ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে পাশের রাষ্ট্রকে (ভারত) খুশি করেছে। তারা গোপনে সব চুক্তি করেছে। ট্রানজিটের নামে করিডর দেওয়া হয়েছে। তাদের সুবিধার জন্য সবকিছু করা হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করে অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ইসলামী আন্দোলনের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মো.

হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান, বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, সহসভাপতি মো. সেলিম মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মো. আবদুল হাকিম, কলাপাড়া উপজেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি জেড এম কাওসার, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফ, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন খান প্রমুখ।

সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা ন্যায্য দাবি আদায়ে যখন আওয়াজ তুলেছিল, তখন কেউ সাহস করে পাশে দাঁড়ায়নি। আমার নেতৃত্বে একমাত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে সর্বপ্রথম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্যানার নিয়ে ছাত্রদের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘বিগত সরকার পাঠ্যবইয়ে নাস্তিকের থিওরি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আমরা সব সময় এসবের প্রতিবাদ করেছি। আমরা যখন শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠে-ময়দানে কাজ করেছি, তখন আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ইসলামের সুফল কী তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার এখন সময় এসেছে।’ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের একত্র হয়ে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কল প ড় ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণের ভারে রুগ্ন তিন–চতুর্থাংশ হিমাগার 

সব খরচ হিসাবে করে চলতি বছর যৌক্তিকভাবে হিমাগারের ভাড়া আট টাকা করা হয়েছে। বর্তমান উচ্চ ঋণের সুদহার, বিদ্যুৎবিল, মজুরিসহ অন্যান্য খরচ যেভাবে বেড়েছে তাতে ভাড়া কমানোর সুযোগ নেই। তবে সরকার ঋণের সুদহার ও বিদ্যুত বিল কমানোসহ কিছু সহায়তা দিলে ভাড়া কমানো সম্ভব। 

শনিবার রাজধানীর পুরানো পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)। সংগঠনটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বিসিএসএর সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী। এ সময় সংগঠনটির জেষ্ঠ্য সহসভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।  

সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা আজাদ চৌধুরী জানান, সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ৪০০ হিমাগার রয়েছে। ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য পরিচালনা ব্যয় বহন করতে না পেরে এর মধ্যে তিন–চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৩০০ এর মতো হিমাগার রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে কিছু হিমাগার ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। 

গত এক বছরে সুদ হার ১৫ শতাংশ ও অস্বাভাবিক হারে বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ছাড়া হিমাগারে আলু আনা–নেওয়া (লোডিং-আনলোডিং), কর্মীদের বেতনভাতাসহ আনুষঙ্গিক সব খরচই বেড়েছে। এসব ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে এ বছর আলু সংরক্ষণে কেজিপ্রতি ভাড়া দাঁড়ায় ৯ টাকা ৬২ পয়সা। তবে আলু চাষী ও আলু সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ীদের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সমিতি। এই ভাড়া যৌক্তিক কি না তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যাচাই করতে পারে। 

মোস্তফা আজাদ বলেন, গত বছর হিমাগার ভাড়া প্রতি কেজিতে ৭ টাকা ছিল। কিন্তু এই তথ্য গোপন রেখে এবং হিমাগার পরিচালন ব্যয় বিবেচনায় না নিয়ে কিছু মধ্যস্বত্তভোগী মনগড়া বক্তব্য ও কর্মসূচি দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে একটি ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, হিমাগারে ৫০ কেজির বস্তায় আলু সংরক্ষণের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। গত বছর কেজিপ্রতি সাত টাকা করে ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া নেওয়া হয় ৩৫০ টাকা। তবে দেখা গেছে, অতীতে অনেক ব্যবসায়ী এ নিয়ম না মেনে ৭০ থেকে ৭২ কেজি আলু বস্তায় ভরে হিমাগারে রেখেছেন। তারাও ভাড়া দিয়েছেন ৩৫০ টাকা করে। সেই হিসেবে তাদের কেজিতে ব্যয় হয়েছে পাঁচ টাকার মতো। এবার এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ কারণেই একটি মহল অপপ্রচার ও ভাড়া কমানোর আন্দোলন করছে। 

সংবাদ সম্মেলনে হিমাগার মালিকেরা জানান, বস্তায় ১৫ থেকে ২২ কেজি আলু বেশি রাখায় তারা এতদিন এসবের ভাড়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার এ কারণে হিমাগারের আলুর ধারণক্ষমতাও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে যায়। এতে ১০ হাজার টনের একটি হিমাগারে বছরে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয় তাদের। এসব কারণে চারশ হিমাগারের মধ্যে প্রায় তিনশ হিমাগারই রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আরও বেশ কিছু হিমাগার ঋণ খেলাপীতে পরিণত হয়েছে। 

হিমাগার মালিকের আরও জানান, দেশে আলুর চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন। এর মধ্যে হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৪৫ টনের মতো। চলতি বছর আলু উৎপাদন হতে পারে ১ কোটি ২০ লাখ টনের মতো। সেই হিসেবে বিপুল পরিমাণে আলু হিমাগারের বাইরে থাকবে এবং পণ্যটির দাম সেভাবে বাড়বে না। এতে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এমন বাস্তবতায় উদ্বৃত্ত আলুর রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। 

হিমাগার ভাড়া কৃষকদের সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পাঁচটি দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এগুলো হচ্ছে— ঋণের সুদহার ১৭ শতাংশ (দন্ডসুদসহ) থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা; বিদ্যুৎ বিলের ইউনিট প্রতি খরচ কমিয়ে ৫ টাকা করা; হিমগারের বিভিন্ন ব্যয়ের ওপরে ভ্যাট ও উৎসে কর প্রত্যাহার করা এবং ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় তিন মাসের পরিবর্তে বাৎসরিক করা। একই সঙ্গে হিমাগার খাতকে কৃষিশিল্প ঘোষণা করা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারও নির্বাচন হয়নি খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনে
  • আড়াইহাজারে বিএনপি ও  যুবলীগ নেতাসহ আটক ১৩
  • বন কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, থানায় জিডি
  • ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১
  • বন কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি বিএনপি নেতার, জিডি
  • আড়াইহাজারে  জমিয়তে উলামায়ের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় 
  • ঋণের ভারে রুগ্ন তিন–চতুর্থাংশ হিমাগার 
  • শাহজাদপুরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
  • চুয়েটের হল থেকে ছাত্রলীগের ১৮ নেতা বহিষ্কার