সিলেটে কয়েক দিন আগে পতিত স্বৈরাচার সরকারের ঘনিষ্ঠ সাবেক এক কাউন্সিলর একটি আদালতে একই দিনে পাঁচ মামলায় জামিন পেয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিজমের দোসররা যেভাবে একের পর এক জামিন পাচ্ছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক। এতে গণহত্যাকারী এবং তাদের দোসরদের যথাযথ বিচার হবে কি না, এ নিয়ে মানুষের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে নগরের কুমারপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা এমন অভিযোগ করেন। এ সময় বিএনপি নেতারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো সম্প্রতি সিলেটেও কিছু স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বিএনপি কিংবা সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মীর সম্পৃক্ততা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি সিলেটের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে পাঁচটি মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ ও তাঁর ভাই কামরান আহমদ জামিন পান। এ খবর জানাজানি হলে আদালত প্রাঙ্গণে বিপুলসংখ্যক সংক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হন। বিক্ষুব্ধরা পাঁচটি মামলায় জামিনের প্রতিবাদ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় আইনজীবী সহকারী সমিতির নির্বাচন পরিদর্শনে থাকা মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী সংক্ষুব্ধ জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

রেজাউল হাসান ও এমরান আহমদ সেদিন আদালতে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে লিখিত বক্তব্যে বিএনপি নেতারা দাবি করেন। তাঁরা আরও জানান, বিএনপির এই দুই নেতা যদি সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করতেন, তাহলে আদালত প্রাঙ্গণে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারত। সেটা হলে সিলেটের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হতো। অথচ পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ ঘটনার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমালোচনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির সহসভাপতি নাজমুল ইসলাম, আশরাফ আলী ও রহিম মল্লিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমদ পাটোয়ারী, সিদ্দিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন ও মামুনুর রশীদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহিদ ও নাদির খান, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব ও রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাঈদ আহমদ, মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তারেক আহমদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ায় সিলেট বিএনপির ১০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। লিখিত বক্তব্যে বিএনপি জানায়, যদি দলের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীর দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়, তাঁর বিরুদ্ধে দল তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নগরে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়েছিলেন। সেসব অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। দোষীরাও গ্রেপ্তার হয়নি। এসব অবৈধ অস্ত্র এখন চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ডেভিল হান্টের মাধ্যমে এসব অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ন আহমদ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত ও সারজিস

গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গতকাল শুক্রবার রাতেই হাসপাতালে গেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম। গতকাল রাত তিনটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে যান তাঁরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টায় গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি।

আরও পড়ুনগাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন২ ঘণ্টা আগে

এর আগে গতকাল রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতা-কর্মীরা বলেন, হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাইকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলায় আহতদের দেখতে গতকাল রাত তিনটার দিকে হাসপাতালটিতে যান হাসনাত ও সারজিস।

আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহত ৫ জন ঢাকা মেডিকেলে, মাথায়-হাতে গুরুতর আঘাত২৪ মিনিট আগে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দাবি, গতকাল রাতে কাছে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হয়। দ্রুত ১৫ থেকে ২০ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে লুটপাট হচ্ছে। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বাসার ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও পেটায় স্থানীয় বাসিন্দারা।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি।

আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক ডেকে মারধরে আহত ১৫৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক সচিব ইনাম আহমদ চৌধুরীর কুলখানি মঙ্গলবার
  • প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধি, বিদ্যালয়কে লাল, হলুদ ও সবুজ শ্রেণিতে ভাগ করার সুপারিশ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের জন্য যমুনায় বিএনপির তিন নেতা
  • ইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি
  • দলের শীর্ষ নেতাদের ঠান্ডা মাথায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়: জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান
  • গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি
  • গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তের গুলি, একজন আহত
  • ঢাবির সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
  • গাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত ও সারজিস