খেলাপি ঋণ ৩০ শতাংশ অতিক্রম করতে পারে
Published: 10th, February 2025 GMT
দেশে খেলাপি ঋণের মোট ঋণের ৩০ শতাংশ অতিক্রম করে যেতে পারে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং খাতের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
খেলাপি ঋণের বাড়বাড়ন্ত মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে বলে মুদ্রানীতির ঘোষণায় জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মূলত নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা জোরদার, ব্যাংকিং খাতের সুশাসন নিশ্চিত ও যথাযথভাবে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার ওপর জোর দিয়েছে। তারা মনে করছে, এর মধ্য দিয়ে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যেমন এক্সপেকটেড ক্রেডিট লস মেথডলজি; ২০২৭ সালের মধ্যে এটি চালু করা হবে। আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে এই পদ্ধতি চালু করা হবে। সে জন্য কী কী করতে হবে, সে বিষয়েও বিস্তারিত বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, সে জন্য ব্যাংকের ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ঋণ ব্যবস্থাপনা রীতি–সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী—এসব অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মডেলের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে ঋণের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে।
সেই সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকের আইন বিভাগগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে যেসব ঋণ অর্থঋণ আদালত ও উচ্চ আদালতে ঝুলে আছে, সেগুলোর জট ছাড়াতে। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা ও এই খাতের সামগ্রিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসব ঝুলে থাকা বিষয়ের জট ছাড়াতে আইন বিভাগের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের ব্যাংকগুলোয় গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের প্রায় ১৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবশ্য মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হিসাব অবলোপন করা ও আদালতের আদেশে স্থগিত থাকা ঋণ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩০ শতাংশে উঠে যেতে পারে বলে মুদ্রানীতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় নকলের অভিযোগে ১১ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার
গাইবান্ধায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার চারটি কেন্দ্রে নকল ও মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখার অপরাধে ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এসময় তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এছাড়া নকলে সহযোগিতা করার দায়ে এক শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলাকালীন সময় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এর মধ্যে সাঘাটা উপজেলার পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তিনজন, বোনারপাড়া এম ইউ সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্র একজনকে বহিষ্কার করাসহ তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ আলিয়া কামিল মাদ্রাসাকেন্দ্র থেকে পাঁচজন, কামদিয়া দারুল উলুম সিদ্দিকীয়া আলীম মাদ্রসার কেন্দ্র থেকে এক শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল লতিফ জানান, পরীক্ষা চলাকালে সাঘাটা পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন থাকায় তাদের বহিষ্কার করা হয়। এসময় তিনটি স্মার্টফোন জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, “পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অপরাধে মাদ্রাসার দুটি কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কক্ষ পরিদর্শনের সময় ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে। এছাড়া নকলে সহযোগিতা করায় এক শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
অপরদিকে, সুন্দরগঞ্জ আব্দুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়কেন্দ্রে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্মার্টফোন নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করায় ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানান কেন্দ্র সচিব মো. ইলিয়াস আলী।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আল মামুন (শিক্ষা ও আইসিটি) বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্র পর্যবেক্ষণে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও কোন অনিয়ম হলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।”
ঢাকা/মাসুম/এস