রাজনীতির টানে রুপালি জগতকে বিদায়, শেষ সিনেমায় সঙ্গী শ্রুতি
Published: 10th, February 2025 GMT
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, রাজনীতিতে পা রেখেছেন ভারতের তেলেগু সিনেমার অভিনেতা থালাপাতি বিজয়। খুব শিগগির রুপালি জগতকে বিদায় জানিয়ে রাজনীতিতে পুরোপুরি মন দেবেন এই তারকা। তার অভিনীত শেষ সিনেমা হতে যাচ্ছে ‘জন নায়ক’। এইচ বিনোদন পরিচালিত এই সিনেমায় যুক্ত হলেন শ্রুতি হাসান।
ইন্ডিয়ান গ্লিটজের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শ্রুতি হাসান সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। আগামী সপ্তাহে তার অংশের শুটিং শুরুর কথা রয়েছে।
সর্বশেষ ‘পুলি’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেন বিজয়-শ্রুতি। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় এটি। মুক্তির পর সিনেমাটি বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে না পারলেও প্রশংসা কুড়ান এই জুটি। প্রায় ১০ বছর পর ফের একসঙ্গে পর্দায় হাজির হতে যাচ্ছেন এই তারকা যুগল।
আরো পড়ুন:
মুক্তির পর সাই পল্লবী-নাগার সিনেমা ফাঁস
৩ সেকেন্ডের ভিডিও নিয়ে নায়ক-নায়িকার চুলোচুলি
বিজয়-শ্রুতি ছাড়াও সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন— ববি দেওল, প্রকাশ রাজ, পূজা হেগড়ে, প্রিয়ামণি, মমিতা বাইজু প্রমুখ। কেভিএন প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। বর্তমানে চেন্নাইয়ে ‘জন নায়ক’ সিনেমার শুটিং চলছে।
শিশুশিল্পী হিসেবে রুপালি জগতে পা রেখে তামিল সিনেমার শীর্ষ নায়কদের একজনে পরিণত হয়েছেন থালাপাতি বিজয়। সর্বশেষ ‘থালাপাতি ৬৯’ বা ‘জন নায়ক’ সিনেমার জন্য ২৭৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ‘তামিলাগা ভেটরি কাজাগম’ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন এই নায়ক। প্রায় এক বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা করেন। ২০২৬ সালের তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে আপাতত প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজয়।
থালাপাতি বিজয়ের বাবার নাম এসএ চন্দ্রশেখর। তিনি ছিলেন তামিল সিনেমার পরিচালক। মা শোভা চন্দ্রশেখর ছিলেন গায়িকা। মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে নাম লেখান বিজয়। ‘বেট্রি’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করেন তার বাবা। প্রথম সিনেমার জন্য ৫০০ রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় দেখা যায় তাকে।
রুপালি পর্দায় অভিষেকের আট বছর পর অর্থাৎ ১৯৯২ সালে ‘নালায়া থেরপু’ সিনেমার প্রথম নায়ক চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তার প্রথম ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘পুভে উনাকাগা’। এটি মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে। তবে ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই অভিনেতার ‘থিরুমালাই’ সিনেমাটি তার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।
পরের বছর ‘ঘিল্লি’ সিনেমায় একজন কাবাডি খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অভিনয় করে সকলের মন কাড়েন বিজয়। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম তামিল অভিনেতা হিসেবে বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপি আয় করেন। পরবর্তী সময়ে ‘থিরুপাচি’, ‘সাচেন’, ‘শিবাকাসি’, ‘পক্কিরি’, ‘কাবালান’, ‘নানবান’, ‘থুপ্পাক্কি’, ‘কাত্থি’, ‘মার্সাল’, ‘সরকার’, ‘মাস্টার’ প্রভৃতি সিনেমা তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র জন ত ন ব জয় প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিবিরে যাচ্ছেন আজ
আজ শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আশ্রয়শিবিরে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করার কথা রয়েছে তাঁদের।
এর আগে দুপুরে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা, ধর্মীয় শিক্ষক, যুব প্রতিনিধি ও নারীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের। রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, বৈঠকে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন জোরদারের লক্ষ্যে দ্রুত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেফ জোন (বসবাসের নিরাপদ অঞ্চল) গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে দাবি জানাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ মহাসচিব চার দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছার পর সড়কপথে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছে বিমানবন্দরের নবনির্মিত রানওয়ে, জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে খুরুশকুলে নির্মিতব্য বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। দুপুরে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে বিকেলে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আশ্রয়শিবিরে আসার খবরে সাধারণ রোহিঙ্গারা খুবই উৎফুল্ল বলে জানান রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পৃথক তিনটি বৈঠকে বসবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এসব বৈঠকে আমরা আরকানে (রাখাইন) জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সেফ জোন করার দাবি জানাব। ইফতার মাহফিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছেও আমরা এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইব। সেফ জোন করা না গেলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কখনো সম্ভব হবে না।’
মোহাম্মদ জোবায়ের আরও বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্যসহায়তা সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করার ঘোষণা এসেছে। খাদ্যসহায়তা কমলে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ বিষয়েও আলাপ করা হবে। তবে এর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেফ জোনের বিষয়টি।
জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশ্রয়শিবিরে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করবেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিবকে নেওয়া হবে একটি ওয়াচ টাওয়ারে। সেখানে উঠে তিনি আশ্রয়শিবিরের বর্তমান চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন।
দুপুরে বালুখালী ও মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৮ ও ৪ বর্ধিত) একটি লার্নিং সেন্টার এবং ইউএনএইচসিআর ও ডব্লিউএফপির সেবা ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ সময় পৃথক তিনটি বৈঠকে রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা, রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণী, ধর্মীয় নেতাদের মনোভাবের কথা জানতে চাইবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-২০ বর্ধিত) রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এ ইফতারের আয়োজন।
জানতে চাইলে আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একটি প্যান্ডেলে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন ১২৫ জন রোহিঙ্গা। অবশিষ্ট আরও এক লাখ রোহিঙ্গা প্যান্ডেলের বাইরে খোলা মাঠ ও পাহাড়ের উপত্যকায় বসে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে অংশ নেবেন। একজন রোহিঙ্গা মাওলানা মোনাজাত পরিচালনা করবেন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে একজন লিখিত বক্তব্য দিতে পারেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব ২০১৮ সালে সর্বশেষ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন এসেছিলেন। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এটি প্রথম সফর। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ ৮ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্টো গত কয়েক মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন ৬০-৭০ হাজার রোহিঙ্গা।