রং উৎসব চলছে। বিশেষ করে শ্রীপুর, গাজীপুর সদরের একাংশ, কাপাসিয়ার একাংশ ও কালিয়াকৈর উপজেলার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে চলছে এই রঙের উৎসব।
শ্রীপুরের কর্ণপুর থেকে বরমী কিংবা হায়াতখার চালা থেকে গোসিংগা আঞ্চলিক সড়কের মতো অনেকগুলো সড়ক ভ্রমণ এখন যে কাউকে এক ব্যতিক্রমী বসন্তের অভিজ্ঞতা দেবে। বিশেষ করে এ সময় মাওনা থেকে কালিয়াকৈর উপজেলায় যাতায়াতের সড়কপথের পুরোটাই ফুলে ছেয়ে থাকে। এসব সড়কে ভ্রমণ করলে দেখা যায়, দুই পাশে শুকনা পাতার ওপর ছড়িয়ে আছে কাঁচা হলুদ রঙের শাল-গজারি ফুল। সঙ্গে আছে মোহনীয় গন্ধ।
শাল-গজারি বনের কোনো একটি গাছের মাথায় উঠে চারদিকে তাকালে মনে হবে, বনের গাছপালার ওপর কেউ যেন হলুদ রঙের মাদুর বিছিয়ে রেখেছে। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছিসহ নানা কীটপতঙ্গ। পাখিদের ওড়াউড়িতে বনজুড়ে যেন এক মহোৎসব চলছে। পাখির ডানা ঝাপটানো কিংবা হঠাৎ একটু দমকা বাতাসে গাছ থেকে নিচে ঝরে পড়ে হলুদ শাল-গজারি ফুল। বসন্তে গাছের সব পাতা ঝরে যাওয়ার পর গাছে থাকা হলুদ ফুলগুলো এক অনন্য সৌন্দর্য ছড়ায়।
প্রতিবছর বসন্তের মাঝামাঝি থেকে শাল-গজারিগাছে ফুল ফুটতে শুরু করে। এরপর গাছ থেকে অপরিণত অবস্থায় বেশির ভাগ ফুল নিচে ঝরে পড়ে। থেকে যাওয়া ফুলগুলো বড় হয়। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব ফুল পরিণত হয়ে যায়। তখন এর রং হয় কিছুটা বাদামি।
পরিণত ফুলের আবার অন্য রকম সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য আছে। এসব ফুলের এক পাশে থাকে বীজ। আর অন্য পাশে ফুলের পাপড়ির মতো ছড়ানো বড় বড় পাতলা পাপড়ি। একসময় গাছ থেকে বীজসহ এসব ফুল ঝরে পড়ে। তখন বীজের এক পাশে থাকা পাপড়ির মতো অংশ বাতাসে ঘুরতে ঘুরতে এলোমেলোভাবে দূরদূরান্তে বীজগুলোকে ছড়িয়ে দেয়।
বসন্তের এ সময় শাল-গজারি বনে বিভিন্ন ফুল ফোটে। এগুলোর মধ্যে আছে কনকচাঁপা, জারুল, শিমুল, শেফালি, শিরীষ, মান্দার, কামিনী, অতসী, দাঁতরাঙা, কাঞ্চন, বেলি, শটি, রঙ্গনসহ নানা ফুল।
শাল-গজারি বনের বর্ণিল বিভা বসন্তের সৌন্দর্যে যোগ করে নতুন মাত্রা