প্রায় দুই বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে উঠে যাচ্ছে বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ দেবতাখুম ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা। পর্যটকেরা আগের নিয়মে রোয়াংছড়ি থানায় নিজেদের পরিচয় লিপিবদ্ধ করে দেবতাখুম ঘুরে আসতে পারবেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাসক শামীম আরা এ কথা জানিয়েছেন।

দেবতাখুম পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলার দুর্গমে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তৎপরতার কারণে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। এই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৮ অক্টোবর জেলায় পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত ৬ নভেম্বর জেলার চারটি উপজেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় বহাল রাখা হয়।

দেবতাখুম থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বহুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। পর্যটনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেবতাখুম পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। পর্যটকদের আগের নিয়ম অনুযায়ী রোয়াংছড়ি থানায় নাম-পরিচয়, মুঠোফোন নম্বর লিপিবদ্ধ করে প্রশাসনের নিবন্ধিত টুরিস্ট গাইড সঙ্গে নিয়ে দেবতাখুমে যেতে হবে। এ বিষয়ে টুরিস্ট গাইড সমিতিকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে রোয়াংছড়ির শুধু দেবতাখুমে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান। তিনি বলেন, দেবতাখুমে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল থাকবে। এ জন্য নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বস্তরের মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দেবতাখুম থেকে পর্যটক ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। আজ রাতে অথবা আগামীকাল সকালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ রমণ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন, খুন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার সমাবেশ, মানববন্ধন ও মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এনজিসিএএফ)। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার। সম্মাননা পাওয়া দুই কৃতী নারী হলেন– লেখক, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা এবং লেখক, সংগঠক ও মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান। 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির মাধ্যমে নারীর নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিতের জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি। গতকাল এক বিবৃতিতে কমিটির চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম ও আহ্বায়ক ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ দাবি জানান। 
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে পাহাড় ও সমতলে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ‘ঢাকাস্থ আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ’। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়। বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে এক আদিবাসী নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে এ আয়োজন করে সংগঠনটি। 

শিশু ধর্ষণের দ্রুত বিচার, মাগুরা মেডিকেল কলেজ বাতিলের পাঁয়তারা বন্ধ করা, মব ভায়োলেন্স বন্ধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার দাবিতে মাগুরায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল গণকমিটি মাগুরা জেলার উদ্যোগে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, নারী উন্নয়ন ফোরাম ও স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতি। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও পথসভা করেছে গুরুদাসপুর যুব ব্লাড ডোনার অ্যাসোসিয়েশন। 

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নিপীড়ন ও খুনের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মানববন্ধন করেছে সোনারগাঁ নাগরিক সমাজ নামে একটি সামাজিক সংগঠন।

নোয়াখালীতে মানববন্ধন-সমাবেশ থেকে ধর্ষণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়ন সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে এই দাবি জানানো হয়। কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সকালে উপজেলার মুক্তিযুদ্ধ চত্বরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকাল প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ন্যায়বিচারই এই নিষ্ঠুরতার একমাত্র জবাব
  • নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ–সমাবেশ
  • রণধীর জয়সোয়ালের মন্তব্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল
  • বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের মন্তব্য অযাথিত
  • রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ১৯৭
  • আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কতটা প্রস্তুত
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন নিয়ে এখনো সংশয়ে বিএনপি
  • ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত
  • নিরাপত্তারক্ষীদেরই জীবনের নিরাপত্তা নেই: জিএম কাদের
  • ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেংয়ের অবহেলিত জন্মস্থান এখন জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র