গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় আরও ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোর থেকে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে মহানগর থানা-পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। দুই দিনে ওই মামলায় ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার ৭৩ জনের মধ্যে ৪২ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। হামলার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) উজ্জল হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গত শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান ও মারধর করেন। এতে ১৭ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত একজনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় রোববার দুপুরে একটি মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো.

আব্দুল্লাহ মোহিত। মামলায় ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আমজাদ মোল্লা নামে একজনকে। এলাকায় তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। মামলার পর ওই দিনই পুলিশ ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে। রোববার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আরও ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের একাধিক দল আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে গাজীপুরে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে সাবেক এক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে। রোববার রাতের অভিযানে জেলা পুলিশ ২১ জন এবং মহানগর পুলিশ ৭৯ জনকে আটক করে। এর আগে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে মহানগর ও জেলা পুলিশ ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত শুক্রবার রাতে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার গাজীপুরে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। বিক্ষোভের মুখে দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করে ক্ষমা চান মহানগর পুলিশ কমিশনার। প্রত্যাহার করা হয় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হন।

আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩৪০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ম ম ল হক র ব গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা।

অভিযুক্ত ধর্ষক স্কুলছাত্র মোহাম্মদ (১৫) রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী ইউনিয়নের নারুয়া গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

এরআগে, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে নির্যাতিত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রায়গঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নাড়ুয়া গ্রামের আব্দুল আলীমের বাড়িতে শিশু যত্ন কেন্দ্র রয়েছে। গত রবিবার (৯ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে ওই বাড়িতে ছোট ভাই-বোনকে রেখে আসতে যায় নির্যাতিত শিশুটি। এ সময় মোহাম্মদ আলী শিশুটিকে কৌশলে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। একই দিন বিকেলে শিশুটি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজনকে ধর্ষণের বিষয়টি জানায়। 

ভুক্তভোগীর বাবা বাড়িতে না থাকায় পরের দিন সোমবার পরিবারের স্বজনেরা শিশুকে সিরাজগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধপত্র নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু তার অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত ডা. রায়হান খন্দকার জানান, বর্তমানে শিশুটি আশংকামুক্ত। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।  রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। 

ঢাকা/অদিত্য/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ