গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান আর আন্তর্জাতিক মেকআপ আর্টিস্ট রোজা আহমেদ বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের বিয়ের খবরে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হয়ে যায় চলতি বছরের শুরুতে। এদিকে তাহসানের প্রাক্তন স্ত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলাকে নিয়েও ঢের চর্চা শুরু হয়। তার মনের অবস্থা নিয়ে নেটিজেনদের আগ্রহ বাড়তে থাকে। এবার তাহসানের বিয়ের প্রশ্নে কথা বললেন তিনি।

রোজাকে বিয়ের আগে অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার সঙ্গে দীর্ঘ ১১ বছরের দাম্পত্য ছিল তাহসানের। ২০১৭ সালে তাদের সেই সংসারে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ওপার বাংলার পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মিথিলা।

অন্যদিকে মিথিলার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দীর্ঘদিন কোনও সম্পর্কে জড়াননি তাহসান। তবে ২০২৫ সালের শুরুতেই নিজের জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর খবর প্রকাশ্যে আনেন।

প্রাক্তনের বিয়ের পর মিথিলার প্রতিক্রিয়া কি ছিল, সেটা জানতে ব্যাপক আগ্রহী ছিলেন ভক্তরা। কিন্তু তাহসানের বিয়ে নিয়ে শুরু থেকেই নীরব ছিলেন এই অভিনেত্রী। এমনকি সাবেক স্বামীর প্রতি কোনো শুভেচ্ছাবার্তাও পাঠাননি তিনি।
তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাহসানের বিয়ে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন মিথিলা। যেখানে তিনি বলেন, ‘বিয়ে নিয়ে আমার কিছুই বলার নাই। এটা নিয়ে কথা বলতেও চাই না। এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়, এটা আমারও কোনো ব্যক্তিগত বিষয় না যে আমি কথা বলবো। যার জীবনের ঘটনা, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে আমার কিছুই বলার থাকতে পারে না।’

এর আগে মিথিলা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও তাহসানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব রয়েছে। অভিনেত্রী মনে করেন, সন্তান থাকলে তার স্বার্থ আগে দেখতে হবে। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য সবার আগে।’

এদিকে দীর্ঘ চার বছর ধরে আটকে থাকা সিনেমা নিয়ে সুখবর দিলেন মিথিলা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেত্রী জানান, চলতি মাসেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত সিনেমা ‘জলে জ্বলে তারা’। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমার শুটিং শুরু হয় ২০২১ সালে। কিন্তু শুটিং শুরুর তিন মাসের মাথায় করোনা মহামারি ও আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে যায় কাজ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল, বিক্ষুব্ধ জনতার থানা ঘেরাও

মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলার আসামি জামিনে ছাড়া পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত অফিসারের শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর সদর থানা ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কয়েকশ ছাত্র ছাত্রী সদর থানা ঘেরাও করে রাখে। পরে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম তদন্ত কর্মকর্তা সুজয় কুমারকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এছাড়া মেহেরপুর সেনাবাহিনীর মেজর ফারহানের নেতৃত্বে একটি টিম থানায় গিয়ে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ধর্ষকের বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন।

জানা যায়, গেল বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চকলেট দেওয়ার নাম করে মেহেরপুরে ৯ বছরের শিশুকে এক তরুণ তাদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ওই ছেলের এক বন্ধু এই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। এরপর আবারও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবি করা চাঁদার টাকা না দেওয়ায় আসামিরা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে শিশুটির মা বাদী হয়ে ৩ জনের নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়।

জামিনের পর তারা আবারও ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলে। এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলার বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এসময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত চাপ দিতে থাকেন।

খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী তুষার ইমরান ও সিয়াম আহাম্মেদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তুষার ও সিয়ামের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপস্থিত হন পুলিশ সুপার মাকসুদা খানম। বিচারের আশ্বাস দিয়ে পুলিশ সুপার স্থান ত্যাগ করতে চাইলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের শর্ত মেনে মধ্য রাতে এসআই প্রত্যাহার, আসামীর জামিন বাতিলে উদ্যোগী হওয়া ও আসামিদের পুনরায় গ্রেপ্তারের আশ্বাসে ছাত্র-জনতা স্থান ত্যাগ করেন।

পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার খানম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী উপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমার মল্লিককে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দুজনকে আটক করতে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ