সরকারি নারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকলেও শ্রমজীবী নারীরা তা পান না। ফলে শ্রমজীবী নারীরা মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন।

‘ক্ষুব্ধ নারীসমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ বিষয় তুলে ধরে শ্রম আইনে নারীর ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

২০২৩ সালের নভেম্বরে শ্রম আইনের বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনী এনে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাস হয়। বিলে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১১২ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন (চার মাস) করার প্রস্তাব করা হয়। তবে ওই বিল এখনো কার্যকর হয়নি।

আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেলে শ্রম ভবনে ‘শ্রম আইন ২০০৬’ সংশোধন–সংক্রান্ত সরকার–মালিক–শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় কমিটির একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিনসহ অন্যান্য সংশোধন বিষয়ে আলোচনা হবে।

সোমবার ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’–এর সমাবেশে সরকারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে মিলিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার পরিচালক সীমা দাস সীমু। তিনি ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে নারী-পুরুষের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা, অপ্রাতিষ্ঠানিক-প্রাতিষ্ঠানিক সব নারী-পুরুষ শ্রমিককে আইনে স্বীকৃতি দেওয়া, শ্রমজীবী–পেশাজীবী সব নারীর জন্য ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া, প্রসূতি–সুবিধায় গণনায় প্রতি মাসে সর্বমোট প্রাপ্তিকে হিসেবে নেওয়া, কারখানা-কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা ও অভিযোগ সেলের বাস্তবায়ন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের শর্ত শিথিল করে মতপ্রকাশের অধিকার বাস্তবায়ন, কারখানা–কর্মস্থলে কার্যকর শিশু দিবাযত্নের সুবিধা ও কমিউনিটিতে স্বল্পমূল্যে ও ভর্তুকিতে খাবারের ক্যানটিন ও লন্ড্রি স্থাপন করা, কৃষি ও মৎস্যজীবী শ্রমিক হিসেবে নারীকে স্বীকৃতি দেওয়া, গৃহশ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন করা, যৌনজীবীদের ওপর হয়রানি বন্ধ ও তাঁদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিতে আইন করা, প্রবাসী নারী শ্রমিকের নিরাপত্তায় পদক্ষেপ নেওয়া এবং শ্রমবাজারের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও শ্রম কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, শ্রমিকের জান–জীবিকা ও জবানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সামনে যে আইন হতে যাচ্ছে, তাতে নারী শ্রমিকের অধিকার যেন নিশ্চিত হয়। ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি, যৌন হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা বলেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক নয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদেরও শ্রম আইনের আওতায় আনতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস্) পরিচালক কোহিনুর মাহমুদ বলেন, শ্রমে নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। যে শ্রম আইন হচ্ছে, তাতে নারীর অনেক বক্তব্য মেনে নেওয়া হচ্ছে না। নারীর জন্য একটি বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ জরুরি।

সাংস্কৃতিক কর্মী লায়েকা বশির বলেন, এখনো নারীকে নারীর অধিকারের কথা বলতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস হয়ে গেছে, এখনো নারীদের দাবি নিয়ে একত্র হতে হচ্ছে। অথচ বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর দায় শুধু নারীর নয়। যেসব দাবি করা হয়েছে, তা যৌক্তিক।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ। এ সময় আরও বক্তব্য দেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়রা নূর, নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল, শৈশবের প্রতিষ্ঠাতা ফারহানা মান্নান, গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সভাপতি সুলতানা বেগম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্স

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া অর্থবছরে তার শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্স। সম্প্রতি এক বৈঠকে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ এই লভ্যাংশ অনুমোদন করেছে।

২০২৪ সালের জন্য কোম্পানির ইপিএস বা শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৮ টাকা; ২০২৩ সালে যা ছিল ৩ দশমিক ০২ টাকা। এই বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানির অন্যান্য আয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিট অ্যাসেট ভ্যালু পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ টাকা; ২০২৩ সালে যা ছিল ২০ দশমিক ৪০ টাকা। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, কোম্পানির নগদ ও নগদ সমতুল্য সম্পদের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।

তবে নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ কিছুটা কমে ২ দশমিক ৪৪ টাকা হয়েছে; ২০২৩ সালে যা ছিল ২ দশমিক ৫৩ টাকা। এই হ্রাসের পেছনে কোম্পানির দায় পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আগামী ২৪ মার্চ বেলা তিনটায় সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। সভাটি হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে শেয়ারহোল্ডাররা সরাসরি ঢাকার দিলকুশা সি/এ-এর ৩০-৩১ নম্বর বিসিআইসি অডিটরিয়ামে উপস্থিত হয়ে বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। লভ্যাংশের জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি।

শেয়ারহোল্ডার ও অংশীজনদের কোম্পানির কর্মক্ষমতা এবং ভবিষ্যতের কৌশল নিয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সভা ও লভ্যাংশ বিতরণসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য যথাসময়ে জানানো হবে।

গত এক বছরে সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৯৩ টাকা ৯০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা।

কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ১২ শতাংশ, ২০২২ সালে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০২১ সালে ১০ শতাংশ ও ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৪ সালে ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজ্ঞানচর্চা কতটা নারীবান্ধব
  • চূড়ান্ত হিসাবে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৪.২২ শতাংশ
  • মূলধন বাড়াতে ৮০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে সিটি ব্যাংক
  • বিভক্তির করিডোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার
  • বিভক্তির করিডোর ছাড়ল ইসরায়েলি বাহিনী
  • সেই ফিরমিনোই এখন আল আহলির লিগ দলে নেই
  • ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্স
  • সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের, কত নম্বরে বাংলাদেশ
  • সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সিঙ্গাপুরের, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান কে কত নম্বরে