বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
Published: 10th, February 2025 GMT
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ বহাল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব রহমত আলী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান। বক্তব্যে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় শহরে হওয়ায় ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বেগম রোকেয়ার নামে বিশেষায়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেত। কেননা রংপুর শহরে (৫ কিলোমিটারের মধ্যে) আরেকটি বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ আছে। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রেখে চলছে। একই নামে পাশাপাশি দুটি সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিচয় দিতে অস্বস্তিতে ভোগেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে রংপুরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘বেগম রোকেয়া সর্বজন স্বীকৃত জাতীয় ও বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব। তাঁকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু যার নির্দেশে (শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আমাদের ভাই আবু সাঈদের বুকের তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, তাঁর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিষ্ঠাচিহ্ন থাকতে পারে না। এই ফ্যাসিস্টের প্রতিষ্ঠাচিহ্ন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা আমাদের রক্তক্ষরণের কারণ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শওকাত আলী প্রথম আলোকে বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারের বাইরে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্তৃপক্ষ। তিনি শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রংপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রুম্মান জামান প্রথম আলোকে বলেন, বেগম রোকেয়া নারী হওয়ার কারণে তাঁর নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আসছে কি না, তা দেখতে হবে। সারা বিশ্বে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আছে। বেগম রোকেয়া একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। তাঁর নাম নিয়ে এত কাটাছেঁড়া কেন?
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গম র ক য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, থানায় মামলা
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ওই ঘটনায় উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়নের খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জের সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাহুবলে গাছে বেঁধে আগুন, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আহতদের মধ্যে জামায়াতের দুই কর্মীকে গাজীপুর পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ঈশ্বরপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে আসলাম (২৬) এবং খলাপাড়া এলাকার ইসলাম সরকারের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩৫)।
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া বলেন, “উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ইফতারের আগ মুহূর্তে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেল, নুর ইসলাম ও আকরামসহ ১০-১৫ জন এসে বলেন, এই এলাকায় ইফতার মাহফিল করা যাবে না। এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা ইফতারের খাবার ফেলে দেন। পরে জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিএনপি কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১০ জন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।”
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, “কেউ যদি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়, তাহলে কি তারা রক্ষা করবে না? জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৭-৮ জন আহত হন।”
বিএনপির এই নেতা তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় দিতে পারেনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুর পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টার দিকে জামায়াতের পাঁচজন কর্মীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুইজনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “জামায়াত নেতা মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ