অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘তরুণদের ডাকে সাড়া দিয়ে পুরো জাতি অর্থ লুণ্ঠনকারী ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবে যোগ দেয় এবং নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা করে। এ জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা।’’ 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী স্যাটেলাইট টাউন হাইস্কুল মাঠে তারুণ্যের মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আধুনিক জ্ঞান, উদ্ভাবন এবং সামাজিক পরিবর্তনের সকল অগ্রগতি তরুণদের হাত ধরে এসেছে এবং আসবে। পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে তরুণদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে তরুণরা যে প্রতিভা, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা দেখাচ্ছে তা আমাদের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করবে।’’ 

আরো পড়ুন:

সহিংসতা-হানাহানি যেন না হয়, সজাগ দৃষ্টি রাখুন: প্রধান ‍উপদেষ্টা

নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে ততই আমাদের মঙ্গল: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ। দেশের মধ্যম বয়স ২৭, যার অর্থ জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৭ বা তার কম। এ থেকে বোঝা যায়, আমরা সীমাহীন মানব শক্তি, সৃজনশীলতা ও উদ্যোগে ভরা এক দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। প্রযুক্তি বরণ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এদেশ দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।’’

তিনি এ সময় তরুণদের নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে, নতুন কিছু শিখতে এবং সৃজনশীলতার পথে চলে অন্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজীম আহমেদ, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপদেষ্টা। এর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

গুমের ভয় দেখিয়ে চার কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ

ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করছেন পুলিশের চার কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ করেছেন দেশের অন্যতম মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. জুবায়দুর রহমান জনি। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

পুলিশ কর্তৃক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ডা. জুবায়দুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও শাস্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্রমূলক প্রশ্নফাঁস মামলায় গত ২ আগস্ট বাসা থেকে ডা. জুবায়দুর রহমানকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে তাঁর পারিবারের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করে সিআইডি’র সাবেক অপরাধ তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আলী ও পুলিশের তিন কর্মকর্তা।

অন্য তিন কর্মকর্তা হলেন, র‍্যাব-১৪ এর সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সেবা) জুয়েল চাকমা, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান, ঢাকা মালিবাগ সিআইডির অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান।

ডা. জুবায়দুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর ছয় কিস্তিতে আমার পরিবারের কাছ এ টাকা নেয় মোহাম্মদ আলী সিন্ডিকেট। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারাগারে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারাগার থেকে বের হয়ে আসার পর এক কোটি নেয়।

তিনি জানান, আগাঁরগাও আইসিটি টাওয়ার, পাসপোর্ট অফিস, বেতার ভবন আশেপাশের রাস্তার থেকে সাব-ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান নিজের গাড়ি দিয়ে এসে নিয়ে গেছেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শারীরিক নির্যাতন, নতুন আরও মামলা, স্ত্রীকে গ্রেপ্তার ও মেডিকো সীলগালা করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এ অর্থ আদায় করা হয়।

ডা. জুবায়দুর রহমান দাবি করেন, টাকা নেওয়ার বিষয়ে একাধিক অডিও রেকর্ড রয়েছে তাঁর কাছে। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। এছাড়া রিমান্ডে ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় এবং তা একজন সাংবাদিক দিয়ে ভিডিও নেওয়া হয়।

প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক দাবি করে তিনি বলেন, আমার পরিবারের একমাত্র বোন দুইবার মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায়নি, পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, এছাড়া আমার স্ত্রী’র দুইবার মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায়নি। পরবর্তীতে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার স্ত্রীকে কেন স্কাইসিটি হোটেলে ডাকা হয়েছিল? কেন আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছিল? এটা কি শুধুই তদন্তের অংশ, না কোনো চক্রান্ত?’ তখন আমার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়।

উল্লেখ্য-২০২৩ সালের জুলাইয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তার ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট ভোরে সাদা পোশাকে পুলিশ ডা. জনিকে তার বাসা থেকে আটক করে। অভিযোগের এ বিষয়ে জানতে সিআইডির সাবেক অপরাধ তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আলীকে ফোনে করা হলে সিমটি বন্ধ দেখায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ