ময়মনসিংহে জমির জাল কাগজপত্র তৈরি চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
Published: 10th, February 2025 GMT
জমির দলিল, খতিয়ান, দাগ ও নাম পরিবর্তন করে নিমেষেই জাল কাগজপত্র তৈরি করতেন আলমগীর হোসেন (৩১)। নিজেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নামের সিল স্বাক্ষর তৈরি করে দিতেন। সেই জাল কাগজপত্র নিয়ে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে গ্রামে চলত বিবাদ। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি চক্রের মূল হোতা আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গ্রেপ্তার আলমগীর হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নে। অভিযানের সময় ৮টি জাল দলিল, বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের ভূমিসংশ্লিষ্ট ২০ কর্মকর্তাদের ৬২টি সিল, ৩৬টি খোলা রাবার সিল, ১৪টি রাবার সিলের প্লাস্টিক হোল্ডার ও খসড়া কাগজ জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেনুর রশীদ চক্রটির তৎপরতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, দেড় বছরে বিপুলসংখ্যক জমিজমার কাগজপত্র চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেছে। জেলায় হত্যাসহ সহিংসতার ঘটনাগুলোর অধিকাংশ জমির মালিকানাসংক্রান্ত ঘটনাকে ঘিরে। চক্রটি পুরোপুরি শনাক্ত করতে পারলে জমিজমাসংক্রান্ত সমস্যা প্রশমিত করা যাবে। জব্দ করা কাগজপত্রগুলো বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, আলমগীর তাঁর বাড়িতে দেড় বছর ধরে ভূমিসংশ্লিষ্ট জাল দলিল ও নাম খারিজের দলিলাদি তৈরি করে আসছিলেন। যিনি জমির মালিক নন, তাঁকে মালিক বানিয়ে দিতেন। এ জন্য মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিতেন। নামজারির ক্ষেত্রে নতুন নাম সংযুক্ত করা কিংবা যিনি জমির প্রাপ্য নন, তাঁর নাম সংযুক্ত করে জমির অংশীদার বানিয়ে জালিয়াতির কাজ করতেন। চক্রটিতে আরও অন্তত চারজন সদস্য কাজ করেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ বিকেলে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ক গজপত র আলমগ র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বেতনের দাবিতে রাতে মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের আশ্বাসে ঘরে ফিরলেন শ্রমিকেরা
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। গতকাল রোববার রাত নয়টার দিকে নগরের হারিকেন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশের আশ্বাস পেয়ে চার ঘণ্টা পর রাত একটার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকেরা জানান, গাজীপুর নগরের গাছা থানার হারিকেন এলাকায় সেলফ ইনোভেশন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার পোশাক শ্রমিকদের গত দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বারবার সময় দিয়েও তাঁদের বেতন পরিশোধ করেনি। দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে হারিকেন এলাকায় এসে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে যাত্রী ও পরিবহনচালকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। তবে শ্রমিকেরা কোনো আশ্বাসই মানতে রাজি হচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত রাত একটার দিকে পুলিশের আশ্বাসে মহাসড়ক থেকে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যান। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
কারখানার শ্রমিক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতি মাসেই কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে গড়িমসি করে। চলতি মাসের শুরু থেকেই দুই মাসের বেতন পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই বেতন দিচ্ছিল না। এ কারণে বাধ্য হয়ে বেতন আদায় করতে মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করেছি, যাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে বেতন দিতে বাধ্য করে।’
শিল্প পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল হোসেন বলেন, ওই কারখানার শ্রমিকেরা দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বেতন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে রাত একটার দিকে তাঁরা বাড়ি ফিরে যান।