কুষ্টিয়ায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে স্বামীকে প্রশ্ন করায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
Published: 10th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সাথী খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়। স্বজনদের অভিযোগ, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্ত্রী সাথী খাতুনকে পিটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী মো.
নিহত সাথী খাতুন সদকী ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের মনছুর শেখের মেয়ে। প্রায় আট বছর আগে পারিবারিকভাবে করাতকান্দি গ্রামের মতিয়ার শেখের ছেলে সীমান্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল।
পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্ত ও সাথী খাতুন দম্পতির ছয় বছর ও চার মাস বয়সী দুই সন্তান রয়েছে। বছরখানেক আগে সীমান্ত বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। সমস্যার সমাধানে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছে। প্রায় সাত দিন আগে প্রেমিকাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সীমান্তকে ৯০ হাজার টাকা দেন শ্বশুর মনছুর। তারপরও রোববার প্রেমিকাকে নিয়ে সারা দিন ঘোরাঘুরি করেন সীমান্ত। রাতে সাথী খাতুন স্বামীর কাছে ঘোরাঘুরির বিষয় জানতে চান। তখন সীমান্ত স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে সাথীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যান। খবর পয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
সাথীর বড় ভাই সবুজ বলেন, ‘খালাতো বোনের সঙ্গে সীমান্তের পরকীয়া প্রেম ছিল। একাধিকবার সালিস হয়েছে। গত সপ্তাহে ৯০ হাজার টাকাও দিছি মিটমাটের জন্য। তবুও গতকাল রোববার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে গিছিল। সে খবর জানতে গেলে সীমান্ত আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে। আমি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। থানায় মামলা করব।’
নিহত নারীর শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি বলেন, খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। পরিবার থেকে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিখিত দিলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন সেই পাঁচ কাঠুরে
কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে অপহৃত পাঁচ ব্যক্তি মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। অপহরণের দুইদিন পর শুক্রবার সকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী পাহাড়ের পাদদেশে ওই কাঠুরেদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অপহৃত কাঠুরেদের স্বজনদের দাবি, প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ের অপহরণকারীরা পাঁচজনকে মুক্তি দেয়।
মুক্তি পাওয়া পাঁচ ব্যক্তি হলেন– টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া ও বাইন্ন্যা পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হকের ছেলে মারুফ উল্লাহ (১৮), মোহাম্মদ হাসানের ছেলে মোহাম্মদ কাইফ উল্লাহ (১৭), হামিদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ ইসা (২৮), মৃত কালা মিয়ার ছেলে ইউসুফ উল্লাহ (৩০) ও শফিউল আজমের ছেলে আবু ইয়া (২০)।
জানা গেছে, গত বুধবার সকালে বাহারছড়া ইউনিয়নের মাঠ পাড়া ও বাইন্ন্যা পাড়া এলাকার ১৫ জন লোক পাহাড়ে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে যান। একপর্যায়ে চাকমা পাড়ার পাশের পাহাড়ি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত তাদের জিম্মি করে। পরে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে জিন্মি রেখে অন্যদের ছেড়ে দেয়।
অপহৃতদের স্বজনদের বরাতে বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কাদের চৌধুরী বলেন, বুধবার রাতে অপহৃতদের ছেড়ে দিতে স্বজনদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে কয়েক দফায় আলোচনা করে ৫ জনের পরিবার মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেয়।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, অপহৃতদের স্বজনরা মুক্তিপণের তথ্য পুলিশকে জানাননি। ওই কাঠুরেদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।