একটা সময় ডায়াপার ছাড়াই সন্তানদের বড় করে তুলেছেন অভিভাবকেরা। তবে তখন শিশুকে অনেকটা সময় দিতে পারতেন তাঁরা। জীবনধারা ছিল অনেকটাই সরল। আধুনিক শহুরে জীবনে অনেক পরিবারের মা-বাবা দুজনই কর্মজীবী। আবার মা বাড়িতে থাকলেও পরিবারের সদস্যসংখ্যা কম হওয়ায় সাংসারিক দায়িত্বের পুরোটাই থাকে তাঁর কাঁধে। সন্তান লালন–পালনের কাজটা সহজ করতে তাই ডায়াপার-নির্ভর হয়ে পড়েন অনেক মা-বাবাই। যদিও শিশুর ত্বকের সুরক্ষায় ডায়াপারের ব্যবহার সীমিত রাখাই ভালো। এমনটাই বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা.

তাসনুভা খান

নির্ভরশীলতা কমাতে কিছু ব্যবস্থা

ডায়াপারের প্রতি নির্ভরশীলতা কমাতে আপনি বাড়িতে কিছু বাড়তি অনুষঙ্গের ব্যবস্থা করতে পারেন। শিশুর বিছানা ও খেলার জায়গায় ইউরিন ম্যাট বিছিয়ে দিতে পারেন কিংবা রেক্সিনজাতীয় সামগ্রীর ওপর চাদর বিছিয়ে রাখা যায়। তবে শিশুর দেখভালের দায়িত্বে যিনিই থাকুন না কেন, তিনি যেন খেয়াল রাখেন, শিশু প্রস্রাব-পায়খানা করছে কি না। কারণ, ভেজা কাপড়ের সংস্পর্শে শিশুর সহজেই ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তা ছাড়া জীবাণু সংক্রমণেরও আশঙ্কা থাকে। কেবল বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় শিশুকে ডায়াপার পরাতে পারেন। ডায়াপার যত কম পরানো হবে, শিশুর ত্বকে র‌্যাশ ও অন্যান্য সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি ততই কম হবে।

আরও পড়ুনশিশুকে ডায়াপার পরানোর সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে ২১ ডিসেম্বর ২০২১ডায়াপার কেনার সময়

ডায়াপার কেনার সময় বেশি পরিমাণে কিনতে পারেন। তাতে খরচ কিছুটা কম পড়তে পারে। তবে শিশু দ্রুত বাড়লে কিন্তু কিছুদিন আগে কেনা ডায়াপার আর তার কাজে আসবে না। এটিও মাথায় রাখুন। বরং পাইকারি দরে কিনতে পারেন কয়েকজন মিলে, যাঁদের সন্তানের বয়স কাছাকাছি।

বন্ধু-স্বজনদের মধ্যে কারও সন্তান বড় হয়ে গিয়ে থাকলে তাঁর কাছে অব্যবহৃত ডায়াপার রয়েছে কি না, সেই খোঁজও নিতে পারেন। সেসব আপনার সন্তানের কাজে লাগতে পারে।

প্রচলিত ডায়াপারের বিকল্প হতে পারে কাপড়ের ডায়াপার। এসব বহুদিন টেকে, তাই সাশ্রয়ী। ঠিকভাবে পরিষ্কার করা হলে এসব শিশুর জন্য নিরাপদও বটে।

চাই টয়লেট ট্রেনিং

শিশুকে টয়লেট ট্রেনিং দেওয়া খুবই জরুরি। শিশু বসতে শিখলেই তার উপযোগী পট কিনে দিন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর শিশুকে পটে বসান। খাওয়ার পর, ঘুম থেকে ওঠার পর, বাইরে যাওয়ার আগে ও ঘুমানোর আগের সময়টায় তো বটেই, তার প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় অনুসরণ করে দিনে ও রাতে নির্দিষ্ট কিছু সময়েও তাকে পটে বসান। এভাবে ধীরে ধীরে সে এতে অভ্যস্ত হবে।

আরও পড়ুনকম খরচে পুরো পরিবারের প্রোটিন বা আমিষের চাহিদা মেটাবেন যেভাবে০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আর শিশুকে এমন প্যান্ট বা পায়জামা পরাবেন, যা খোলা সহজ। অধিকাংশ শিশু কিন্তু ইশারা বা নিজের ভাষায় নিজের প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝাতে পারে। এমনকি ভাষা কিংবা ইশারা করতে পারারও আগে থেকে শিশুর আচরণে ক্ষুদ্র ও আকস্মিক পরিবর্তন হয় প্রস্রাব-পায়খানা করার সময়।

আপনার শিশুর এসব পরিবর্তন বুঝতে চেষ্টা করুন। মা-বাবা ছাড়া যিনি শিশুর দেখভাল করেন, তাঁকেও বুঝিয়ে দিন। খেয়াল করতে বলুন শিশুকে। তাহলে প্রয়োজনের সময় শিশুকে পটে বসানো সহজ হবে। পটে বসার বয়স হওয়ার আগেও যদি শিশুর এ ধরনের আচরণ বুঝতে পারেন, তা হলে সন্তান লালন–পালন নিঃসন্দেহেই অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। এভাবে কিন্তু শিশুর সঙ্গে অভিভাবকের একধরনের বোঝাপড়াও গড়ে ওঠে।

আরও পড়ুনঈদের আগে কম খরচে অন্দর সাজে বদল আনতে চান? জেনে নিন উপায় ১১ এপ্রিল ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি নৌযান চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষ: পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অভিন্ন অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংযোগকে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ওই বৈঠকে দুই পক্ষ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌযান চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। দুই পক্ষ সরাসরি আবার আকাশপথে যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির প্রতিও উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের বিষয়ে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা বলেছে। আজ শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তান বলেছে, ‘১৫ বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠকটি ঢাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।’

বৈঠকে উভয় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।

নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্তকরণ, নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে। পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং শিক্ষা খাতে আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে। এ সময় কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ