অর্থবছরের প্রথমার্থে কঠিন সময় পার করেছে পুঁজিবাজার
Published: 10th, February 2025 GMT
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। এ সময়ে পুঁজিবাজারে টানা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ছিল এর মূল কারণ। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা পুঁজিবাজারের পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদশ ব্যাংকের গভর্নর ড.
মুদ্রানীতি ঘোষণায় পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, বিএসইসির নবনিযুক্ত নেতৃত্ব বাজার স্থিতিশীল করতে বেশকিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ। পাশাপাশি, বাজার অস্থিরতার মূল কারণ খুঁজে বের করতে এবং বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অর্ধবার্ষিকে সোনালী পেপারের মুনাফা বেড়েছে
যমুনা অয়েলের এজিএমের তারিখ পরিবর্তন
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুধু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, পুঁজিবাজার পুনরুদ্ধারে বিএসইসি একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো— পুঁজিবাজারকে পুনরুজ্জীবিত করা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। এই বহুমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল আর্থিক পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।
উল্লিখিত সময়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উল্লেখযোগ্যভাবে ২.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২৪ সালের জুন মাসে ৫৩২৮ পয়েন্ট থেকে কমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ৫২০৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া, গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও ১০ শতাংশ কমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পুরো সময়ে এটি ছিল ৬২২ কোটি টাকা। এই পতন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ হ্রাস এবং বাজারে আগ্রহ কমার ইঙ্গিত দেয়।
মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে ডেপুটি গভর্নরগণ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনটি/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাকা খরচ করতে অনুমতি লাগবে না প্রকল্প পরিচালকদের
অনুমতি লাগবে না, প্রকল্প পরিচালকেরা টাকা খরচ করতে পারবেন। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি লাগবে না।
অর্থ বিভাগ গত মঙ্গলবার হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে (সিজিএ) চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে। প্রতি অর্থবছরেই মার্চ বা এপ্রিলে অর্থ বিভাগ এ ধরনের চিঠি দিয়ে থাকে। এ বরাদ্দের এই টাকা প্রকল্পের পুরো অর্থবছরের শেষ কিস্তি বা চতুর্থ কিস্তির বরাদ্দ হিসেবে পরিচিত।
অর্থ বিভাগ চিঠিতে বলেছে, প্রকল্প পরিচালকেরা নিজেরাই প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের টাকা খরচ করতে পারবেন এবং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে সংশোধিত অননুমোদিত প্রকল্পসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্পের অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের জারি করা ২০১৮ সালের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
অতীতের মতো এবারও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার কমেছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপির আকার দাঁড়াল ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৭। প্রতিটি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ নির্ধারণ করা থাকে। সেই বরাদ্দ অনুসারে চার কিস্তিতে অর্থ ছাড় করা হয়। আগে অর্থ বিভাগ ও প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।
কাজে গতি আনার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল প্রকল্প পরিচালকদের। তবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতো।
কিন্তু এরপর প্রকল্প পরিচালকেরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি আসছে না এবং টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে তাঁদের নানা ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব কেনাকাটা, বিল–ভাউচারের শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে অর্থ ছাড় করার নিয়ম ছিল। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে অর্থ বিভাগ অর্থছাড়ে সংস্থাগুলোকে এখতিয়ার দিয়ে প্রথম প্রজ্ঞাপন জারি করে ২০২০ সালে। এর ধারাবাহিকতা এখনো চলছে।
তবে প্রকল্পের শুল্ক, ভ্যাট ও ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয়ে যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তা প্রকল্প পরিচালকেরা ছাড় করতে পারবেন না বলে জানা গেছে। প্রকল্প সাহায্যের বর্তমান নিয়ম বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শর্ত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার শর্ত মানতে হবে।