বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ডেথরেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি চলছে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানিতে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপন করছে রাষ্ট্রপক্ষ। আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।

এর আগে ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথরেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল, নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন হাইকোর্ট আসামিদের জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা। এখন ডেথরেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর শুনানি চলছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

জসিম সরকার ও খন্দকার বাহার রুমি এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবণী আক্তার শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী ও সিরাজুম মুনীর। গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে শুনানি হয়েছিল। এখন পুনরায় শুনানি শুরু হয়েছে। পেপারবুক থেকে এজাহার, অভিযোগপত্র ও চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলাটি আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানির জন্য থাকবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক থেকে এজাহার, অভিযোগপত্র, অভিযোগ গঠন ও চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়েছে। আদালত বলেছেন, কোনো ধরনের মুলতবি ছাড়াই শুনানি চলবে। আগামীকাল আবার শুনানি হবে।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ২২ জনকে রায়ের দিন আদালতে আনা হয়। পলাতক তিনজন। আসামিরা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মী।

আরও পড়ুনবুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা: হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু২৮ নভেম্বর ২০২৪

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। তখন তাঁদের মধ্য মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক ছিলেন।

বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন ন র জন য র ষ ট রপক ষ আবর র

এছাড়াও পড়ুন:

মারা গেছেন ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ অভিনেত্রী গুলশান আরা

অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অভিনেত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টে মৃত্যুর খবরটি দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবাল সকাল পৌনে সাতটায় অভিনেত্রী মারা যান। প্রথম আলোকে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রীর বোনের ছেলে অভিনেতা আর এ রাহুল। জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ অভিনেত্রী মারা গেছেন, লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। অভিনেতা মিশা সওদাগর, নির্মাতা কাজল আরেফিন অমিসহ অনেকেই ফেসবুক পোস্টে অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

একাধিক সূত্র অনুযায়ী, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অভিনেত্রী। দ্রুতই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। গুলশান আরা আহমেদের ফেসবুক আইডি থেকে আজ মাঝরাতে লেখা হয়, ‘আমার আম্মু গুলশান আরা আহমেদ আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিউরের জন্য। আপনার সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’ পরে শোনা যায় মৃত্যুর খবর, অর্থাৎ লাইফ সাপোর্ট থেকে আর ফেরানো যায়নি তাঁকে। ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিনেত্রীকে দাফন করা হবে।

গুলশান আরা ‘হৃদয়ের কথা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘লাল শাড়ি’সহ আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি কাজল আরেফিন অমির জনপ্রিয় ধারাবাহিক ব্যাচেলর পয়েন্টে কাবিলার (জিয়াউল পলাশ) মা ‘পলি চেয়ারম্যান’ চরিত্রে অভিনয় করে বর্তমান প্রজন্মের কাছে পরিচিতি পান। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনের ধারাবাহিক ‘সিটি লাইফ’সহ অসংখ্য নাটক ও ধারাবাহিকে দেখা গেছে তাঁকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ