সুন্দরবনে বাঘের মুখ থেকে জীবিত উদ্ধারের লোমহর্ষক ঘটনা
Published: 10th, February 2025 GMT
সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের টাইগার রিজার্ভ এলাকায় এক বনকর্মী বাঘের মুখে থেকে বেঁচে ফিরেছেন। একেবারে হামলে পড়ে লোকটির শরীর খাবলে নিচ্ছিল বাঘটি। তবে শেষরক্ষা হলেও সেই ঘটনা নিয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়।
সোমবারেরই (১০ ফেব্রুয়ারি) ঘটনা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদে সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রামে বাঘের হামলার এই ঘটনা ঘটে। অবশ্য তখন বনকর্মীদের ক্যামেরা চালু ছিল।
ফুটেজে দেখা যায়, বনকর্মীরা সংখ্যায় ৮ থেকে ১০ জন ছিলেন। তাদের গায়ে ছিল কালো টি-শার্ট। এসময় হঠাৎ করে বাঘটি তাদের দিকে আসার পরই চিৎকার শোনা যায়। ওই সময়ে বাঘটি বনকর্মীদের একজনের ওপর হামলে পড়ে।
আরো পড়ুন:
হরিণের মাংস জব্দ, শিকারি চক্রের ৩ সদস্য শনাক্ত
সুন্দরবনে কাকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা
তখন অন্যারা বাঘটিকে পিটিয়ে তাদের সহকর্মীকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বাঘটি বনকর্মীকে ছেড়ে বনের গহীনে দৌড়ে চলে যায়।
বাঘের হামলায় আহত বনকর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) নিশা গোশ্বামী বলেন, স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, ওই বনকর্মীর শরীরে বাঘের কাঁমড়ের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
সোমবার সকালে মৈপীঠ কোস্টাল থানার নগেনাবাদ এলাকায় একটি বাগানে লুকিয়ে থাকতে দেখা যায় বাঘটিকে। সেই মতো তাকে তাড়াতে যায় বনকর্মীদের একটি দল। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারাও। তখনই বাঘটি ওই বনকর্মীকে প্রথমে থাবা মারে এবং তার হাতে কামড় বসায়। সোমবার সকালে লোকালয়ে চলে এসে সুন্দরবনের বাঘ। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটি ঘাটের কাছে রবিবার বিকালে স্থানীয় রাজকুমার সাফুঁই নামে এক যুবক বসেছিলেন। ঠিক তখনই তার নজরে আসে যে জেটিঘাট-সংলগ্ন শ্মশান ঘাটের কাছে একটি বাঘ ঘোরাঘুরি করছে। সে অবস্থায় বাঘ বাঘ চিৎকার করে ওই যুবক সাইকেল ফেলে দৌড়ে বাড়িতে চলে যান।
মূহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বাঘ ঢোকার খবর। এরপর ওই যুবকের কাকা শম্ভু সাফুঁই লাঠি সোটাসহ এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভের ঝোঁপঝাড়ের মধ্যে এসে দেখেন বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ। যদিও বাঘ তাদের নজরে আসেনি। ততক্ষণে বাঘটি লোকজনের ঝোঁপঝাড়ে মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম থেকে সেই বাঘ ঢোকার খবর জানানো হয় বনদপ্তরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত নলগোড়া বিট অফিসে। সেই সঙ্গে জানানো হয় স্থানীয় মৈপীঠ উপকূল থানায়। বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে দ্রুত নৌকায় জাল নিয়ে পৌঁছান বনকর্মীরা।
জেটি ঘাটে চলে আসেন পুলিশ কর্মীরাও। এরপর যাতে বাঘটি কোনোভাবে রাতে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়তে না পারে, সে জন্যই গ্রামের দিক বরাবর নাইলনের জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়। যদিও বাঘটি গ্রামের দিকে জালের কাছে চলে এসেছিল বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বাঘটি আবার রাতের অন্ধকারে নিজের জঙ্গলে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য জঙ্গলের দিকটা যেমন খুলে রাখা হয়েছিল, তেমনি গ্রামের দিকে নদী বাঁধের ওপর রাতে প্রহরার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকাল হলে আবার গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে বাঘের অবস্থান জানার কাজ শুরু করে বনকর্মীরা। আর তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
ঢাকা/কংসবিনক/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন স ন দরবন কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে বিএনপির প্রতিনিধি দল যমুনায়
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেছে বিএনপির প্রতিনিধিদল।
বৈঠক ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। আজ বুধবার বেলা ১২টা ২৩ মিনিটের দিকে তিনি প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নিচ্ছে।
এর আগে আজ বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে সোয়া বারোটা মধ্যে আলাদা আলাদাভাবে বিএনপির প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা যমুনায় প্রবেশ করেন।
বেলা সাড়ে এগারোটায় যমুনায় পৌঁছান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। পরে সেখানে আসেন দলটির স্থায়ী কমিটির আরক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এরপর তাঁরা যমুনায় প্রবেশ করেন। বেলা পৌনে বারোটায় যমুনায় প্রবেশ করেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান। এরপর উপস্থিত হন দলটির নেতা জমির উদ্দিন সরকার।
বেলা বারোটায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ একসঙ্গে যমুনায় প্রবেশ করেন। সবশেষ আসেন দলটির নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আরও পড়ুনশুধু নির্বাচন নয়, আরও অনেক বিষয়ে কথা বলবে বিএনপি ৬ ঘণ্টা আগেএছাড়া সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার গাড়ি যমুনায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে দলটির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্ট করে জানতে চাইবেন কবে নাগাদ নির্বাচন হবে এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা কবে ঘোষণা করা হবে। উপদেষ্টার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পারলে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের নিয়ে আবার মাঠের কর্মসূচিতে যেতে পারে।